বাপা ফুড এক্সপো শুরু কাল থেকে

প্রকাশ | ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে 'সপ্তম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো' বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনটির সভাপতি আহসান খান চৌধুরী।
তিন দিনব্যাপী সপ্তম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো ২০১৯ শুরু হচ্ছে আগামীকাল থেকে। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) এ মেলা চলবে ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত। তিন দিনব্যাপী মেলা প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত। মেলায় প্রদর্শনী ছাড়াও কারিগরি সেশনে থাকবে দেশ-বিদেশের এ খাতে যুক্ত বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতি। থাকছে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের বিজনেস ম্যাচিং সেশনের ব্যবস্থা। বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) এবং রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড এ মেলার আয়োজন করছে। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে মেলার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন 'সপ্তম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো' এর সভাপতি এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রম্নপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাপার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইত্তাদুল হক, রেইনবো এক্সিবিশন অ্যান্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চান মোহন শাহা প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে বাপা ফুডপ্রোর বিষয়ে আহসান খান চৌধুরী বলেন, 'যারা খাদ্য শিল্পের সঙ্গে জড়িত তাদের নিয়েই বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) গঠিত। এটা আমাদের অ্যাসোসিয়েশন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প বিকাশের জন্য এ অ্যাসোসিয়েশনের আওতায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।' তিনি বলেন, 'এ শিল্প বাংলাদেশে একটা উদীয়মান শিল্প। আমরা মনে করি, আগামীতে এ শিল্পে ব্যাপক বিনিয়োগ হবে। এ শিল্প আগামীতে দেশে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।' তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে আমরা যখন বাংলাদেশি কৃষিপণ্যে শিল্প হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেতাম, তখন অনেক দেশ ঘুরে যেতে হতো। ভারত, চায়নায় যেতে হতো। তবে খুশির খবর হচ্ছে, এবার বিশ্বের ১৩ দেশের বিভিন্ন খাদ্য বিপণন এবং খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিচ্ছে। সবার লক্ষ্য, আগামী দিনে বাংলাদেশ একটা বিরাট মার্কেট হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আমি সবসময় খুশি হই বাংলাদেশের মার্কেটের ব্যাপারে। আগামীতে এ শিল্পে ব্যাপক কর্মসংস্থান হবে উলেস্নখ করে তিনি বলেন, এর ফলে কৃষির উপকার হবে, কৃষকদের উপকার হবে। আমরা যারা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত তারাসহ বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে, গুটি গুটি পায়ে আমাদের রপ্তানির যাত্রা শুরু হয়েছিল। এখন কিন্তু আমরা এক্সপোর্টে এগিয়েছি। আহসান খান চৌধুরী বলেন, 'বাপা ফুডপ্রো থেকে আমরাও শিখব। এর আগে আমরা বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে এ ধরনের মেলা করেছি। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, এবারের মেলায় প্রায় ৫০টিরও বেশি দেশীয় কোম্পানি বিভিন্ন পণ্যের সম্ভার নিয়ে উপস্থিত হবে। একই সঙ্গে ভোক্তারা অতি সাশ্রয় মূল্যে পণ্য সামগ্রী গ্রহণ করতে পারবেন। তিনি বলেন, 'এ মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করবেন কৃষিমন্ত্রী। সমাপ্তি ঘোষণা করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী। আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যেন আরও ব্যাপকভাবে খাদ্যপণ্য আদান-প্রদান করতে পারি। আমাদের মধ্যে যেন বোঝাপড়া ভালো হয়। আপনারা সবাই দেখেছেন বর্তমানে দেশে পেঁয়াজের দাম। এ ধরনের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ভোক্তাদের যেন সমস্যা না হয় সে বিষয়ে আমাদেরও ভূমিকা রয়েছে। সুতরাং আমি মনে করি, যত প্রক্রিয়াজাত শিল্প আসবে একে অপরের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়বে। আমরাও ভারতের ওপর আরও নির্ভর করতে পারব। ভারতও আমাদের ওপর নির্ভর করতে পারবে'- যোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের প্রসেস ফুড উৎপাদনকারীরা এ মেলায় আসবে। তারাও নিজেদের প্রক্রিয়াজাত শিল্প দেখাতে পারবে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশে বর্তমানে যে খাদ্য স্বল্পতা রয়েছে, তা অধিক উৎপাদন ও খাদ্য প্রক্রিয়া করে সমাধান করব। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মেলায় দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানি যারা সরাসরি ফুড প্রসেসিং সেক্টরে যুক্ত তারা অংশ নেবেন। ইতিপূর্বে ছয়বার অনুষ্ঠিত এ মেলার আশাতীত সাফল্য, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং দেশি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ ও দর্শনার্থীদের অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়ায় এবারের মেলার সাফল্য নিয়েও অত্যন্ত আশাবাদী মেলার আয়োজক কমিটি। বাপার জন্মলগ্ন থেকেই ফুড প্রসেসিং সেক্টরের উন্নয়নের স্বার্থে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাপার মূল লক্ষ্যই হলো এই সেক্টরের ক্রমবর্ধমান বিকাশ নিশ্চিত করা এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাওয়া। বিশ্বায়নের এই যুগে আগত প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করা ব্যতীত যেকোনো খাতে উন্নয়নের পথ রুদ্ধ। কাজেই বাংলাদেশ যাতে কোনোভাবেই এ খাতে পিছিয়ে না যায়, সে ব্যাপারে বাপা সদাসচেষ্ট। উলেস্নখ্য, ১৩ সদস্য নিয়ে ১৯৯৮ সালে বাপার যাত্রা শুরু। বর্তমানে বাপার সদস্য সংখ্যা ৩০০। যারা প্রক্রিয়াজাত খাদ্য বিশ্বের ১৪৪ দেশে রপ্তানি করছে। বিগত অর্থবছরে খাদ্য রপ্তানির মাধ্যমে বাপার সদস্যরা ৩৭২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছেন। এ রপ্তানির পরিমাণ ২০২১ সালের মাঝে এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করতে বাপা বদ্ধপরিকর।