বৈঠকেও বাগে আসেনি পুঁজিবাজার

প্রকাশ | ০৭ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মস্তফা কামালের সঙ্গে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টদের বৈঠকেও কাজ হয়নি, সপ্তাহের শুরুতেই বড় দরপতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। আর দ্বিতীয় দিনেও তাই। বৈঠকের পর রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় ৬০ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৩২ শতাংশ কমেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে প্রধান সূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ২ শতাংশ। সেইসঙ্গে লেনদেনও কমেছে দুই বাজারে। পুঁজিবাজারে পতন ঠৈকাতে বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টকেএক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালনা পর্ষদের সদস্য অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি' চেয়ারম্যানসহ অন্য কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ডিএসইসির পক্ষ থেকে ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন, অগ্রিম আয়কর শিথিল, সরকারি ভালো কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত, গ্রামীণফোন এবং টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্বন্‌েদ্বর দ্রম্নত নিষ্পত্তিসহ বেশ কিছু প্রস্তাব দেন। সেসব প্রস্তাবের মধ্যে টাকার অবমূল্যায়নের বিষয়টি সরাসরি নাকচ করে দেন অর্থমন্ত্রী। অন্য দাবিগুলোর বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি মন্ত্রী। উল্টো পুঁজিবাজারের দরপতনের কারণ হিসেবে গুজবকে চিহ্নিত করেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, গুজবের কারণেই পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।২০১০ সালে বড় ধসের পর এখনই সবচেয়ে বেশি মন্দা চলছে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে। ২০১৬ সালের শেষ দিকে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও ২০১৮ সাল থেকে আবার পতনের ধারা শুরু হয়। ২০১৯ সালে বাজার আরও খারাপ হয়ে সূচক ফিরে গেছে সাড়ে তিন বছরের আগের অবস্থানে। বাজারের দুরাবস্থায় হতাশা প্রকাশ করে বাজার বিশ্লেষক ডিএসইর সাবেক সহসভাপতি আহমেদ রশীদ লালী বলেন, 'বৈঠক করে বাজার ঠিক হবে না। বাজার স্বাভাবিক করতে হলে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। আর সেটা অর্থমন্ত্রী বা সরকার নয়, ডিএসইকেই করতে হবে।' 'বাজারে কোনো ধরনের ভয় বা আতংক সৃষ্টি করা যাবে না। করপোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। ডিএসইকে আন্তর্জাতিক মানের ভালো একটি রিসার্স সেন্টার গড়ে তুলতে হবে। যে রিসার্সের ভিত্তিতেই বাজার পরিচালিত হবে। বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করবে।' 'এ সব কাজ করার দায়িত্ব ডিএসই'র। অর্থমন্ত্রীর নয়। এগুলো না করে বৈঠক করে কোনো লাভ হবে না, বলেন লালী। এদিকে গতকালও দেশের শেয়ারবাজারে টানা বড় দরপতন দেখা দিয়েছে। রোববারের ধারাবাহিকতায় সোমবারও দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্য সূচকের বড় পতন হয়েছে। সোমবার ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৮ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৩৩১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্‌ সূচক ১২ পয়েন্ট কমে ৯৮৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৫১ পয়েন্টে অবস্থান করেছে। সবকটি সূচকের পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৬৩টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫৩টির। আর ৩৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সূচক ও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমলেও ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৭৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা।