শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
৫ হাজার কোটি টাকা

করোনা তহবিল থেকে শ্রমিকদের ৩ মাসের বেতন-ভাতা

যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানি খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৫ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের বিষয়ে কিছু গাইডলাইন দিয়ে নীতিমালা প্রস্তুত করতে বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হয়েছে।

উৎপাদিত পণ্যের অন্তত ৮০ শতাংশ রপ্তানি হয় এসব প্রতিষ্ঠান এ তহবিল থেকে অর্থ নেওয়ার যোগ্য হবে। পাশাপাশি সংকট চলাকালীন সময় তথা এপ্রিল, মে ও জুন এ তিন মাসের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা এ তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমন কিছু গাইডলাইন দেয়া হয়েছে।

এসব গাইডলাইন দিয়ে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে তহবিল থেকে শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা পাঠানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে সরকার। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, মালিকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকগুলো তহবিল থেকে ২ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে। এই ঋণ নেওয়ার পর প্রথম ছয় মাস কিস্তি দিতে হবে না, যা গ্রেস পিরিয়ড নামে পরিচিত। ঋণ নেওয়ার দুই বছরের মধ্যে তা পরিশোধ করতে হবে।

যেসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য অন্তত ৮০ শতাংশ রপ্তানি হয় তারাই এ তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবে। বাজেট থেকে টাকা না দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ৫ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইসু্য করবে অর্থ মন্ত্রণালয়। তার বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ রপ্তানিকারকদের ঋণ দেবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে গত সোমবার অনুষ্ঠিত এক আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত তহবিল গঠনের সবকিছু চূড়ান্ত করেও সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি করেনি অর্থ মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশেই আজ মঙ্গলবারও প্রজ্ঞাপন জারি না করে আরও যাচাই-বাছাই করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠিয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংককেই নীতিমালা করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের যুগ্ম সচিব সিরাজুন নূর চৌধুরী বলেন, 'আমরা কিছু গাইডলাইন দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে একটা নির্দেশনা দিয়েছি। ওরা এ গাইডলাইনের আলোকে বিস্তারিত পর্যালোচনা করে একটা নীতিমালা করবে।'

অর্থ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংকের নামে ৫ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইসু্য করবে। তার বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন করবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালার আলোকে দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে ক্ষতিগ্রস্ত রপ্তানিকারকরা এই তহবিল থেকে ঋণের জন্য আবেদন করবেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প মালিকদের নামে ঋণ হিসেবে তহবিল থেকে অর্থ দেওয়া হবে। এই ঋণের মেয়াদ হবে দুই বছর। এর মধ্যে ছয় মাস গ্রেস পিরিয়ড থাকবে। সরকার কোনো ধরনের সুদ নেবে না। যে ২ শতাংশ সুদ শিল্প মালিকদের কাছ থেকে নেওয়া হবে, তা ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক সার্ভিজ চার্জ হিসেবে নেবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানো গাইডলাইনে আরও বলা হয় যে, যেসব প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্য অন্তত ৮০ শতাংশ রপ্তানি হয় তারাই এ তহবিল থেকে অর্থ নিতে পারবে। সংকটকালীন সময় তথা এপ্রিল, মে ও জুন এ তিন মাসের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা তহবিল থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান রপ্তানির সাথে যুক্ত নয় তারা এ তহবিল থেকে ঋণ নেয়ার জন্য যোগ্য হবে না।

গত ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার বিশেষ তহবিলের ঘোষণা দেন।

প্রধানমন্ত্রী এ তহবিল গঠনের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি রুবানা হক বলেন, পোশাক খাতে এক মাসে বেতন দিতেই দরকার হয় ৪ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে পোশাক তৈরিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণের জোগানদাতা এক্সেসরিজ শিল্পমালিকরাও এ তহবিল থেকে সহায়তা চেয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94960 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1