খাতুনগঞ্জে দেশি সরু চালের দাম বেড়েছে বস্তায় ২০০ টাকা

প্রকাশ | ০৪ মার্চ ২০২৫, ০০:০০

অর্থ-বাণিজ্য রিপোর্ট
দেশে এক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে চালের দাম। বন্যার প্রভাবের পাশাপাশি চাহিদা অনুযায়ী কাঙ্‌িক্ষত উৎপাদনের অভাবে সংকট তীব্র হচ্ছে। সংকট নিরসনে সরকার আমদানিতে গুরুত্ব দিলেও থামছে না দামের উলস্নম্ফন। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি সত্ত্বেও এক মাসের ব্যবধানে দেশী চালের (সরু) দাম বেড়েছে বস্তায় (৫০ কেজি) ২০০ টাকা। যদিও এ সময় আমদানীকৃত চালের দাম কিছুটা নিম্নমুখী ছিল। দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ভারত থেকে আমদানীকৃত প্রতি বস্তা (২৫ কোজি) স্বর্ণা সেদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৭০০ টাকায়। একই জাতের দেশী চাল বস্তায় ২ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। খাতুনগঞ্জে ভারত থেকে আমদানি হওয়া নাজিরশাইল সেদ্ধ চালের বস্তা মানভেদে ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হলেও একই জাতের দেশী চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। এছাড়া আমদানীকৃত আতপ পাইজাম ১ হাজার ৪০০ ও সেদ্ধ কাটারি জাতের চাল মানভেদে ১ হাজার ৯০০ থেকে ২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশী সেদ্ধ কাটারি চাল বস্তায় ১ হাজার ৮৫০ থেকে শুরু করে ১ হাজার ৯০০ টাকায় এবং দেশী পাইজাম বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ১ হাজার ৩২০ থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকায়। আড়ত ও কমিশন এজেন্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দামের কারণে দেশী চালের তুলনায় ভারতীয় চালের বিক্রি বেশি। এর পরও বাড়তি স্বাদ ও সরবরাহ কম থাকায় দেশী চাল কিছুটা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া দেশের প্রান্তিক এলাকাগুলোয় চাহিদা বেশি। দিনাজপুর চাল মালিক সমিতির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, '?দেশে চালের চাহিদা প্রতি বছরই বাড়ছে। কিন্তু বন্যাসহ অন্যান্য কারণে চালের উৎপাদন প্রবৃদ্ধি চাহিদার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। এছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোয় চালের বাজারে একাধিক বড় করপোরেট গ্রম্নপ প্রবেশ করায় বাজারে একমুখী চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ চেইনে ঘাটতির কারণে বাজার বারবার অস্থিতিশীল হয়েছে। সরকার সংকট এড়াতে বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে পণ্যটির দাম ধারাবাহিক বৃদ্ধির প্রবণতা কমেছে। তবে চাহিদা ও মানের কারণে এখনো সরু চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ববাজারে চালের দাম কমতে থাকায় এ বছর আমদানি হওয়া চাল দেশী চালের তুলনায় কম দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে ভালো মানের সরু চালের চাহিদা ও মানের কারণে মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত আছে। \হআমদানির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ চলমান থাকায় সরকারি চালের মজুদ বাড়ছে। খাদ্য বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে দেখা গেছে, ২৬ ফেব্রম্নয়ারি পর্যন্ত দেশে খাদ্যশস্যের সর্বমোট মজুদ ছিল ১৫ লাখ ৯ হাজার ৬৪৭ টন। এর মধ্যে চালের মজুদ ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৮০৪ টন, ধান ১২ হাজার ৫০৬ টন ও গম ৪ লাখ ১৬ হাজার ৫৩২ টন। চলতি বছর চালের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে বেসরকারি পর্যায়ে দফায় দফায় ১৪ লাখ ৮১ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। প্রথমে ১০-২২ ডিসেম্বরের মধ্যে আমদানির সময়সীমা বেঁধে দেয়া হলেও পরবর্তী সময়ে তা বাড়ানো হয়।