১ বছরে রপ্তানি আয় ৪০৫৩ কোটি ডলার

প্রকাশ | ০৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
ইতিবাচক ধারায় রয়েছে রপ্তানি আয়। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে (জুলাই-জুন) চার হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এ আয় গত অর্থ-বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। সোমবার রফতানি উন্নয়ন বু্যরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে। রপ্তানিকারকরা বলছেন, রপ্তানি আয়ে সুখবর নিয়েই অর্থবছর শুরু হয়েছিল। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এর মূল কারণ দেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। এছাড়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে অন্য খাতেরও আয় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ফলে রপ্তানিতে বড় প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে। তাদের প্রত্যাশা সদ্য শুরু হওয়া নতুন অর্থবছরেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। আর ইতিবাচক এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরেও রপ্তানি আয়ে বিস্ময়কর অগ্রগতির দিকে যাবে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সব ধরনের পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন হাজার ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় এ সময়ে আয় হয়েছে ৪ হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে গত অর্থ-বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশ। গত ২০১৭-১৮ অর্থ-বছরে রপ্তানি আয় ছিল তিন হাজার ৬৬৬ কোটি ৮১ লাখ ৭০ হাজার ডলার। প্রতিবেদনে দেখা যায়, একক মাস হিসেবে চলতি বছরের জুন মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ২৭৮ কোটি ৪৪ লাখ ৪০ হাজার ডলার। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৬০ কোটি ডলার। সে হিসাবে এ মাসে আয় কমেছে আট কোটি ১৫ লাখ ডলার। গত বছরের জুন মাসে এ আয় হয়েছিল ২৯৩ কোটি ৯৩ লাখ ৫০ হাজার ডলার। সে হিসাবে প্রবৃদ্ধি কমেছে ৫ দশমিক ২৭ শতাংশ। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সদ্য শেষ হওয়া অর্থবছরের (২০১৮-১৯) মোট রফতানি আয়ে পোশাকের অবদান প্রায় ৮৪ দশমিক ২১ শতাংশ। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এ খাতের অন্য রপ্তানির উপখাত হিসাব করলে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৮ শতাংশেরও বেশি হবে। আলোচিত সময়ে তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয় এসেছে তিন হাজার ৪১৩ কোটি ৩২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে গত অর্থ-বছরের একই সময়ের তুলনায় রপ্তানি এ বছর প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ১১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পোশাক খাতে রপ্তানি আয় ছিল তিন হাজার ৬১ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ডলার। ইপিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, সদ্য শেষ হওয়া এই অর্থ-বছরে বড় খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ৩৪ দশমিক ৯২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় কৃষিপণ্য রপ্তানিতে। এ খাত থেকে আয় এসেছে ৯০ কোটি ৮৯ লাখ ৬০ হাজার ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রপ্তানি আয় বেড়েছে ২৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। পস্নাস্টিক পণ্যে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ২১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। এ খাতে আয় হয়েছে ১১ কোটি ৯৮ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এই অর্থ-বছরটিতে পস্নাস্টিকে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০ কোটি ডলার। সে হিসেবে এ খাতের রপ্তানি আয় ইতিবাচক ধারায় আছে। এদিকে আলোচিত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি কমেছে। একই সঙ্গে অর্জন হয়নি লক্ষ্যমাত্রাও। পাট ও পাটজাত খাত থেকে বছর শেষে রপ্তানি আয় এসেছে ৮১ কোটি ৬২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২০ দশমিক ৪১ শতাংশ কম। এই অর্থ-বছরটিতে পাট খাতে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১০৮ কোটি ৫০ হাজার ডলার। এছাড়া চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। প্রবৃদ্ধিও গত বছরের চেয়ে ৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কমেছে। আলোচিত সময়ে এ খাতে আয় হয়েছে ১০১ কোটি ৯৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার।