ভারতকে জিএসপি ফিরিয়ে দেয়ার আহ্বান কংগ্রেসের

প্রকাশ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি ডেস্ক ভারতকে জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স বা জিএসপি ফিরিয়ে দিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের ৪৪ সদস্য। ট্রাম্প প্রশাসন গত জুনে জিএসপির অধীনে সুবিধাভোগী উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ভারতের পদমর্যাদা বাতিল করে দেয়। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর হিউস্টনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ট্রাম্পের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এমন সময় কংগ্রেস সদস্যদের এ আহ্বানে জিএসপিসহ দীর্ঘদিনের বাণিজ্য ইসু্যতে দেশ দুটির মধ্যে সম্ভাব্য চুক্তির সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা। খবর : রয়টার্স। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথেজারকে লেখা একটি চিঠিতে কংগ্রেস সদস্যরা ভারতকে সে দেশে বাণিজ্য করার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধাভোগী দেশের তকমা ফিরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কংগ্রেস সদস্য জিম হিমস এবং রন এস্টেসের নেতৃত্বে লাইথেজারকে দেওয়া ওই চিঠিতে ২৬ ডেমেক্র্যাট এবং ১৮ রিপাবলিকান স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে ভারত থেকে আমদানির জন্য জিএসপি সুবিধাগুলো পুনঃস্থাপনের জন্য জোর সুপারিশ করা হয়েছে। এ চিঠিতে ভারতের জন্য জিএসপি পুনর্বহাল করতে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল এমন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা করার জন্য দ্রম্নত পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে বলে জানা গেছে। ভারতের জিএসপি সুবিধা কেড়ে নেওয়ায় দিল্লিও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ২৮টি মার্কিন পণ্যে শুল্ক বাড়িয়েছে। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে আপেল, আলমন্ড, ডাল ও বাদাম। ওই কংগ্রেস সদস্যরা মনে করছেন ভারতের পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতির শিকার হচ্ছে। তাই ভারতকে জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দিয়ে বাণিজ্যবিরোধ নিষ্পত্তি করা জরুরি। জিএসপি প্রোগ্রামের আওতায় সুবিধাভোগী উন্নয়নশীল দেশগুলো মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠিত যোগ্যতার মানদন্ড পূরণ করলে গাড়ির যন্ত্রাংশ এবং বস্ত্র উপকরণসহ প্রায় দুই হাজার পণ্য মার্কিন শুল্কমুক্ত অবস্থায় সে দেশে প্রবেশ করাতে পারবে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্য সম্পর্কের ভারসাম্য নিয়ে সন্তুষ্ট ছিলেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ কারণে 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতি সামনে রেখে ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যে শুল্ক বাড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি। এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে মার্কিন পণ্যে শুল্ক কমানোর জন্য চাপ দেন ট্রাম্প। ভারতও যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি মোটরবাইকে ৫০ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে আনে। তার পরও সন্তুষ্ট ছিলেন না ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, ৫০ শতাংশ অনেক বেশি। ভারতের রাজনীতিবিদদের অস্বস্তিতে ফেলে আলোচনার প্রতি মুহূর্ত সামাজিক মাধ্যমে দিতে থাকেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এতে নরেন্দ্র মোদির জন্য পরিস্থিতি কঠিন হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানায়, তারা আশা করছে যে ভারত তাদের সব পণ্য থেকে শুল্ক সরিয়ে নেবে। নাহলে যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যকে টার্গেট করবে। এছাড়া ভারতের জিএসপি সুবিধাও বাতিল করে ট্রাম্প প্রশাসন। এতে ভারতের রফতানিকারকরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আগে থেকেই চাপের মুখে ছিলেন তারা। এর পরই শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেয় ভারত। এতে মার্কিন কৃষকরা বিপাকে পড়েন। এর আগে ২০১৮ সালে জিএসপি প্রকল্পের আওতায় ভারত ৬০০ কোটি ডলারের পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়েছিল। আর তারা রফতানি করেছিল পাঁচ কোটি ৫০ লাখ ডলারের পণ্য। অন্যদিকে ভারতের কাছে ৩৩০ কোটি ডলারের পণ্য বিক্রি করে যুক্তরাষ্ট্র। ভারসাম্যের এ তারতম্যেই বিচলিত হয়ে পড়েন ট্রাম্প।