চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধ

বিক্রি বাড়লেও মুনাফা কমেছে আশুগঞ্জ পাওয়ারের

প্রকাশ | ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
চলতি হিসাব বছরের প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর) বিক্রি বাড়লেও কর-পরবর্তী নিট মুনাফা কমেছে আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানি লিমিটেডের (এপিএসসিএল)। গত ১৬ জানুয়ারি দেশের উভয় শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির নন-কনভার্টেবল বন্ডের লেনদেন শুরু হয়। প্রথমার্ধের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, আলোচ্য সময়ে আশুগঞ্জ পাওয়ারের বিক্রি বেড়েছে ১৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ১৬ শতাংশ। জুলাই-ডিসেম্বর মেয়াদে কোম্পানিটির বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ২০৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ১ হাজার ১৯৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। মোট বিক্রি বাড়লেও আলোচ্য সময় কোম্পানিটির বিক্রয় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির কর-পরবর্তী নিট মুনাফা কমেছে ৪৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা বা ১৬ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে আশুগঞ্জ পাওয়ারের নিট মুনাফা হয়েছে ২২৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা, যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ২৬৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ৮৩ পয়সা, যা আগের বছরে একই সময় ছিল ২ টাকা ২০ পয়সায়। ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৮১ পয়সা, আগের হিসাব বছর শেষে যা ছিল ১৬ টাকা ৪২ পয়সা। উলেস্নখ্য, চলতি বছরের শুরুতে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় আশুগঞ্জ পাওয়ারের ২ লাখ ফুললি রিডিমেবল নন-কনভার্টেবল বন্ড। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৬৯২তম কমিশন সভায় এ বন্ডের প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন করা হয়। কোম্পানিটির ইসু্য ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে ছিল আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্টস লিমিটেড। ট্রাস্টি হিসেবে ছিল আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড। নিরীক্ষক ছিল এসএফ আহমেদ অ্যান্ড কোম্পানি। গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত আশুগঞ্জ পাওয়ারের সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনযোগ্য বন্ডের আইপিও সাবস্ক্রিপশন অনুষ্ঠিত হয়। সাবস্ক্রিপশন শেষে দেখা যায় মাত্র ৩৫ শতাংশ আবেদন জমা পড়েছে। ফলে নিয়মানুসারে কোম্পানিটির বন্ড বাতিল হয়ে যাওয়ার কথা। তবে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে বন্ডের সাবস্ক্রিপশনের সময়সীমা বাড়ানোর জন্য কমিশনের কাছে আবেদন করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন বন্ডটির অনুত্তোলিত অংশের চাঁদা গ্রহণের (সাবস্ক্রিপশন) তারিখ গত বছরের ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়ায়। বর্ধিত সময়ে বন্ডটির আইপিওতে শতভাগের কিছু বেশি আবেদন জমা পড়ে। বন্ড ছেড়ে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকার তহবিল সংগ্রহ করেছে আশুগঞ্জ পাওয়ার। আইপিও তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে ৪০০ মেগাওয়াটের কম্বাইনড সাইকেল বিদু্যৎকেন্দ্রে বিনিয়োগের পরিকল্পনা ছিল কোম্পানির। এর মধ্যে ভূমি উন্নয়ন ও সিভিল ওয়ার্কের জন্য ৪৬ কোটি ৮০ লাখ, প্রাথমিক জ্বালানি বাবদ ৩০ কোটি, যানবাহন ক্রয়ে ৩ কোটি ৬০ লাখ, প্রকৌশলী ও পরামর্শক সেবার জন্য ৪ কোটি ৪০ লাখ, চলতি মূলধন বাবদ ১০ কোটি ৯৯ লাখ ও আইপিও খরচ খাতে ৪ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ের পরিকল্পনা করা হয়। আশুগঞ্জ পাওয়ারের বন্ডটির মেয়াদ সাত বছর। এর বার্ষিক কুপন সুদহার হবে ১৮২ দিন মেয়াদি ট্রেজারি বিলের সুদহারের সঙ্গে ৪ শতাংশ মার্জিনযুক্ত হার (যা সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৫ শতাংশ ও সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৫ শতাংশ)। এ কুপন অর্ধবার্ষিক মেয়াদে প্রদেয়। আইপিওতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ হাজার টাকায় একটি বন্ড বরাদ্দ ছিল। আইপিওতে আসার পর প্রথম তিন বছর বিনিয়োগকারীরা ট্রেজারি বিলের সুদহারের সঙ্গে মার্জিনযুক্ত হারে লভ্যাংশ পাবেন। আর চতুর্থ বছর থেকে লভ্যাংশের পাশাপাশি বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত দেয়া শুরু হবে। চতুর্থ থেকে সপ্তম বছরে চার কিস্তিতে ২৫ শতাংশ হারে অর্থ ফেরত দেয়া হবে। আর সপ্তম বছর শেষে বিনিয়োগকারীদের পাওনা পুরোপুরি পরিশোধের পর বন্ডটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বৃহস্পতিবার আশুগঞ্জ পাওয়ারের বন্ডটির সর্বশেষ দর ছিল ৪ হাজার ৯১২ টাকা। সমাপনী দর ছিল ৪ হাজার ৯১২ টাকা ৫০ পয়সা। লেনদেন শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বন্ডটির সর্বনিম্ন দর ছিল ৪ হাজার ৫০১ টাকা। আর সর্বোচ্চ দর ছিল ৫ হাজার ৩২ টাকা।