রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার

বিএটিবির নাম বাদ দেওয়ার দাবি ভয়েসের

প্রকাশ | ২৩ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৮ প্রাপ্তদের তালিকা থেকে বহুজাতিক তামাক উৎপাদন ও বিপণন প্রতিষ্ঠান ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) নাম বাদ দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে, অধিকার-ভিত্তিক গবেষণা এবং অ্যাডভোকেসি ও তামাকবিরোধী সংস্থা ভয়েস। গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে প্রতিদিন ৩৪৫ জন মানুষ তামাক ব্যবহারের কারণে অকালে মারা যাচ্ছেন। আর বাংলাদেশের সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন ও সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তামাক প্রতিষ্ঠানকে এই পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করার সমালোচনা করে ভয়েস বলেছে, পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে রাষ্ট্র এই 'মৃতু্যবিপণনকে' উৎসাহিত করতে পারে না। ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, তারা এটিকে ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণার বিরোধিতা হিসেবে দেখছেন। শিল্প মন্ত্রণালয়কে পুরস্কারের তালিকাটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য এবং ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোকে সেই তালিকা থেকে সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেন। বিজ্ঞপ্তিতে আহমেদ স্বপন আরও উলেস্নখ করেন, সরকারের এই সংস্থাটিতে শেয়ার রয়েছে ৯ দশমকি ৮ শতাংশ। যে কারণে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারে না। বিএটিসহ তামাক সংস্থাগুলো গ্রাহকদের রোগ ও মৃতু্যর দিকে ধাবিত করছে। প্রায় দেড় মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করে এবং তামাকসেবনজনিত রোগে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৬০ হাজার মৃতু্যবরণ করে। এর মধ্যে পুরুষ ২৬ শতাংশ এবং নারী ১০ শতাংশ। তামাক সম্পর্কিত অসুস্থতার কারণে হারানো উৎপাদনশীলতা এবং সরাসরি স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় থেকে তামাক ব্যবহারের মোট অর্থনৈতিক ব্যয় হলো ১৫৮.৬ বিলিয়ন ডলার (অর্থাৎ বাংলাদেশের জিডিপির ১.৪%)। ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক বলেন, তামাকজনিত স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশ শীর্ষ ১৫টি দেশের মধ্যে অন্যতম। তামাকজাত দ্রব্যের বড় লক্ষ্য শিক্ষার্থী যাদের ৫২.৩% শিক্ষার্থী তিনি বলেন, যে সংস্থাটি (বিএটিবি) বাংলাদেশের উলেস্নখযোগ্য অর্থনৈতিক ক্ষতি ঘটানোর পাশাপাশি বড় ধরনের স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঘটাচ্ছে সে কোম্পানিকে পুরস্কার দেওয়া নীতি বিবর্জিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফটিটিসি) ৫.৩ অনুচ্ছেদ উলেস্নখ করে আহমেদ স্বপন বলেন, সরকার দায়বদ্ধ আর্টিকেল ৫.৩ বাস্তবায়নে, যেখানে স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য তামাকজাত পণ্য ও কোম্পানিগুলোকে আইন অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী একটি দেশ। উলেস্নখ্য, গত ১৫ মার্চ শিল্প মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, বাংলাদেশকে (বিএটিবি) শিল্প ক্যাটাগরিতে রাষ্ট্রপতির পুরস্কার হিসেবে ঘোষণা করেছে। দেশের শিল্প উন্নয়নে অবদানের জন্য ওই কোম্পানিকে পুরস্কারের তালিকায় প্রথম পুরস্কার প্রাপ্ত হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।