এশিয়ার শেয়ারবাজারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

প্রকাশ | ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
চীনা মূল ভূখন্ডে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার পর গতকাল এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মহামারীর বিস্তৃতি নিয়ে উদ্বেগ বাজারগুলোতে চাপ তৈরি করছে। তবে এর আগে বুধবার ভাইরাসটি নিয়ে উদ্বেগ কিছুটা কমায় ওয়াল স্ট্রিটে চাঙ্গা ভাব দেখা গিয়েছিল। খবর এএফপি। হংকংয়ের শেয়ারবাজার দশমিক ৫ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি দিয়ে লেনদেন শুরু করলেও দ্রম্নতই পতন দেখা যায়। অন্যদিকে চীনা মূল ভূখন্ডের সাংহাই কম্পোজিট ইনডেক্স দশমিক ১ শতাংশ বাড়তে দেখা গেছে। এছাড়া টোকিও দশমিক ১ শতাংশ পতন দিয়ে লেনদেন শুরু করলেও পরে দশমিক ১ শতাংশ ঊর্ধ্বগতি লাভ করে। এর বাইরে এশিয়ার শেয়ারবাজারগুলোর মধ্যে গতকাল সিডনি দশমিক ৩ শতাংশ, সিউল দশমিক ৬ শতাংশ ও তাইপেই দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এদিকে ভাইরাস আক্রান্তের নতুন সংখ্যার ওয়াল স্ট্রিটের ইতিবাচক গতির ওপর প্রভাব পড়তে দেখা গেছে। যদিও বুধবার ওয়াল স্ট্রিটের তিনটি প্রধান সূচকেই নতুন রেকর্ড উচ্চতা দেখা যায়। এর মধ্যে এসঅ্যান্ডপি-৫০০ ও প্রযুক্তি সূচক নাসডাক কম্পোজিট টানা তৃতীয় দিনের মতো ঊর্ধ্বগতি দিয়ে লেনদেন শেষ করেছে। মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) গভর্নর জেরোমি পাওয়েলের যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও সুদহার সামান্য বৃদ্ধির ইতিবাচক আভাসের পর বাজার চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এর বাইরে স্থানীয় সময় বুধবার ইউরোপের লেনদেনকারীদেরও ইতিবাচক থাকতে দেখা যায়। ইউরোপের বাজারগুলোর মধ্যে ফ্রাঙ্কফুর্ট রেকর্ড উচ্চতায় ও প্যারিস চলতি বছরের সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে লেনদেন শেষ করে। এক্সিকর্পের প্রধান বাজার কৌশলী স্টেফেন ইনস বলেন, চীনে করোনাভাইরাসে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা উলস্নম্ফন প্রাথমিকভাবে বাজারে বড় ধাক্কা তৈরি করেছে। তবে এমন ভয়াবহ সংবাদের পরও চলতি মাসের শেষ নাগাদ ভাইরাসের প্রভাব কমতে পারে এমন প্রত্যাশায় বাজারে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডবিস্নউএইচও) মহামারী মোকাবিলায় চীনের পদক্ষেপের প্রশংসা করলেও বিশ্ববাসীর কাছে বেইজিংয়ের দেয়া তথ্যের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে এর আগে ২০০২-০৩ সালে সার্স মহামারীর সময় চীন তথ্য গোপন করায় এবার করোনাভাইরাসের মাত্রা নিয়ে অনাস্থা তৈরি হয়েছে। এএনজেড ব্যাংকিং গ্রম্নপের এশিয়াবিষয়ক গবেষণার প্রধান খুন গোহ বলেন, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমা নিয়ে যে মুহূর্তে বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসছিল, ঠিক সে মুহূর্তে ভাইরাসের সংক্রমণ সংখ্যায় নাটকীয় উলস্নম্ফন বড় ধাক্কা দিয়েছে। এদিকে কোভিড-১৯-এর কারণে চীনের মন্থর অর্থনীতি আরো ক্ষতির ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অর্থনীতিটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়ে ৩ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে বলে সতর্ক করেছে এএনজেড ব্যাংক। এর আগে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস করা হয়েছিল। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে বুধবার এক বৈঠকে চীনের শীর্ষ নেতারা ভাইরাসের প্রভাব নিয়ন্ত্রণে রাখার প্রচেষ্টার ও অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিগুলোর জন্য সহায়তা পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।