প্রবৃদ্ধিতে গতি আনতে ভারতের দরকার বৃষ্টির আশীর্বাদ

প্রকাশ | ১২ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
কৃষি উৎপাদন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বর্ষা মৌসুমে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত দরকার ভারতের। তবে এখনো আশানুরূপ বৃষ্টির দেখা পায়নি দেশটি, যা তাদের জন্য হতাশাজনক। বর্ষা মৌসুমের প্রথম মাস জুন ৫০ বছরের মধ্যে রেকর্ড ৩৩ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত নিয়ে শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিটি। তবে চলতি মাসে দেশটিতে বৃষ্টিপাত বেড়েছে। এ মাসের বৃষ্টিপাতের ওপর চলতি মৌসুমে দেশটির কৃষি উৎপাদন ও বছরের সার্বিক অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। জুলাইয়ে দেশটির প্রধান ফসলগুলো চাষ করা হয়। বর্ষা মৌসুমে চলতি মাস দেশটির কৃষি খাতের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ মাসেই খরিফ ফসলের ৫০ শতাংশের বেশি বপন করা হয়। গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে সিটির বিশ্লেষকরা এসব তথ্য জানিয়েছেন। ধান, ভুট্টা, জোয়ার ও তুলাসহ বিভিন্ন খরিফ ফসল দেশটিতে বর্ষা মৌসুমে চাষ করা হয়। ভারতে কৃষি খাত অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দুদিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ। ২ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে কৃষির অংশ ১৪ ও মোট কর্মসংস্থানের ৪২ শতাংশ এ খাতে হয় বলে জানিয়েছেন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে আইএইচএস মার্কিটের প্রধান অর্থনীতিবিদ রাজিব বিশ্বাস। ভারতের সার্বিক অর্থনীতি বর্ষা মৌসুমের ওপর বড় রকমের নির্ভরশীল হওয়ায় এ সময়ে আশানুরূপ বৃষ্টিপাত না হলে দেশটির কৃষি উৎপাদন ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। ভারতের মোট উৎপাদনের এক-তৃতীয়াংশ কৃষি সংক্রান্ত খাদ্যের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, যা দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১৮ শতাংশ। দেশটির মোট আবাদি জমির ৫৫ শতাংশ বৃষ্টিনির্ভর। ফলে বর্ষা মৌসুমের বৃষ্টিপাত দেশটির কৃষি খাত ও কৃষিসংশ্লিষ্ট শিল্প খাতের কার্যক্রম প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট গবেষকরা। চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রম্নয়ারি প্রান্তিকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে ৫ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। অথচ পূর্ববর্তী প্রান্তিকে দেশটির প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ৬ শতাংশ। কৃষি খাত ও ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প শ্লথ হয়ে পড়ায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে পূর্ববর্তী প্রান্তিকের তুলনায় দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। চলতি বর্ষা মৌসুমে কম বৃষ্টিপাতের কারণে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় কমলে তা দেশটির কৃষির উৎপাদন কার্যক্রম, খুচরা ব্যবসা ও গ্রামাঞ্চলের অন্যান্য সেবা খাতের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন রাজিব বিশ্বাস। শুষ্ক মৌসুমে ভারতের জল সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় সাম্প্রতিক বছরগুলোয় দেশটি অনেক বেশি বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। নয়াদিলিস্ন, হায়দরাবাদ ও চেন্নাইসহ দেশটির ২১টি শহরের ভূগর্ভস্থ পানি ২০২০ সাল নাগাদ শুকিয়ে আসছে বলে গত বছর প্রকাশিত ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ট্রান্সফরমিং ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে উলেস্নখ করা হয়েছে।