রপ্তানি আয়ে শনির দশা

প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
যাযাদি রিপোর্ট চলতি অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রথম মাসেই হোঁচট খায় রপ্তানি আয়। এরপর থেকেই রপ্তানি আয়ে শনিরদশা অব্যাহত রয়েছে। এই অর্থবছরের পঞ্চম মাস নভেম্বরে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি আয় কমেছে ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ। অর্জিত আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ কম। বৃহস্পতিবার রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খাত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের রপ্তানি আয় তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরশীল। বিশ্ব বাজারে পোশাকের চাহিদা কম। বছরের শুরু থেকেই অর্ডার কমছে। সঙ্গে পণ্যের মূল্যও কমেছে। এ ছাড়া অবকাঠামোগত সমস্যা, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন না করা, ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদহারসহ বিভিন্ন কারণে রপ্তানি বাণিজ্যে নিম্নগতি রয়েছে। রপ্তানি বাণিজ্য বাড়াতে প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে তালমিলিয়ে সরকারের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। তা না হলে আগামীতে রপ্তানি আয় আরও কমে যাবে। পাশাপাশি একক পণ্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণে জোর দিতে হবে। ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) সব ধরনের পণ্য রপ্তানিতে বৈদেশিক মুদ্রার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয় এক হাজার ৮০৫ কোটি মার্কিন ডলার। কিন্তু এ সময় এই খাতে আয় হয়েছে এক হাজার ৫৭৭ কোটি ৭০ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৫৯ শতাংশ কম। একই সঙ্গে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর রপ্তানি প্রবৃদ্ধি অর্জিতের হার ৭ দশমিক ৫৯ শতাংশ কম। প্রতিবেদনে দেখা যায়, একক মাস হিসাবে চলতি বছরের নভেম্বরে রপ্তানি আয় হয় ৩০৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, কিন্তু লক্ষ্য ছিল ৩৭২ কোটি ২০ লাখ ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় নভেম্বরে রপ্তানি আয় কমেছে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। এ ছাড়া একক মাস হিসাবে প্রবৃদ্ধি কম হয়েছে ১৭ দশমিক ৯০ শতাংশ। গত বছরের নভেম্বরে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৩৪২ কোটি ১৯ লাখ ডলার। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে মোট রপ্তানি আয়ে পোশাকের অবদান প্রায় ৮৩ শতাংশ। তবে হোমটেক্স, টেরিটাওয়েলসহ এই খাতের অন্যান্য রপ্তানির উপখাত হিসাব করলে তৈরি পোশাক খাতের অবদান ৮৫ শতাংশে দাঁড়াবে। তাই তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমলে তার প্রভাব পড়ে পুরো রপ্তানি খাতে। আলোচিত সময় তৈরি পোশাক খাতের রপ্তানি আয়ও কমেছে। অর্থবছরের নভেম্বর শেষে পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে এক হাজার ৩০৮ কোটি ৮৬ লাখ ৯০ হাজার ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ৬৩ শতাংশ কম। এই সময় রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও কমেছে ৭ দশমিক ৭৪ শতাংশ। ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের বড় খাতগুলোতেও রপ্তানি আয় কমেছে। চলতি বছরের নভেম্বর শেষে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ কমে ৪৪ কোটি ৬৩ লাখ ডলার হয়েছে। পস্নাস্টিক পণ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধি বাড়লেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ১৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ। পাঁচ মাসে এই খাতে আয় হয়েছে চার কোটি ৮৮ লাখ ডলার। আলোচিত সময় চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি আয় প্রবৃদ্ধি কমেছে; অর্জন হয়নি লক্ষ্যমাত্রাও। পাঁচ মাসে চামড়াজাত খাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছে ৩৯ কোটি ১০ লাখ ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ কম। প্রবৃদ্ধিও কমেছে ১০ দশমিক ০৩ শতাংশ।