ব্যাংকগুলোতে সতর্কতা পালা করে কাজ

প্রকাশ | ২২ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বাংলাদেশ ব্যাংক ভবন -ফাইল ছবি
করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় দেশের ব্যাংকগুলোতে একধরনের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কর্মকর্তা ছাড়া প্রধান কার্যালয়গুলোতে অন্যদের প্রবেশকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। প্রধান কার্যালয় থেকে শুরু করে শাখাগুলোতেও নিরাপত্তামূলক নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষাসহ সব ধরনের অনুষ্ঠান। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলোতে লেনদেন অর্ধেকে নেমে এসেছে। তবে অনলাইন সেবায় চাপ বেড়েছে। এ জন্য ব্যাংকিং লেনদেনের সময় কমিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন ব্যাংকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা। বর্তমানে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হয়। জানা গেছে, জরুরি পরিস্থিতিতে কীভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া যায়, তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ব্যাংকগুলো। তারই অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলো কর্মীদের দুই ভাগে ভাগ করেছে। একটি দল অফিস করবে, আরেকটি দল ছুটিতে থাকবে অথবা বাসায় থেকে কাজ করবে। সাপ্তাহিক ভিত্তিতে তা পরিবর্তিত হবে। ইতোমধ্যে বেসরকারি খাতের ইস্টার্ন, ব্যাংক এশিয়া, দি সিটি, ব্র্যাক, এনআরবিসহ কয়েকটি ব্যাংক এ উদ্যোগ নিয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি, আইডিএলসি, লঙ্কাবাংলা একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ রোববার থেকে অন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানও একই পথে যাবে বলে জানা গেছে। এনআরবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মেহমুদ হোসেন বলেন, 'তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আরও অনেক ব্যাংক একইভাবে কর্মীদের নিরাপদ রাখতে ও সেবা চালিয়ে যেতে পরিকল্পনা করেছে। এদিকে ব্যাংকগুলোতে নগদ লেনদেন ও চেকের পরিমাণ কমে আসায় ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত করার দাবি উঠেছে। তবে ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা ছাড়া কার্যক্রম সীমিত করার সুযোগ নেই। সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন বলেন, 'তাদের ব্যাংকে জরুরি প্রয়োজনে যেসব কর্মী প্রয়োজন, শুধু তারাই অফিস করবেন। অন্যরা বাসায় বসে কাজ করবেন অথবা ছুটিতে থাকবেন। সামগ্রিক বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত কার্যক্রম সীমিত করে আনার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে রোববার সিদ্ধান্ত হবে। এদিকে, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া গ্রাহকদের ব্যাংক শাখায় না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। তার পরিবর্তে টাকা উত্তোলনের জন্য এটিএম বুথ ব্যবহার ও অন্যান্য সেবার জন্য অনলাইন পস্নাটফর্ম ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে এসব বার্তা দিয়ে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের এসএমএস পাঠানো শুরু করেছে। শনিবারও কয়েকটি ব্যাংক তাদের গ্রাহকদের এমন বার্তা দিয়ে এসএমএস করেছে। পাশাপাশি সব ব্যাংকই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে, করোনা প্রতিরোধ সম্পর্কে গ্রাহকদের সতর্ক করতে পদক্ষেপ নিয়েছে। নিজেদের ওয়েসাইট ও ফেসবুক পেজে এ সম্পর্কিত তথ্য দিয়েছে। ঢাকা ব্যাংক গ্রাহকদের বলেছে, 'করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আপনাদের দৈনন্দিন লেনদেন শাখা ব্যাংকিংয়ের বিকল্প হিসেবে এটিএম, পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস), ঢাকা ব্যাংক ইন্টারনেট ব্যাংকিং এবং মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে সম্পন্ন করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। সবাই সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন।' সিটি টাচ এটিএম ও সিটি টাচ অ্যাপসের মাধমে গ্রাহকদের সেবা নিতে বার্তা পাঠিয়েছে সিটি ব্যাংক। পাশাপাশি ব্যাংকটি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া প্রধান কার্যালয়ে আসতে গ্রাহকদের নিরুৎসাহিত করছে। প্রাইম ব্যাংক স্বাস্থ্যসতর্কতা ও সবার কল্যাণের জন্য গ্রাহকদের সেবার বিকল্প মাধ্যম ব্যবহার করতে বলেছে। ব্যাংকের লাইন পরিহার করে, কারও কাছে না গিয়ে ইন্টারনেট ব্যাংকিং ব্যবহার করে সহজেই ঘরে বসে সেবা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ব্যাংকটি। এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের চাপ কমে গেছে। ব্যাংকগুলোতে নগদ লেনদেন ও চেকের পরিমাণ কমে আসায় কার্যক্রম সীমিত করার দাবি উঠেছে। ব্যাংকগুলো বলছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা ছাড়া কার্যক্রম সীমিত করার সুযোগ নেই। বর্তমানে সকাল ১০টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ব্যাংকিং সেবা পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতি বিবেচনা করে আজ রোববার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।