বাংলাদেশ রাশিয়া চুক্তি

বাণিজ্য-অর্থনীতি-বিজ্ঞান-কারিগরিতে সহযোগিতা দেবে রাশিয়া

প্রকাশ | ১৫ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট বাণিজ্য, অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও কারিগরি খাতে বাংলাদেশের পাশে থাকবে রাশিয়া। এই খাতসমূহে ঋণ ও প্রযুক্তিগত সব ধরনের সহযোগিতা করবে দেশটি। উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে এ বিষয়ে একটি চুক্তি (প্রোটোকল) সই হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদ ও রাশিয়া ফেডারেশনের ডেপুটি মিনিস্টার (কৃষি) ইলিয়া ভি সেচটাকোভ। তিন দিনের এ বৈঠকে উভয় দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন তারা। বাণিজ্য, অর্থনৈতিক, বিজ্ঞান ও কারিগরি সহযোগিতা বিষয়ক বাংলাদেশ-রাশিয়া আন্তঃসরকার কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠকে এসব আলোচনা ও প্রোটোকল চুক্তি হয়। উভয়পক্ষের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বিদু্যৎ, জ্বালানি, পারমাণবিক বিদু্যৎ, বিমানখাত, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, ব্যাংকিং লেনদেন সহজীকরণ, ভূ-তাত্ত্বিক গবেষণা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক ও কারিগরি খাত। \হবৈঠক শেষে ইআরডি সচিব বলেন, রাশিয়া স্বাধীনতার সময় থেকেই বাংলাদেশকে বিভিন্নখাতে সহযোগিতা দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজকের এ প্রোটোকল চুক্তি। আগামী (২০২০) বছর মস্কোতে পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় ব্যাংকিং খাতে লেনদেন সহজীকরণের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। রাশিয়ার সহযোগিতা বাস্তবায়নাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদু্যৎ কেন্দ্রের কাজ দ্রম্নত এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, চিংড়ি, চামড়া খাত নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এসব খাতে রাশিয়া সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সময় ১০০টি ইকোনোমিক জোনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কয়েকটি ইতোমধেই চালু হয়েছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ এখানে আসছে। এখানে রাশিয়া কী ধরনের সহযোগিতা দিতে পারে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলে রাশিয়ার সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ জন্য কর ছাড়, মালিকানাসহ বিভিন্ন সুবিধার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বিদু্যৎ উৎপাদন, সিদ্ধিরগঞ্জ ও ঘোড়াশালে বিদ্যমান দুটি বিদু্যৎ কেন্দ্র উন্নয়নে রাশিয়া মত দিয়েছে। বৈঠকে জানানো হয়, পারমাণবিক বিদু্যতের পাশাপাশি বিমানের উন্নয়ন, প্যাসেঞ্জার বিমান, পেট্রোবাংলা শক্তিশালীকরণ এবং শিক্ষার মান বাড়াতে রাশিয়া সহায়তা দেবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মনোয়ার আহমেদ বলেন, রাশিয়ার নবটেক কোম্পানি স্বল্প সুদে এলএনজি আমদানির সুযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ব্যয়ের বিদু্যৎ প্রকল্প হচ্ছে রূপপুর পরমাণবিক বিদু্যৎকেন্দ্র। এখানকার দুই ইউনিট থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদু্যৎ উৎপাদন হবে। এ কেন্দ্রটি নির্মাণে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। এর মধ্যে রাশিয়া দিচ্ছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। বাকিটা দেবে সরকার। এ বিদু্যৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত করতে ৬৬৯ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন নির্মাণ কাজও শুরু হচ্ছে। রাশিয়ার ডেপুটি মিনিস্টার (কৃষি) ইলিয়া ভি. সেচটাকোভ বলেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। রাশিয়ান ফেডারেশন বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক বিদু্যৎ কেন্দ্রের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এই বিষয়ে আর্থিক, কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিচ্ছে রাশিয়া। বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তি তৈরিসহ তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে কাজ করা হবে।