জিপির উলস্নম্ফনের পরও দরপতন পুঁজিবাজারে

প্রকাশ | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
গ্রামীণ ফোন ভবন -ফাইল ছবি
যাযাদি রিপোর্ট সরকারের সঙ্গে সমঝোতার সম্ভাবনার খবরে গ্রামীণ ফোনের (জিপি) শেয়ার দরে উলস্নম্ফনের পরও দরপতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে তালিকাভূক্তেএকমাত্র মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের শেয়ার দর ২৭ টাকা বেড়েছে। সকালে লেনদেন শুরুর পর থেকেই জিপির শেয়ার কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন বিনিয়োগকারীরা। এক পর্যায়ে বাজারে এ শেয়ারের আর কোনো বিক্রেতা ছিল না। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের বাজার মূলধনের ১২ শতাংশের বেশি ধারণ করা এই শেয়ারের দর প্রায় ৯ শতাংশ বাড়লেও ঢাকায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স পড়েছে ৩২ পয়েন্ট। চট্টগ্রামে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৩ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট। গ্রামীণফোন ও রবির সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগের খবরে জিপির দরে এই উলস্নম্ফন ঘটেছে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা। নিরীক্ষা আপত্তির টাকা নিয়ে দেশের দুই শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোন ও রবির সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির বিরোধ আলোচনার মধ্যে মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারকে সঙ্গে নিয়ে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাইকেল ফোলির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর বলেন, যে মীমাংসা করা হবে তাতে দুই পক্ষই যেন 'উইন উইন সিচুয়েশনে' থাকে, তা নিশ্চিত করা হবে। সপ্তাহ তিনেকের মধ্যেই আলোচনার ফল পাওয়া যাবে। "কয়েকদিন ধরে আলোচনা করছিলাম যে সমাধানে আসা উচিত। সমাধানটি হবে উইন উইন সিচুয়েশনে থেকে। আমরাও হারব না, তারাও হারবে না। আমরা আমাদের যেটুকু ন্যায্য দাবি হবে, সেটা আমরা আদায় করার চেষ্টা করব। তারাও আমাদেরটা মেনে নেবেন বিশ্বাস করি। 'আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, অন্য সব পথ বাদ দিয়ে আমরা আলোচনার টেবিলে বসব, আমরা সমঝোতায় আসব।' বিটিআরসির দাবি, গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা এবং রবির কাছে ৮৬৭ কোটি ২৩ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। নিরীক্ষা আপত্তির বড় অংকের এই টাকা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিটিআরসির সঙ্গে জিপির বিরোধ চলছিল। এর বড় প্রভাব পরে গ্রামীণফোনের শেয়ারে। ২০১৯ সালে ১ এপ্রিল এই শেয়ারটির দর ছিল ৪১৭ টাকা। বিরোধের খবরে তা কমতে কমতে নেমে এসেছিল ২৮৯ টাকায়। সমোঝতার খবরে বৃহস্পতিবার ২৭ টাকা দাম বেড়েছে জিপির। বুধবারের ৩০৮ টাকা ৪০ পয়সা থেকে বেড়ে ৩৩৫ টাকা ৩০ পয়সা হয়েছে বৃহস্পতিবার। ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গ্রামীণফোনের বাজার মূলধন ডিএসইর মোট বাজার মূলধনের প্রায় ১২ শতাংশ। সে কারণেই এই শেয়ারটির দাম বাড়বে বা কমলে সূচকেও বড় প্রভাব পড়ে। বৃহস্পতিবার জিপির দাম না বাড়লে বাজারে বড় দরপতন হতো জানিয়ে ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের (ডিবিএ) সভাপতি শাকিল রিজভী গণমাধ্যমকে বলেন, পুঁজিবাজার তার নিজের গতিতেই ঘুরে দাঁড়াবে। সমঝোতার খবরে আজকে অনেকে অন্যান্য শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে গ্রামীণ ফোনের শেয়ার কিনেছে। সে কারণেই শেয়ারটির দর বেড়েছে বলে জানান তিনি। বাজার পরিস্থিতি : বৃহস্পতিবার দুই বাজারেই মূল্যসূচক কমেছে। কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দর। ঢাকায় প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৩২ দশমিক ০৩ পয়েন্ট। অপর বাজার চট্টগ্রামে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৩ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট। বৃহস্পতিবার ঢাকায় ৩৮৪ কোটি ৯৬ লাখ টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে। বুধবার এই বাজারে ৩৭১ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সিএসইতে ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। বুধবার লেনদেনের অংক ছিল ৩৫ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩৫৩টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৪৬ টির, কমেছে ২৬৯টির। আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির দর। ডিএসইএক্স বা প্রধান সূচক দশমিক ৩২ দশমিক ০৩ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮৫৫ দশমিক ৯৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইএস বা শরীয়াহ সূচক ৭ দশমিক ৪২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ১২৩ পয়েন্টে।