কার্গো পরিষেবায় ঝুঁকছে যাত্রীবাহী বিমান সংস্থাগুলো

প্রকাশ | ২৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বৈশ্বিক পর্যটন খাত। বিশেষ করে বিশ্বব্যাপী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও লকডাউনের জেরে বাতিল হয়ে গেছে অধিকাংশ যাত্রীবাহী বিমান পরিবহণ সংস্থার ফ্লাইট। এ অবস্থায় রাজস্ব ধরে রাখতে যাত্রীবাহী এয়ারলাইনগুলো পণ্য পরিবহনে কার্গো পরিষেবা দিতে চাইছে। খবর রয়টার্স। মার্কিন সিনেটে যুক্তরাষ্ট্রের এয়ারলাইনগুলোর জন্য ৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের সহায়তা বিল পাস হয়েছে। এ অবস্থায় ডেল্টা এয়ারলাইনস ও এয়ার নিউজিল্যান্ড জানিয়েছে, তারা রাজস্ব বৃদ্ধিতে কার্গো চার্টার পরিষেবা চালু করতে চায়। মূলত যাত্রীবাহী বিমান পরিবহন সংস্থা নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে দি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইএটিএ) জানায়, তারা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের ১৮ দেশের সরকারের কাছে জরুরি সহায়তার জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছে। এসব দেশের মধ্যে অন্যতম হলো ভারত, জাপান, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইন। আইএটিএর ডিরেক্টর জেনারেল আলেক্সান্ডার ডি জুনিয়াক এক বিবৃতিতে বলেন, বিশ্বজুড়ে নিষেধাজ্ঞায় ভ্রমণ চাহিদা উধাও হয়ে গেছে। কার্গো পরিষেবা ছাড়া যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের ব্যবসা নেই বললেই চলে। সত্যি বলতে, বর্তমানে এয়ারলাইনগুলো অকল্পনীয় বিপর্যয়কালের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আইএটিএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, কোভিড-১৯-এর কারণে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ২০২০ সালে যাত্রীবাহী পরিবহন সংস্থাগুলোয় যাত্রী চাহিদা গত বছরের চেয়ে ৩৭ শতাংশ কমবে। ফলে রাজস্ব হারাতে হবে ৮ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের। এ অঞ্চলের মধ্যে সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশে এয়ারলাইনগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু এ প্রণোদনা ঘোষণার পরও সংস্থাগুলো তাদের কর্মীদের ছুটিতে পাঠানো কিংবা উড়োজাহাজ গ্রাউন্ডিং করা থেকে বিরত থাকতে পারেনি। যেমন ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া তাদের এক হাজারের বেশি কর্মীকে স্থায়ীভাবে ছাঁটাই করেছে। এছাড়া তাদের আট হাজার কর্মীর বাকিদের বসিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েছে। এ অবস্থায় রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্তত কিছু উড়োজাহাজের কার্যক্রম সচল রাখতে ডেল্টা ও এয়ার নিউজিল্যান্ড কার্গো পরিষেবা দেওয়ার ঘোষণা দেয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কার্গো পরিষেবায় যুক্ত হওয়া যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের সংখ্যা বাড়ছেই। হাওয়াইয়ান এয়ারলাইনস জানিয়েছে, তারা টার্বোপ্রপ ফ্লাইটের মাধ্যমে আরো কার্গো পরিষেবা যুক্ত করেছে। এয়ার নিউজিল্যান্ডের কার্গোর জেনারেল ম্যানেজার রিক নেলসন বলেন, আমরা কার্গো পরিবহণের মাধ্যমে বৈশ্বিকভাবে বেশ ভালো মুনাফা অর্জন করছি। বিশেষ করে সাংহাই, হংকং, সানফ্রান্সিসকো, লস অ্যাঞ্জেলেস, সিডনি ও মেলবোর্নে ক্রেতাদের কাছে পণ্য সরবরাহে ভালো আয় হচ্ছে। তাছাড়া বিশ্বের প্রায় অর্ধেক এয়ার কার্গো সাধারণত যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের মাধ্যমেই পরিবহণ করা হয়। কিন্তু যাত্রীবাহী ফ্লাইট বাতিল হয়ে যাওয়ার কারণে কার্গো পরিবহণও ব্যাপক হারে কমে গেছে। এ অবস্থায় অলস বসে থাকা এয়ারলাইনগুলো কার্গো পরিষেবার মাধ্যমে ভালো আয়ের পথ খুঁজে পেতে পারে।