ছুটির দিনে জনসমুদ্র বাণিজ্য মেলা

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সময় যত শেষ হয়ে আসছে ততই জমে উঠছে ২৫তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। সব বয়সি মানুষের ভিড়ে মেলা যেমন জমজমাট হয়ে উঠেছে, তেমনি বেড়েছে পণ্য বিক্রির পরিমাণ। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় মেলা প্রাঙ্গণের চিত্র ছিল সপ্তাহের অন্যসব দিনের তুলনায় ভিন্ন। সকালের হালকা শীত উপেক্ষা করে মেলায় এসেছেন হাজারো দর্শনার্থী। তাতে দুপুর গড়ানোর আগেই ক্রেতা-দর্শনার্থীতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে মেলার মাঠ। এ যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অনুষ্ঠিত মেলা প্রাঙ্গণ। সরেজমিন দেখা যায়, মেলার প্রধান ফটক উন্মুক্ত করে দেওয়ার আগেই সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছেন বিভিন্ন স্টল-প্যাভিলিয়নে কর্মরতরা। সঙ্গে চোখে পড়ার মতো ছিল দর্শনার্থী। এরইমধ্যে টিকিট সংগ্রহ করে একে একে মেলার মাঠে প্রবেশ করতে থাকেন দর্শনার্থীরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে তাদের সংখ্যা। দুপুর ১২টার আগেই যেনো কানায় কানায় ভরে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। অন্যদিকে সপ্তাহের অন্যদিনে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি লক্ষ্য করা গেলেও শুক্রবার তা ভিন্ন। এদিন দর্শনার্থীর চেয়ে ক্রেতার সংখ্যা বেশি হয় বলে বিক্রেতা সূত্রে জানা যায়। মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় পণ্য বেচা-বিক্রি। আগতদের অনেকেই স্টল কর্তৃপক্ষের কাছে পণ্যের গুণাগুণ বিষয়ে জানতে চান। তা জেনে অনেকেই কেনা-কাটায় সময় কাটাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অপরদিকে বেশি ক্রেতা-দর্শনার্থীর আগমনে হিমশিম খেতে হয় দোকানদারদের। ক্রেতার তুলনায় তাদের সংখ্যা হাতেগোনা হওয়ায় সকালে বেগ পেতে হয়। তবুও তারা ক্রেতার চাহিদা পূরণে পছন্দের পণ্য বুঝিয়ে দেওয়ায় ব্যস্ত থাকছেন। মোহাম্মদপুর থেকে পরিবার নিয়ে মেলায় এসেছেন শাহেলা আক্তার। তিনি মেলা থেকে ক্রোকারিজ সামগ্রী কিনবেন। বাংলানিউজকে বলেন, মেলায় কেনা-কাটা করতে সকালের সময়কে বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু সকাল থেকেই দর্শনার্থীর আগমন, বেশি তবু পণ্য কিনতে হবে। ফার্নিচার কেনার উদ্দেশে পুরান ঢাকা থেকে মেলায় এসেছেন হারুন। তিনি বলেন, ভালোমানের পণ্য আর দেখে নেওয়ার সুযোগ আছে মেলায়। এজন্য সকাল সকাল মেলায় এসেছি। পণ্য কেনা হয়েছে, এবার বাসায় ফেরার পালা। মেলায় বসুন্ধরা নুডলসের ব্র্যান্ড প্রোমো সবুজ দাস বলেন, আমাদের স্টলে প্রতিদিন দর্শনার্থী বেশি আসেন। আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দর্শনার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি, বিক্রির পরিমাণও বেশি। বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে এবার আমরা নুডলসে ছাড়ের পাশাপাশি বিভিন্ন উপহার নিয়ে এসেছি। আগামীতে আরও ছাড় দেওয়া হবে। দর্শনার্থীর চাহিদা বিবেচনায় আমরা রান্না করা নুডলস সরবরাহ করছি। প্যাকেট নুডলসের পাশাপাশি রান্না