ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগে বাধা কাটল ভারতে

প্রকাশ | ০৭ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
বিটকয়েনসহ সব ক্রিপ্টোকারেন্সির (ডিজিটাল মুদ্রা) বেচাকেনা বন্ধ নিয়ে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) নির্দেশিকা খারিজ করে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ফলে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগে আর বাধা নেই দেশটিতে। বুধবার বিচারপতি আর নরিম্যানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ ওই নির্দেশিকা খারিজ করেন। ২০১৮ সালের ওই নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল ইন্টারনেট ও মোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (আইএমএআই)। ভারতের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর জন্য ২০১৮ সালের ৬ এপ্রিল ওই নির্দেশিকা জারি করেছিল রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। তাতে বলা হয়েছিল, ওই সময় থেকে তিন মাস পর ব্যাংকগুলো আর কোনো ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেটে টাকা পাঠাতে বা ওয়ালেটগুলো থেকে টাকা ব্যাংকে ট্রান্সফার করতে পারবে না। ক্রিপ্টো-ওয়ালেটগুলোর অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করা হয়। অর্থাৎ বিটকয়েন বা ক্রিপ্টোকারেন্সিকে নিষিদ্ধ না করে ঘুরিয়েই একই নির্দেশিকা জারি করা হয়। ক্রিপ্টোকারেন্সি যেহেতু কোনো 'বৈধ মুদ্রা' নয়, তাই আরবিআই কীভাবে তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে, প্রশ্ন তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে আইএমএআই। তাদের দাবি, ক্রিপ্টোকারেন্সি মূলত এক ধরনের 'পণ্য'। দু'পক্ষের বক্তব্যের পর ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারের ওপর রিজার্ভ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার নির্দেশ দিলেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের ওই বেঞ্চ। উলেস্নখ্য, ক্রিপ্টোকারেন্সি এক ধরনের সাংকেতিক মুদ্রা। যার কোনো বাস্তব রূপ নেই। এর অস্তিত শুধু ইন্টারনেট জগতেই আছে। এটি ব্যবহার করে লেনদেন শুধু অনলাইনেই সম্ভব। যার পুরো কার্যক্রম ক্রিপ্টগ্রাফি নামক একটি সুরক্ষিত প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়। ২০১৭ সাল থেকে এটি একটি উঠতি মার্কেটিংয়ে পরিণত হয়েছে। এই ডিজিটাল মুদ্রা কোনো দেশের সরকার বা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বারা তৈরি হয় না। জটিল কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ক্রিপ্টোগ্রাফির অ্যালগরিদম মেনে একে তৈরি করা হয়। বিটকয়েন হলো বিশ্বের সর্বাধিক মূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি। এই ডিজিটাল কারেন্সি তৈরি করা হয় ক্রিপ্টোগ্রাফির প্রযুক্তি মেনে। ক্রিপ্টোকারেন্সিতে তৃতীয় পক্ষের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তাই কে কার কাছে এই ডিজিটাল মুদ্রা বিনিময় করছে তা অন্য কেউ জানতে পারে না। আবার পরিচয় গোপন রেখেও এটা দিয়ে লেনদেন করা যায়। তবে এর এনক্রিপটেড লেজার সব লেনদেনকে ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া থেকে নিয়ন্ত্রণ করে। ক্রিপ্টোকারেন্সির ভ্যালুর ওপর কোনো দেশের সরকারেই হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা নেই। তাই পৃথিবীর অনেক দেশেই এ ডিজিটাল মুদ্রার ওপর সে দেশের সরকারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সাধারণভাবে আমরা যখন কারো কাছে টাকা পাঠাই, তখন ব্যাংকএর সাহায্য নিই। আবার যদি ব্যাংক খোলা না থাকে মোবাইল ব্যাংকিং (বিকাশ, রকেট, ইউক্যাশ) বা অনেক ক্ষেত্রে কুরিয়ার ও পোস্ট অফিসের মধ্যদিয়েও পাঠাই। এ প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য সার্ভিজ চার্জ আদায় করে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সিতে যেহেতু তৃতীয় পক্ষের কোনো প্রয়োজন হয় না। তাই এর কোনো বাড়তি চার্জও নেই। তবে সর্বনিম্ন চার্জ রয়েছে।