চামড়া শিল্পে অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না :শিল্পমন্ত্রী

২০২১ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্য

প্রকাশ | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সোমবার পুরানা পল্টনে অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে 'চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯ অবহিতকরণ' বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী চামরাজাত পণ্যকে বহুমুখীকরণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। সরকার সে লক্ষ্য নিয়ে কাজও করছে। তবে এ শিল্পে কোনো ধরনের অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। সোমবার পুরানা পল্টনে অর্থনৈতিক রিপোর্টারদের সংগঠন ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) কার্যালয়ে 'চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯ অবহিতকরণ' বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। শিল্প মন্ত্রণালয় এবং ইআরএফ যৌথভাবে এ কর্মশালার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিম, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েনের চেয়ারম্যান মো. শাহিন আহমেদ, ইআরএফ সভাপতি সাইফুল ইসলাম দিলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ইআরএফর সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশেদুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, আমাদের রফতানি বাণিজ্যে তৈরি পোশাক শিল্পের পরেই সবচেয়ে সম্ভাবনাময় খাত হলো চামড়া শিল্প। বর্তমান বিশ্বে ২০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার রয়েছে। অথচ বাংলাদেশে এ খাতে মাত্র ১ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রফতানি করছে। বাংলাদেশের চামড়া শিল্পে শতকরা ৬০ ভাগ মূল্য সংযোজন সম্ভব। তাই আমাদের সরকার ২০২১ সালের মধ্যে চামড়া শিল্পখাতে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, চামড়া শিল্পের কাঁচামালে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু দেশীয় চামড়াজাত পণ্যের অনুকূলে লেদার ওয়ার্কিং গ্রম্নপের (এলডবিস্নউজি) ছাড়পত্র না থাকায় আমাদের রফতানি বাড়ছে না। যেহেতু চামড়া খাতে রফতানি বাড়াতে হলে প্রথমেই এলডবিস্নউজির সার্টিফিকেট অর্জন করতে হবে, তাই চামড়া শিল্প খাতে সরকার কোনো ধরনের অনিয়ম প্রশ্রয় দেবে না। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সরকার আপনাদের সব সুবিধা দেবে। এই সরকার শিল্পবান্ধব, তবে অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন জনগণকে জিম্মি করতে না পারে সেদিকে সরকার লক্ষ্য রাখবে। মন্ত্রী বলেন, সাভার চামড়া শিল্পনগরী সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার সুবিধার্থে ইতোমধ্যে 'ঢাকা ট্যানারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড' গঠন করা হয়েছে। দেশে একটি টেকসই, পরিবেশবান্ধব ও কমপস্নায়েন্ট চামড়া শিল্পখাত গড়ে তোলাই আমাদের সরকারের লক্ষ্য। এ উদ্দেশে শিল্প মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তাদের সম্ভাব্য সব ধরনের নীতি সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখেছে। ট্যানারি স্থানান্তরের জন্য সরকারের প্রতিশ্রম্নত ক্ষতিপূরণের অর্থও ইতোমধ্যে উদ্যোক্তাদের দেয়া হয়েছে। এরপরও কতিপয় অসাধু ট্যানারি মালিক কমপস্নায়েন্ট কারখানা স্থাপনে গড়িমসি করেছেন। তাদের নিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, চুক্তি অনুযায়ী কারখানা নির্মাণসহ উৎপাদন কার্যক্রম শুরুতে ব্যর্থ হওয়ায় সাভার চামড়া শিল্পনগরীর ১১টি পস্নটের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে। চামড়া শিল্পের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে শিল্প মন্ত্রণালয় 'চামড়া ও চামড়াজাতপণ্য উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯' প্রণয়ন করেছে। এর আলোকে চামড়া শিল্পের পরিবেশগত উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, বিশ্বব্যাপী চামড়াজাত ও পাদুকা পণ্যের দ্রম্নত সম্প্রসারণ হচ্ছে। বিশ্বে সব ধরনের তৈরি পাদুকার উৎপাদনের হার সাত বছরের ব্যবধানে ২০১৭ সালে ১৭ দশমিক ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ১৩৯ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দাঁড়িয়েছে। শিল্প সচিব মো. আবদুল হালিম বলেন, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী গুরুত্বপূর্ণ খাত। এই খাতে প্রত্যক্ষভাবে ৬ লাখ এবং পরোক্ষভাবে আরও ৩ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। বাংলাদেশের মোট রফতানি পণ্যের মধ্যে এই খাতের অবদান ৪ শতাংশ। আর জিডিপির দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।