নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) সেন্টার ফর মাইগ্রেশন স্টাডিজ (সিএমএস) এবং সেন্টার ফর লিগ্যাল রিসার্চ (সিএলআর) যৌথভাবে 'শ্রম সংক্রান্ত বিরোধের বিকল্প নিষ্পত্তি (এডিআর)' বিষয়ক একটি সংলাপের আয়োজন করেছে। এই সংলাপে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সরকারি কর্মকর্তা, নীতি-নির্ধারক এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। সংলাপে বাংলাদেশে শ্রম বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এডিআর ব্যবস্থার কার্যকারিতা এবং এর সম্ভাব্য সংস্কার নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন তৈরি পোশাক শিল্পে আর্থিক শৃঙ্খলার অভাব এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, 'রপ্তানি খাতে প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও, কিছু কারখানা শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হচ্ছে, যা মূলত আর্থিক অব্যবস্থাপনার কারণে। শ্রমিকদের অধিকার সংরক্ষণ ও খাতের স্বচ্ছতা বাড়ানোর জন্য আমাদের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।'
এনএসইউ'র স্কুল অফ হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস এর ডিন ড. মো. রিজওয়ানুল ইসলাম বাংলাদেশের শ্রম আদালতে ২১,০০০-এর বেশি মামলার জটের কথা তুলে ধরেন, যার ৭৫% নির্ধারিত সময়সীমার বাইরে চলে গেছে। তিনি বলেন, 'এডিআর ব্যবস্থার কার্যকর বাস্তবায়ন আদালতের মামলার চাপ কমাতে, আইনি ব্যয় হ্রাস করতে এবং বিরোধ দ্রম্নত নিষ্পত্তি করতে সহায়ক হবে।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রভাষক নাফিজ আহমেদ এডিআর পদ্ধতি স্বল্প ব্যয়, দ্রম্নত নিষ্পত্তি এবং নমনীয়তা নিশ্চিত করলেও, এর সাফল্য মূলত পক্ষগুলোর স্বেচ্ছা সহযোগিতার ওপর নির্ভরশীল।
এসআইপিজি এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো আম্বাসাডর মোহাম্মদ সুফিউর রহমান উলেস্নখ করেন, আইএলও-এর ২৬ নম্বর অনুচ্ছেদ সংক্রান্ত চলমান মামলার বিষয়ে সতর্ক করেন, যা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠনের ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান জানান যে সরকার নীতিগতভাবে একটি সালিসি পস্ন্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মি. তুওমো পোটাইনেন বলেন, 'এডিআর ব্যবস্থাকে সফল করতে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান অপরিহার্য।'
এনএসইউ'র কোষাধ্যক্ষ ও উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক আবদুর রব খান জানান এনএসইউ শ্রম বিরোধ নিষ্পত্তির গবেষণা শক্তিশালী করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি বলেন, "একটি কার্যকর এডিআর ব্যবস্থা গড়ে তুললে আদালতের চাপ কমবে এবং একটি ন্যায়সঙ্গত ও স্থিতিশীল শ্রম পরিবেশ তৈরি হবে।"
এনএসইউ'র উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী বক্তব্য প্রদানকারী এবং অংশগ্রহণকারীদের মূল্যবান মতামত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্য প্রশংসা করেন। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি