কালো স্বর্ণ বৈধ করতে ব্যবসায়ীদের ভিড়

প্রকাশ | ২৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশে প্রথমবারের মতো স্বর্ণ মেলা শেষ হয়েছে গতকাল। কালো স্বর্ণ বৈধ করতে বুথগুলোতে ব্যবসায়ীদের ছিল উপচে পড়া ভিড় -যাযাদি
দেশে প্রথমবারের মতো চলছে স্বর্ণ মেলা। ভরিতে মাত্র এক হাজার টাকা কর পরিশোধ করে অপ্রদর্শিত স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ রয়েছে মেলায়। কালো স্বর্ণ সাদা করতে ভিড় করছেন ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মেলা ঘুরে দেখা গেছে, কর অঞ্চলের বুথগুলোতে ভিড় করছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। কেউ ফরম পূরণ করছেন আবার অনেকে অপ্রদর্শিত স্বর্ণ ঘোষণার কৌশল জানছেন। তারা কর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে জেনে নিচ্ছেন কীভাবে ফরম পূরণ করতে হবে, কী কাগজপত্র দিতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়োজনে এ মেলার সার্বিক সহযোগিতা করছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। গত ২৩ জুন শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী মেলা গতকাল শেষ হয়েছে। রোজ জুয়েলার্সের মালিক আবু নাসের বলেন, এই প্রথম অপ্রদর্শিত স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে। সে সুযোগ গ্রহণ তো করবই। এ ছাড়া নতুন নীতিমালা হয়েছে। অনেক নিয়মই আমরা জানি না। তবে যেহেতু সরকার সুযোগ দিয়েছে তাই ঘোষণা দিয়ে স্বর্ণ সাদা করব। মেলায় মজুদ স্বর্ণ বৈধ করতে এসেছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী রতন মালাকার। তিনি বলেন, সরকার বৈধ করার সুযোগ দিয়েছে। তাই এটি হাতছাড়া করা ঠিক হবে না। আমি গত দুদিন বিভিন্ন বিষয় জেনেছি। আজকে ঘোষণা দিলাম। আমার প্রতিষ্ঠান বেশি বড় নয়। বিক্রির চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্ডারের অলংকার বানাই বেশি। তাই আমার মজুদও কম। স্বর্ণ ও রুপা মিলিয়ে প্রায় দুই লাখ টাকা কর দিয়েছি। কর কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসায়ীদের কাছে মজুদ অপ্রদর্শিত স্বর্ণ ঘোষণার মাধ্যমে বৈধ করতে দেশে প্রথমবারের মতো এ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতি ভরি স্বর্ণে এক হাজার, রুপায় ৫০ টাকা ও প্রতি ক্যারেট হীরায় ছয় হাজার টাকা কর দিয়ে অপ্রদর্শিত স্বর্ণ, রুপা বৈধ করছেন। আজ মেলা শেষ হবে। তবে মেলার পরও আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের নিজ নিজ কর অঞ্চলে গিয়ে মজুদ স্বর্ণ কর দিয়ে বৈধ করার সুযোগ রয়েছে। কারণ ঘোষণার মাধ্যমে স্বর্ণ বৈধ করার বিশেষ এসআরও এর মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত রয়েছে। এনবিআর সদস্য (আয়কর) কানন কুমার রায় বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো আয়োজন করা স্বর্ণ মেলায় ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। মেলায় গত দুদিন অনেক ব্যবসায়ী তাদের মজুদ স্বর্ণ ঘোষণার মাধ্যমে বৈধ করেছেন। শুধু ঢাকা নয়, অন্যান্য বিভাগের স্বর্ণ ব্যবসায়ীরাও এ সুযোগ গ্রহণ করছেন। তিনি বলেন, স্বর্ণ বৈধ করার সুযোগটি এবারই প্রথম। অনেকেরই বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেই। গত দুদিন ব্যবসায়ীরা মেলায় এসে অপ্রদর্শিত স্বর্ণ ঘোষণার বিভিন্ন বিষয় জেনেছেন। আজ বেশির ভাগই কর দিয়ে স্বর্ণ বৈধ করবেন বলে প্রত্যাশা করেন এনবিআরের এই সদস্য। মেলায় রয়েছে সোনালী ও বেসিক ব্যাংকের বুথ। এই দুই ব্যাংকের বুথে টাকা জমা দিয়ে তাৎক্ষণিক পে-অর্ডার নিতে পারছেন ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকেই বিভিন্ন জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা দীর্ঘ লাইনে করের টাকা পরিশোধ করছেন। মেলায় বেসিক ব্যাংকের ক্যাশ অফিসার মাসুমা শিলা জানান, শেষ দিন হওয়ায় সকাল থেকেই গ্রাহকের প্রচুর ভিড়। পে অর্ডার ইসু্য করা হচ্ছে। মেলায় কর পরিশোধ করলে চার্জ ফ্রি পে অর্ডার সুবিধা দিচ্ছে বেসিক ব্যাংক বলে জানান তিনি।