নারী করদাতাদের মিলনমেলা

প্রকাশ | ১৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
কীভাবে কর জমা দেবেন সে তথ্য জানার জন্য হেল্প ডেস্কের দ্বারস্থ হলেন দনিয়া থেকে আসা গৃহিণী সালমা আক্তার। বয়স চলিস্নশ ছুঁই ছুঁই। আয়কর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলেন তার কর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। শূন্য রিটার্ন জমা দিলেই চলবে। মেলায় কথা হয় সালমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি জানান, এবারই প্রথম কর মেলায় এসেছেন। কর দেয়ার যোগ্যতা কিংবা অন্যান্য তথ্যও জানার জন্য আগ্রহী। গত বছর দুই লাখ টাকা ব্যাংকে রেখেছিলেন। আর চার মাস আগে ওই দুই লাখ টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনেছেন। যেহেতু নারীদের করমুক্ত আয় সীমা তিন লাখ। সুতরাং তার আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার প্রয়োজন নেই। মেলায় এসেই জানতে পারলেন এসব তথ্য। সালমা আক্তারের মতো মেলায় ভিড় জমিয়েছেন হাজারো নারী। তাদের জন্য রিটার্ন জমা দেয়ার আলাদা বুথ থাকায় স্বস্তি পাচ্ছেন সবাই। একে তো ছুটির দিন। ভিড় হবে জেনেও মেলায় এসেছেন নারীরা। তবে মেলায় কর জমা দিতে আসা অধিকাংশ নারীই চাকরিজীবি। রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যমতে, অন্যান্য বছরের তুলনায় আয়কর মেলায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। মেলায় খোঁজ-খবর নিতে এসেছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবছর নারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ৩০ শতাংশ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের অংশগ্রহণ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। সবাই খুব আগ্রহ নিয়ে ফর্ম পূরণ করছেন, দেখে ভালো লেগেছে। এখনো যারা মেলায় আসেননি তাদের মেলায় এসে আয়কর জমা দেওয়ারও অনুরোধ জানান তিনি। মেলায় ব্যাংকিং সেবাও দিচ্ছেন কয়েকজন নারী। কথা হয় মেলায় কর্মরত বেসিক ব্যাংকের এক্সিকিউটিভ ম্যানেজার নাসরিন খানমের সঙ্গে। তিনি জানান, সাধারণত পে-অর্ডার, ভ্যাট কমিশন ছাড়া ব্যাংকিং সেবা, কাস্টমার সার্ভিস দিচ্ছেন তারা। মেলার প্রথম দিনই দেড় কোটি টাকার পে-অর্ডার পেয়েছে বেসিক ব্যাংক। নারী-পুরুষ যে কেউ সহজে সেবা নিতে পারছেন এখানে। নতুন আয়কর জমাদানকারীদের সংখ্যাও লক্ষণীয়। ইশরাত জাহান কাজ করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। চাকরির বিভিন্ন ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্নের তথ্য জমা দিতে হয়। সে সূত্রেই আয়কর রিটার্ন জমা দিতে এসেছেন তিনি। এবারই প্রথম। প্রথম অভিজ্ঞতাটা দারুণই লেগেছে তারা কাছে। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় ভিড় ছিল খুব বেশি। মেলা ঘুরে দেখা যায়, সব কটি প্রবেশ পথ ধরেই ভেতরে প্রবেশ করছেন করদাতা ও সেবাপ্রার্থীরা। প্রথমে হেল্পডেস্কে যাচ্ছেন। তারপর দরকারি সব ফরম পূরণ শেষে কর অঞ্চলভেদে বিভিন্ন বুথে গিয়ে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছেন। এ বছর আয়কর মেলায় বাড়তি সংযোজন ছিল মোবাইলে আয়কর জমা দেয়া সুবিধা। মেলায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে বিকাশ, রূপালী ব্যাংকের শিওরক্যাশ, ইউসিবি ব্যাংকের ইউপে ও ইউক্যাশ। মেলায় এসব মোবাইল সার্ভিসের মাধ্যমেই পরিশোধ করা যাবে আয়কর। মেলায় আয়কর রিটার্ন দাখিল, ই-টিআইন গ্রহণ, ই-পেমেন্ট, ই-ফাইলিং, ই-পেমেন্টের ব্যবস্থা রয়েছে। করদাতাদের সুবিধার্থে এবার প্রথমবারের আয়কর মেলার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ওয়েবসাইট (িি.িধুশড়ৎসবষধ.মড়া.নফ) চালু করা হয়েছে। ফলে ঘরে বসেই নির্বিঘ্নে করদাতারা আয়কর রিটার্ন দিতে পারছেন। এছাড়া সাইটটিতে প্রয়োজনীয় আয়কর রিটার্ন ফরম, চালান, ইটিআইএন এপিস্নকেশন ফরম, মেলার কোথায় কোন স্টল রয়েছে, এমন সব সেবা পাচ্ছেন।