প্রাইম ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি অনুষ্ঠানে গভর্নর

সম্পদ শেয়ার করলে দারিদ্র্য ইতিহাসে চলে যেত

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেছেন, আমাদের দেশের মানুষ সম্পদ শেয়ার (ভাগাভাগি) করে না, করলে দারিদ্র্য ইতিহাসে চলে যেত। শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ভবনে প্রাইম ব্যাংকের শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফজলে কবির এ কথা বলেন। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের একটি বক্তব্য উদ্ধৃতি করে গর্ভনর বলেন, মানুষ কিন্তু সম্পদ ভাগাভাগি করে না। সম্পদ যদি সবাই ভাগাভাগি করতাম, যেখানে প্রয়োজন সেখানে দিতাম; সেটা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে হোক, সামাজিকভাবে হোক, পারিবারিকভাবে হোক আর ব্যক্তিগতভাবে হোক; তাহলে কিন্তু আমাদের দারিদ্র্য ইতিহাসে চলে যেত। রাশিয়ান একজন লেখকের উদ্ধৃতি দিয়ে গর্ভনর বলেন, আপনি একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে দেবেন, সেই মোমবাতি দিয়ে আবার হাজারো মোমবাতি জ্বালাবে। আজকে সম্মাননা পাওয়া চারজন ছাড়াও আমি দেখছি, এমবিবিএস চিকিৎসক ২৮৭ জন, প্রকৌশলী ২২৮ জন, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শিক্ষক ৭৫ জন, বিসিএস ও সরকারি কর্মকর্তা ৫২ জন, ব্যাংকার ১৪২ জন রয়েছেন। বিশেষ করে যারা চিকিৎসা ও শিক্ষকতা করছেন তারাই এই মোমবাতি জ্বালিয়ে দেবেন। আর এজন্য আপনাদের সহায়তা করছে প্রাইম ব্যাংক। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর) কর্মসূচির আওতায় প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশন শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচিতে চলতি বছর দেশের ২৬৩ জন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করার জন্য প্রতি মাসে দুই হাজার ৬০০ টাকা করে দেওয়া হবে। ২০০৭ সাল থেকে প্রাইম ব্যাংক দীর্ঘমেয়াদে এই বৃত্তি দিয়ে আসছে। সভাপতির বক্তব্যে প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরী বলেন, সারাদেশে যারা গরিব ও মেধাবী তাদের এই বৃত্তির আওতায় আমরা নিয়ে আসি। বিষয়টি স্বচ্ছতার জন্য আমরা ম্যানেজমেন্টের বাইরে রেখেছি। আমরা যাদের বৃত্তি দিচ্ছি তাদের সাফল্যের পরিমাণ ৯৮ শতাংশ। কয়েক বছর ধরে ব্যাংকগুলো অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। তারপরও আমরা মুনাফার ৪ শতাংশ সিএসআর খাতে ব্যয় করছি। অনুষ্ঠানে প্রাইম ব্যাংকের বৃত্তি নিয়ে কর্মক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত তাসমিয়া ইসলাম, ইমাম উদ্দিন, তমালিকা কর্মকার, মো. আজাদ হোসেনকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানান অতিথিরা। এ ছাড়া অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী, গভর্নর ফজলে কবির ও প্রাইম ব্যাংকের চেয়ারম্যান আজম জে চৌধুরীকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেওয়া হয়। উলেস্নখ্য, প্রাইম ব্যাংক ফাউন্ডেশনের 'শিক্ষা সহায়তা কর্মসূচি' এর আওতায় ২০০৭ সালে ১৭০ জন, ২০০৮ সালে ১২২, ২০০৯ সালে ১৯৮ জন, ২০১০ সালে ১৯৬ জন, ২০১১ সালে ২০৫ জন, ২০১২ সালে ৩৮৬ জন, ২০১৩ সালে ৩৯৪ জন, ২০১৪ সালে ৪০২ জন, ২০১৫ সালে ৩৭২ জন, ২০১৬ সালে ৩৬০, ২০১৭ সালে ৩৪০, ২০১৮ সালে ২৯১ এবং এ বছর ২৬৩ জনসহ এ পর্যন্ত ৩,৬৮৪ জন দরিদ্র অথচ মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীকে দীর্ঘমেয়াদি ও নবায়নযোগ্য শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে।