যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো বাণিজ্য উত্তেজনা

বিশ্বব্যাপী বেড়েছে স্বর্ণের দাম

প্রকাশ | ০৮ জুন ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় মেক্সিকোর সব ধরনের পণ্যে ৫ শতাংশ হারে শুল্কারোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চীন-মার্কিন বাণিজ্যযুদ্ধের মধ্যেই তার এ পদক্ষেপ আর্থিক বাজারগুলোকে নতুন করে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এ অবস্থায় শক্তিশালী ডলারের বিপরীতে অন্যান্য মুদ্রার দাম কমার আশঙ্কায় বিভিন্ন ধরনের ধাতু কেনার দিকে ঝুঁকছে মানুষ। ফলে বিশ্বব্যাপী বেড়েছে স্বর্ণের দাম, যা গত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। খবর বস্নুমবার্গ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মেক্সিকোর পণ্যে ৫ শতংাশ হারে যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছেন, সেটা আগামী ১০ জুন থেকে কার্যকর হবে। মেক্সিকো যতদিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসী প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত এ শুল্কারোপ কার্যকর থাকবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে চীনের পক্ষ থেকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, তারা নিজেদের কোম্পানিগুলোর সুবিধার্থে কিছু 'অনাস্থাভাজন' বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করবে। এমন পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় স্বর্ণ মজুদের পরিমাণ বাড়ছে এবং এর মূল্যে চাঙ্গাভাব তৈরি হয়েছে। ফিউচার মার্কেটে আগামী আগস্টে যেসব স্বর্ণ ডেলিভারি করা হবে তার প্রতি আউন্সের মূল্য ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩১১ দশমিক ১০ মার্কিন ডলার, যা গত ১০ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ। এ ছাড়া স্পট মার্কেটেও স্বর্ণের মূল্য প্রতি আউন্সে শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ২৯৯ দশমিক ৩৬ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত ১৫ মের পর সর্বোচ্চ। এর আগে তিন মাস ধরে মন্দা থাকার পর গত মাসে হঠাৎ করে ২ শতাংশ বৃদ্ধি পায় মূল্যবান এ ধাতুর দাম। এদিকে স্বর্ণের পাশাপাশি অন্য ধাতুগুলোর দাম বাড়তির দিকে। গত মাসে কিছুটা কমার পর আবার বেড়েছে রুপার দাম। গত শুক্রবার প্রতি আউন্স রুপার মূল্য শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ বেড়ে ১৪ দশমিক ৫৯ মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে পস্নাটিনামের মূল্য ১১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা গত তিন বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মাসিক মূল্য পতন। এসপি অ্যাঞ্জেলের বিশ্লেষক সের্গেই রাইভস্কি বস্নুমবার্গের সঙ্গে টেলিফোনে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, বর্তমান বাজার অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে মানুষ ফের স্বর্ণ কেনা শুরু করেছে। কারণ মানুষ চিন্তা করে দেখেছে, চীন-যুক্তরান্ত্রর মধ্যকার বাণিজ্যযুদ্ধ নিরসনের সময়কাল সম্পর্কে আমরা যেটা ভাবছি আসলে এটা নিরসনে তার চেয়ে অনেক সময় লাগতে পারে। এদিকে চীনের কারখানা খাতের অধোগতির কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির গতি মন্থর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মেক্সিকোর পণ্যে মার্কিন শুল্কারোপের কারণে সেই ঝুঁকি আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। ওভারসি-চীনা ব্যাংকিং করপোরেশনের অর্থনীতিবিদ হাওয়াই লি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এসব শুল্কারোপের মাধ্যমে বোঝাতে চায়, তারা খামখেয়ালিভাবে বাণিজ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। চীন থেকে মেক্সিকো পর্যন্ত তারা এ বার্তা দিয়ে বোঝাতে চায় যে কোনো দেশই আসলে নিরাপদ নয়। আর সে কারণেই স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে।