কৃষির উন্নয়নে মাটির ক্ষয়রোধ করতে হবে :কৃষিমন্ত্রী

প্রকাশ | ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আ ক মু গিয়াস উদ্দিন মিলকি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, মৃত্তিকার ক্ষয়রোধ করে আমাদের কৃষি উন্নয়নের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের উন্নয়নে কৃষির উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ, সেজন্য পানি ও মাটির ব্যবহারও বিজ্ঞানসম্মত হতে হবে। বৃহস্পতিবার বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর আ ক মু গিয়াস উদ্দিন মিলকি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশে ইনটেনসিভ চাষের কারণে মাটির গুণাগুণ কমে যাচ্ছে। ভূগর্ভস্থ সেচের কারণে পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। চাষের কারণে অর্গানিক উপাদান কমে যাচ্ছে। এসব রোধে বিজ্ঞানীদের আরও গবেষণা করতে হবে। কৃষিমন্ত্রী বলেন, মাটির উর্বরতা রক্ষার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রযুক্তি বাড়ানো হলেও কৃষকরা তা ব্যবহার করেন না। আবার পাহাড়ে জুম চাষের কারণেও মাটির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে। আমাদের দেশের মাটির অতিমাত্রায় ব্যবহার, অপব্যবহার ও অন্যায় কাজে ব্যবহার- এই তিন কাজেই ব্যবহার হচ্ছে। নদীর পাড় ভেঙে জমি নষ্ট হচ্ছে। ১৬ কোটি মানুষের জীবন জীবিকার জন্য অনেক জমি লাগে। ইটভাটায় মাটির অপব্যবহার সম্পর্কে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের সব কিছুর প্রবৃদ্ধি কম কিন্তু ইটভাটার প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি। মানুষ ইট বানাবেই, কিন্তু নতুন প্রযুক্তির খোঁজও করতে হবে। বিকল্প প্রযুক্তি আনার জন্য বিজ্ঞানীদের বেশি বেশি গবেষণা করতে হবে। গবেষণায় খামখেয়ালির জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, গবেষণার ফান্ড বিজ্ঞানীরা খরচই করতে পারছে না। তাদের যে জ্ঞান দরকরা সেটিও নেই। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি করে? তাদের মান আরও বাড়াতে হবে। তারা শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষা দিচ্ছে না। তারা যদি নিজেদের মান আরও বাড়াত, তবে শিক্ষার্থীদের মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য যেতে হয় না। এসআরডিএ'র সঙ্গে প্রয়োজনে যৌথভাবে ডিগ্রি দেয়ার ব্যবস্থা করা উচিত তাদের। তবুও শিক্ষার্থীদের কৃষির আধুনিক জ্ঞান দেয়া উচিত। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক বিধান কুমার ভান্ডারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. কবির ইকরামুল হক, এফএও'র বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পবন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, মৃত্তিকার ক্ষয়ের কারণে ক্ষতি যেমন হয় তেমন উপকারও আছে। কারণ বাংলাদেশের মতো ব-দ্বীপ তৈরি হয়েছে মাটির ক্ষয়ের কারণেই। সব দিকই বিবেচনায় রাখতে হয়। জুম চাষে পাহাড়ে বায়ো-ডাইভারসিটি হয় আবার মাটির ক্ষয়ও হয়। কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. কবির ইকরামুল হক বলেন, ২০১৩ সাল থেকে বিশ্বে মৃত্তিকা দিবস পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু এবারই বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে। ফসল ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মৃত্তিকার স্বাস্থ্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রতি ৫ সেকেন্ডে এক দশমিক ছয় একর জমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় জৈব সার ব্যবহার করা উচিত।