করা নুডলসেও ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি ক্রেতা-দর্শনার্থীর। মেলায় কাপ নুডলস খেতে দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইন যাযাদি রিপোর্ট বাণিজ্য মেলার শেষ সপ্তাহে জমজমাট হয়ে উঠেছে বেচাকেনা। ছুটির দিনে বেড়েছে দর্শনার্থীদের ভিড়। প্রিয়জনদের নিয়ে মেলায় আসছেন ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। অনেকেই দীর্ঘ সময় মেলায় অবস্থান করায়, ঘুরতে ঘুরতে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ছেন। আর এই ক্ষুধা মেটাতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন কাপ নুডলস খেতে। সামর্থ্য থাকলেও অন্যান্য খাবারের দোকানগুলোতে অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করায় সে সব খাবারের দোকান এড়িয়ে চলছেন দর্শনার্থীরা। তবে যারা জানেন না অনেকেই একবার খেয়ে শিক্ষা অর্জন করে আসছেন। দ্বিতীয়বার মেলায় গেলে আর ভুলেও ঢোকেন না সেসব খাবারের দোকানে। তাই ক্ষুধা নিবারণ করতে তারা বেছে নিয়েছেন ইনস্ট্যান্ট নুডলস। শুক্রবার ছুটির দিনে বাণিজ্য মেলার ঘুরে দেখা যায় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নুডলসের স্টলগুলোতে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন দর্শনার্থীরা। আবার অনেকেই দীর্ঘ লাইন দেখে বিরক্ত হয়ে ফিরেও যাচ্ছেন। এক কাপ নুডলসে গরম পানি মিশিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেই খাবার উপযোগী হয়ে যাচ্ছে এই নুডলস। দর্শনার্থীরা মেলায় নিজেদের পছন্দমত স্বাদের নুডলস অর্ডার দিতে পারছেন। স্টলগুলোতে ছোট বড় সকলের জন্য ভিন্ন স্বাদের ইন্সট্যান্ট কাপ নুডলস পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে হট স্পাইসি, চিকেন মাসালা, ছোটদের জন্য চিকেন কারি, এগ এন্ড চিকেন, বিফ ভুনা স্বাদের নুডলস রয়েছে। মেলায় নেসলের ম্যাগি, ফু-ওয়াং, কোকোলা, বসুন্ধরাসহ বিভিন্ন স্টলে পাওয়া যাচ্ছে এসব নুডলস। প্রতিষ্ঠানভেদে এর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যেই। কোকোলা ফুড স্টলের দায়িত্বে থাকা নাঈমুর রহমান বলেন, আমাদের অনেক ভালো বিক্রি হচ্ছে। আজ শুক্রবার বলে কোনো দিকে তাকানোর সময় পাচ্ছি না। তিনি জানান, প্রথমে টোকেন নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে তারপর নুডলস নিতে হচ্ছে। আলাদা আলাদা স্বাদের ইনস্ট্যান্ট নুডলস পাওয়া যাচ্ছে স্টলটিতে। ফু ওয়াং ফুডস লিমিটেড এর বিক্রয়কর্মী সাকিন বলেন, আমাদের এখানে শুধু এগ এন্ড চিকেন স্বাদের কাপ নুডলস পাওয়া যাচ্ছে। মূল্য ৪০ টাকা। পরিবার নিয়ে মেলায় আসা কামাল শেখ বলেন, অন্য খাবারের দোকানগুলোতে খাবারের মূল্য অনেক বেশি রাখছে। তাই রাগ করেই ঢুকি না। বাচ্চারা ক্ষুধার্ত হয়ে পড়েছে তাই কাপ নুডলস খাওয়ানোর জন্য এখানে এসেছি। খেতেও ভালো লাগে আবার এক কাপে পেটও ভরে যায়। খালেদা জাহান স্বামীসহ দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে নুডলস হাতে পেয়েছেন। তিনি বলেন, প্রায় ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পরে পেলাম। তবে মেলার অন্যান্য স্টলের খাবারের দাম অনেক বেশি সেই তুলনায় এটা খাওয়া অনেক ভালো।