৬৫% আবেদন না পড়লে আইপিও বাতিল

প্রকাশ | ১১ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আবেদন ৬৫ শতাংশের কম জমা পড়লে সংশ্লিষ্ট আইপিও বাতিল হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইসু্য) রুলস, ২০১৫-এর খসড়া সংশোধনীতে এ নিয়ম করা হয়েছে। জনমত জরিপের জন্য খসড়া সংশোধনীটি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গতকাল প্রকাশ করেছে। খসড়া সংশোধনীতে আছে, ৬৫ শতাংশ বা এর বেশি আবেদন জমা পড়লে বাকি শেয়ার আন্ডাররাইটার নেবে। অন্যদিকে যোগ্য বিনিয়োগকারীর কোটায় সব শেয়ার বিক্রি না হলে আইপিও বাতিল হবে। ১৭ জুন পর্যন্ত স্টেকহোল্ডাররা এই খসড়ার ওপর মতামত জানাতে পারবেন। কমিশন স্টেকহোল্ডারদের মতামত বিবেচনা করে খসড়া আইন চূড়ান্ত করবে এবং গ্যাজেট আকারে প্রকাশ করবে। ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে অভিহিত মূল্যের আইপিওর ক্ষেত্রে পাবলিক ইসু্যর পরিমাণ হবে নূ্যনতম ৫০ কোটি কিংবা ইসু্যয়ার কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ, যেটি বেশি হয়। একইভাবে বুক বিল্ডিংয়ের মাধ্যমে পাবলিক ইসু্যর ক্ষেত্রে এর পরিমাণ হবে কমপক্ষে ১০০ কোটি কিংবা পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ, যেটি বেশি হয়। ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতিতে অভিহিত মূল্যে পাবলিক ইসু্যর ক্ষেত্রে ইআইদের বিদ্যমান কোটা ৪০ শতাংশ থেকে কমে ৩০ শতাংশ হবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের (এনআরবি ব্যতীত) কোটা ৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়াবে। অন্যদিকে বুক বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে ইআইদের বিদ্যমান কোটা ৬০ শতাংশ থেকে কমে ৫০ শতাংশ হবে এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিদ্যমান কোটা ৩০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৪০ শতাংশে দাঁড়াবে। অভিহিত মূল্যের পাবলিক ইসু্যর ক্ষেত্রে সম্মিলিতভাবে ৬৫ শতাংশের কম আবেদন জমা পড়লে ইসু্য বাতিল হয়ে যাবে। আর সম্মিলিতভাবে আবেদনের পরিমাণ ৬৫ শতাংশের বেশি কিন্তু ১০০ শতাংশের কম হলে বাকি শেয়ার আন্ডাররাইটার কিনে নেবে। এর আগে বিএসইসির অনুষ্ঠিত ৬৮৮তম কমিশন সভায় পাবলিক ইসু্য রুলস ২০১৫-এর সংশোধনীর খসড়া জনমত যাচাইয়ের জন্য অনুমোদন করা হয়। গত ২৯ এপ্রিল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সভা শেষে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি মার্কেটে বেশকিছু সংস্কার করার ঘোষণা দেয়া হয়। ঘোষণা অনুসারে সেকেন্ডারি মার্কেট-সংক্রান্ত বিষয়গুলো কমিশন এরই মধ্যে বাস্তবায়ন করেছে। আর প্রাইমারি মার্কেট-সংক্রান্ত বিষয়গুলো সংস্কারের জন্য কমিশন কমিটি করেছে। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পাবলিক ইসু্য রুলসের খসড়া সংশোধনী প্রস্তুত করা হয়েছে। খসড়া সংশোধনীতে আরও আছে, কোটা সুবিধা নিতে হলে সেকেন্ডারি বাজারে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের (ইআই) নির্দিষ্ট অঙ্কের বিনিয়োগ থাকতে হবে। তা না হলে কোনো ইআই তাদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের কোটা সুবিধা পাবে না। আর সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগের পরিমাণ কত হবে তা কমিশন প্রতিটি পাবলিক ইসু্যর সম্মতিপত্রে উলেস্নখ করে দেবে। খসড়ায় যোগ্য বিনিয়োগকারীর সংজ্ঞা স্পষ্ট করেছে কমিশন। খসড়ায় যোগ্য বিনিয়োগকারী বলতে বোঝানো হয়েছে মার্চেন্ট ব্যাংক এবং পোর্টফোলিও ম্যানেজার, সম্পদ ব্যবস্থাপক, মিউচুয়াল ফান্ড এবং কালেক্টিভ ইনভেস্টমেন্ট স্কিম, স্টক ডিলার, ব্যাংক, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি, অল্টারনেটিভ ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড ম্যানেজার ও ফান্ড, বিদেশি বিনিয়োগকারী (সিকিউরিটিজ কাস্টডিয়ানে হিসাব রয়েছে), অনুমোদিত প্রভিডেন্ট ফান্ড, পেনশন ফান্ড, গ্র্যাচুইটি ফান্ড এবং কমিশনের অনুমতিক্রমে অন্য প্রতিষ্ঠান। অপরদিকে খসড়ায় পাবলিক ইসু্য রুলসের ধারা ৪-এর উপধারা ১ (এফ) ও (কে) বাতিল করা হয়েছে। এই দুই ধারায় বলা হয়েছিল, আইপিও আবেদন পাওয়ার ২০ দিনের মধ্যে কমিশনের কাছে সংশ্লিষ্ট ইসু্যর বিষয়ে স্টক এক্সচেঞ্জকে মতামত জানাতে। স্টক এক্সচেঞ্জের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন আইপিও অনুমোদন বা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেবে।