বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ

আবাসিক পর্যায়ে গ্যাসে প্রিপেইড মিটার স্থাপন

প্রকাশ | ১০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

হাসান আরিফ
আবাসিক পর্যায়ের গ্যাস গ্রাহকের জন্য প্রিপেইড মিটার চালু করার শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে জালানি বিভাগ। এখন এসব মিটার প্রতিস্থাপনের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খসড়া নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত দুই লাখ প্রিপেইড মিটার প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ শেষ করতে হলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রয়োজন। আর আবাসিক গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটার দেওয়া হলে প্রতিদিন ১৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সাশ্রয় হবে বলেও বলা হয়েছে। জানা গেছে, জাপান সরকারের ৩৫তম লোন প্যাকেজের মাধ্যমে ২ লাখ আবাসিক প্রি-পেইড মিটার এবং কর্ণফুলি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) মাধ্যমে চট্টগ্রাম এলাকায় ৬০ হাজার প্রি-পেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে তা সম্প্রসারিত হবে। বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আবাসিক খাতে গ্যাসের অপচয় রোধ হবে। এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে গ্রাহক পর্যায়ে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আর সিস্টেম লস কমিয়ে আনা সম্ভব হবে এবং কি পরিমাণ সিস্টেম লস হয় তাও জানা যাবে। তিতাস গ্যাসের গ্রাহক সংখ্যা ২৭ লাখ ৮৩ হাজার ১৩৪টা। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহক ২৭ লাখ ৬৪ হাজার ২৪৭টা। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, গাজীপুর, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহ করে তিতাস। রাজধানীর আবাসিক গ্যাস গ্রাহকদের প্রি-পেইড মিটার প্রতিস্থাপনের কাজ চলছে বাড্ডা, গুলশান, বনানী, বারিধারা, বসুন্ধরা, তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা সেনানিবাস, মিরপুর, আজমপুর, কাফরুল, খিলক্ষেত, উত্তরখান, দক্ষিণখান, উত্তরা ৩য় পর্ব, পূর্বাচল, ঝিলমিল, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, রামপুরা, মহানগর, বনশ্রী, খিলগাঁও, মগবাজার, মালিবাগ, সিদ্ধেশ্বরী, শান্তিনগর, ইস্কাটন, কলাবাগান ও হাতিরপুল এলাকা। প্রি-পেইড মিটারে মানুষ গ্যাস ব্যবহার করবে পরিমিত। তাই অর্থও সাশ্রয় হচ্ছে বা হবে। তবুও রাজধানীতে গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে আগ্রহ কম গ্রাহকদের। খোদ প্রকল্প কর্মকর্তাদের প্রতিবেদনেও গ্রাহকদের অনীহার কথা উঠে এসেছে। সাধারণ মানুষ বলছে অনীহাটা তৈরি হয়েছে বিদু্যতের ভীতি থেকে। ব্যবহারকারী ও তিতাস বলছে গ্যাসের প্রি-পেইড মিটারে খরচ কমবে ৪০-৫০ শতাংশ। তথ্যমতে কিন্তু প্রি-পেইড মিটারে অগ্রিম রিচার্জ করে গ্যাস ব্যবহার করতে আগ্রহী নন অনেক এলাকার গ্রাহক। গ্রাহক বলছেন, প্রি-পেইড মিটারে অগ্রিম রিচার্জ করলে নানা চার্জ কেটে নেওয়া হয়। এতে লাভবান নয়, উল্টো ক্ষতিগ্রস্ত হন গ্রাহক। প্রি-পেইড নয়, পোস্টপেইড পদ্ধতিতেই থাকতে চান। তবে ভিন্ন কথা বলছেন তিতাস গ্যাস প্রি-পেইড প্রকল্পের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, গ্যাসের প্রি-পেইড মিটারে গ্রাহক যেমন পরিমিত গ্যাস ব্যবহার করেন, তেমনি খরচও সাশ্রয় হয়। প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করলে অবৈধ গ্যাস সংযোগের সুযোগ থাকে না, তাই এ মিটার স্থাপনে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির লোকজন। তবে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে তেমন আপত্তি নেই গ্রাহকদের। জানা যায়, শুধু সরকারিভাবে প্রি-পেইড মিটার আমদানি নয়, বেসরকারিভাবেও মিটার আমদানি করার সুযোগ দিতে বিদু্যৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় একটা খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে। তাদের যুক্তি, এতে সারাদেশের গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটারের আওতায় আনা সম্ভব হবে।