আগামী বাণিজ্য মেলা পূর্বাচলে

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
আগামী বছর বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হবে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে -যাযাদি
আগামী বছর ২০২১ সালের বাণিজ্য মেলার ২৬তম আসর আয়োজন হবে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে। তবে ধীরলয়ে কাজ চলায় নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে কিনা তা নিয়ে ছিল সংশয়। বিষয়টি অবগত হওয়ায় দ্রম্নত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফলে ফের বেড়েছে কাজের গতি। এখন আর আগামী বছর নয়, এ বছরের মাঝামাঝি এই এক্সিবিশন সেন্টার চালু হওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের নির্মাণকাজ দ্রম্নত শেষ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বে বাংলাদেশি পণ্যের নতুন ক্রেতাদের আকর্ষণ করার লক্ষ্যে পণ্য প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারকদের পণ্য প্রদর্শনের সুযোগ সৃষ্টি করা হবে এখানে। এই সেন্টারের মাধ্যমেই ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। উলেস্নখ্য, ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বাচল নিউ টাউনের ৪নং সেক্টরের ৩১২নং রোডের ০০২নং পস্নটে নির্মাণ করা হচ্ছে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার। রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরো ইপিবি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মোট ৩৫ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন এই সেন্টারে আধুনিক কার পার্কিং, সম্মেলন কক্ষ, সভাকক্ষ, প্রেস সেন্টার, অভ্যর্থনা কক্ষ, বাণিজ্য তথ্যকেন্দ্র, আধুনিক সুবিধাসংবলিত ডরমিটরি থাকবে। এ ছাড়া এক্সিবিশন সেন্টারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সার্বক্ষণিক সিসিটিভিসহ আধুনিক সুবধাসংবলিত ব্যবস্থাসহ, বিদু্যতের জন্য নিজস্ব সাব-সেন্টার, সার্ভিস রুম, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, কালভার্ট ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। এদিকে রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরোর (ইপিবি) দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ প্রকল্পটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু হলেও এতদিন এ প্রকল্পের কাজ সেভাবে আগায়নি। কাজের অগ্রগতিতে যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছিল যে নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ করা যাবে কিনা। তবে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাজে আবার গতি বেড়েছে। এখন আর সেই সংশয় নেই বলে দাবি করেছে সূত্রটি। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টরে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারের কাজ কিছুদিনের মধ্যেই শেষ হবে। আগামী বছর থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা এখানেই হবে। তিনি জানান, সংশোধিত প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের সময় প্রকল্পটির কাজ দ্রম্নত শেষ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন রয়েছে। আমরা তা মানার চেষ্টা করছি। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটির জন্য উপযুক্ত জমি যথাসময়ে পাওয়া যায়নি। এ কারণে নকশা করে এর বাস্তবায়ন কাজ শুরু করা যায়নি। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাজউক পূর্বাচল উপশহরে মোট ২০ একর জমি বরাদ্দ দেয়। যদিও পরবর্তীতে জমি আরও বাড়ানো হয়। ওই জমি বিবেচনায় রেখে বেইজিং ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেকচারাল ডিজাইন (বিআইএডি) প্রস্তাবিত সেন্টারের একটি পরিকল্পিত ডিজাইন করে। ডিজাইন চূড়ান্তের আগেই বিআইএডি প্রকল্প এলাকায় সমীক্ষা পরিচালনা করে। সমীক্ষা পরিচালনার পর বিআইএডি জানায়, একনেকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আলোচ্য প্রকল্পের ডিজাইনে ভূ-গর্ভস্থ কার পার্কিং ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা অর্থনৈতিক এবং কারিগরি দৃষ্টিকোণ থেকে যৌক্তিক হবে না। ফলে সেন্টারের ডিজাইনে ভূ-গর্ভস্থ কার পার্কিংয়ের পরিবর্তে ভূমি সমতলে এ কার পার্কিং ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে ডিজাইনটি প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন করেন। এরপর প্রকল্পের সময় বাস্তবতার নিরিখে বাড়িয়ে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয়ের মধ্যে জিওবি ৪৭৫ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা এবং ইপিবির ২০২ কোটি ৮০ লাখ টাকা জোগান দিচ্ছে। সংশোধিত প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ১০ জুলাই একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়। সূত্র জানায়, প্রকল্প ঋণ বাবদ ৬২৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা চীন সরকারের অনুদান হিসেবে পাওয়া যাবে। এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় রপ্তানি উন্নয়ন বু্যরো বাস্তবায়ন করছে। এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানিয়েছেন, কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ দ্রম্নত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্ধারিত সময়ের আগেই এটির নির্মাণকাজ শেষ হবে।