পিপলসের আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ

সম্প্রতি পাঠানো অর্থমন্ত্রীর দপ্তরের যুগ্ম প্রধান ফরিদ আজিজ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পিপলস লিজিংয়ের আমানত ফেরত দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে

প্রকাশ | ১৭ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

হাসান আরিফ
পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ছয় হাজার আমানতকারীর অর্থ ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। সম্প্রতি পাঠানো অর্থমন্ত্রীর দপ্তরের যুগ্ম প্রধান ফরিদ আজিজ স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ছয় হাজার আমানতকারীর আমানত ফেরত দেওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। এবং দ্রম্নত পরবর্তী কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে আমানতকারীরা দ্রম্নত সময়ের মধ্যে তাদের আমানত ফেরত চাইলেও প্রতিষ্ঠনটির অবসায়ন চান না। তারা চান প্রতিষ্ঠানটিকে টিকিয়ে রেখেই তাদের আমানত ফেরত পেতে চান। তাদের মতে, পিপলস লিজিং অবসায়ন করা হলে এই চক্রটি সব দায়দেনা থেকে মুক্তি পাবে এবং বিদেশে পাচার হবে শত কোটি টাকা। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হবে, তা হলো এটি একটি দুর্নীতির মডেল হিসেবে তৈরি হবে যা ভবিষ্যতে অন্যান্য ব্যাংক ও নন-ব্যাকিং সহজেই তা অনুসরণ করতে চাইবে এবং দেশের অর্থনীতিকে অস্থীতিশীল করে তুলবে। চিঠিতে বলা হয়েছে, পিপলস লিজিংয়ের ক্ষুদ্র আমানতকারীরা তাদের কষ্টার্জিত অর্থ রেখে এখন তা ফেরত না পেয়ে চরম অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছেন। তারা কোথায় গেলে এই টাকা ফেরত পাবে তার কোনো নিশ্চয়তাও পাচ্ছে না। এই কারণের অর্থমন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছেন। আমানতকারীরা তাদের সঞ্চিত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংক, তথা সরকারি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান পিপলস্‌ লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস এ আমানত রেখেছে। সেখানে ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সার্বক্ষণিকভাবে উপস্থিত ছিলেন। এখন হাজারো আমানতকারী আর তাদের লক্ষাধিক পরিবারের সদস্যরা এক অনিশ্চিত জীবনযাপন করছেন। এই টাকা থেকে অনেক অবসরপ্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের সংসারের ব্যয় নির্বাহ হতো, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া চলত, চিকিৎসা ব্যয় হতো। আজ তা সব বন্ধ। ইতোমধ্যে একজন আমানতকারী টাকা ফেরত পাওয়ার অনিশ্চয়তার কারণে হার্ট অ্যাটাকে মৃতু্য বরণ করেছেন, একজন ক্যান্সার আক্রান্ত আমানতকারী যার আট বছরের মেয়ে আছে, অর্থাভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করাতে পারছেন না। পিপলস্‌ লিজিংয়ের পরিচালকদের মধ্যে একটি অসাধু চক্র একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে তাদের সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে। এই চক্রান্ত বিভিন্ন কৌশলে, নামে-বেনামে আমানতকারীদের অর্থ বাগিয়ে নিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের দাবি, তাদের সব সঞ্চয় লুট করে এই লিজিংয়ের পরিচালকসহ অন্যরা আরাম আয়েশি জীবনযাপন করছে। তারা বিদেশে গিয়ে সেকেন্ড হোম বানাচ্ছে। তিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার এমন দুর্নীতি কখনোই প্রশ্রয় দিবেন না বলে তারা দৃঢ় ভাবে বিশ্বাস করেন। আমানতকারীরা চাচ্ছেন, পিপিলস লিজিং অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসকে রি-কনস্ট্রাকশন অথবা অন্য যে কোনো উপায়ে ক্ষুদ্র ও ব্যক্তি আমানতকারীদের কষ্টার্জিত সঞ্চয় চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ফেরত।