বিদেশি বিনিয়োগে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষে বাংলাদেশ

প্রকাশ | ২৫ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
হোটেল সোনারগাঁওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিভিন্ন তথ্য জানায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)
২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগে শীর্ষে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। বিদায়ী বছরে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। সোমবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) মো. আবুল কালাম আজাদ ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী। বিদেশি বিনিয়োগে বাংলাদেশের অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১০ বছর ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটা ধারাবাহিকতা বিরাজ করছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও রয়েছে। বিনিয়োগের জন্য এখন উপযুক্ত জায়গা বাংলাদেশ। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশকে এখন বিনিয়োগের অন্যতম এলাকা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এসব কারণে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বেড়েছে। বাংলাদেশের মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাওয়ার পথে এই স্থিতিশীলতা অত্যন্ত জরুরি। প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর জাপানি তামাক কোম্পানি জাপান টোব্যাকো (জেটি) বাংলাদেশের আকিজ গ্রম্নপের মালিকানায় থাকা ইউনাইটেড ঢাকা টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড কিনে নেয়ায় আগের বছরগুলোর তুলনায় এ বছর বিদেশি বিনিয়োগ বেশি এসেছে। জেটি ইউনাইটেড টোব্যাকো কিনতে খরচ করেছে ১৫০ কোটি ডলার। এ ছাড়া গত বছর বিদু্যতেও বড় আকারের বিনিয়োগ পাওয়া গেছে। বস্ত্র ও পোশাক খাতে বিনিয়োগ এসেছে ১৩০ কোটি ডলার। প্রতিবেদনে বলা হয়, এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ নেপালে বেড়েছে ২৪ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় বেড়েছে ১৭ শতাংশ, মালদ্বীপে বেড়েছে ১২ শতাংশ ও ভারতে বেড়েছে ৬ শতাংশ। কিন্তু ওই সময়ের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে পাকিস্তানে ২৭ শতাংশ ও ভুটানে ১৬০ শতাংশ। পক্ষান্তরে একই সময়ে ২০১৭ সালে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ২৫১ কোটি ১৬ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৩৬১ কোটি ৩৩ লাখ ডলারে। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬৮ শতাংশ। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩ হাজার ৯৯০ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। ২০১৮ সালে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৪ হাজার ২২৮ কোটি ৫৭ লাখ ডলারে। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৬ শতাংশ। এছাড়া মালদ্বীপে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৯ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৫৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ১২ শতাংশ। নেপালে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১২ কোটি ৯২ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ১৬ কোটি ৮ লাখ টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ২৪ শতাংশ। শ্রীলঙ্কায় ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ১৩৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ১৬১ কোটি ৫ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ১৭ শতাংশ। অন্যদিকে পাকিস্তানে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৩২৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে বিনিয়োগ কমে দাঁড়ায় ২৩৫ কোটি ২০ লাখ টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ২৭ শতাংশ। ভুটানে ২০১৭ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৯৯ লাখ টাকা। ২০১৮ সালে বিনিয়োগ দাঁড়ায় ৫৯ লাখ টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৬০ শতাংশ।