করোনার প্রভাব

চামড়া বিনিয়োগকারীরা হারালেন আড়াইশ কোটি টাকা

প্রকাশ | ০৫ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনাভাইরাস আতঙ্কে মার্চজুড়ে একের পর এক ধসের ঘটনা ঘটেছে দেশের শেয়ারবাজারে। ফলে তালিকাভুক্ত প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। এতে মোটা অঙ্কের লোকসানে পড়েছেন বিনিয়োগকারীরা। মার্চের দরপতনে শুধু চামড়া খাত থেকেই আড়াইশ কোটি টাকারে ওপরে হারিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। চামড়া খাতের ছয়টি কোম্পানি শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত। মার্চ মাসে এ খাতের সবকটি কোম্পানিরই শেয়ারের দরপতন হয়েছে। সম্মিলিতভাবে এই কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম কমেছে ২৫৭ কোটি ৫৯ লাখ দুই হাজার টাকা। বাজারবিশ্লেষকরা বলছেন, করোনার প্রভাবে বিশ্বের সব শেয়ারবাজারেই টালমাটাল অবস্থা। দেশের শেয়ার বাজারেও এর ব্যতিক্রম নয়। শুধু করোনাভাইরাস আতঙ্কে সরকারের পক্ষ থেকে নানা সুবিধা দেওয়ার পরও শেয়ার বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। আর বিএসইসি যদি নতুন সার্কিট ব্রেকার না আনত তাহলে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি কয়েকগুণ বেড়ে যেত। দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। প্রথমে এ ছুটি ৪ এপ্রিল পর্যন্ত করা হলেও পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়েছে। সরকারের এ সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর থেকেই শেয়ারবাজারে লেনদন বন্ধ রয়েছে। সে হিসাবে মার্চ মাসে লেনদেন হয় ২৫ তারিখ পর্যন্ত। তথ্য পর্যালোচনা দেখা যায়, চামড়া খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে মার্চে সব থেকে বেশি লোকসান হয়েছে বাটা সু'র। মার্চজুড়ে কোম্পানিটি প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৬৭ টাকা ৭০ পয়সা। এতে প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারহোল্ডারদের সম্মেলিতভাবে লোকসান হয়েছে ৯২ কোটি ৬১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এরপরেই রয়েছে ফরচুন সুজ। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম কমার কারণে শেয়ারহোল্ডাররা হারিয়েছেন ৯১ কোটি ৪০ লাখ ৩১ হাজার টাকা। মার্চে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ছয় টাকা ২০ পয়সা। সম্মিলিতভাবে শেয়ারহোল্ডারদের ৩২ কোটি ৫০ লাখ ৮০ টাকা লোকসানের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানটি দখল করেছে সমতা লেদার। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিটি শেয়ারের দাম কমেছে ৩১ টাকা ৫০ পয়সা। বাকি তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অ্যাপেক্স ফুটওয়্যারের ২১ কোটি ৪৮ লাখ ৭৫ হাজার, অ্যাপেক্স ট্যানারির ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ২৪ হাজার এবং লিগাসি ফুটওয়্যারের চার কোটি ১৮ লাখ ৫৫ হাজার টাকা হারিয়েছেন শেয়ারহোল্ডাররা। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাস গত ডিসেম্বরে প্রথম চীনে দেখা দেয়। ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে ১০ লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণ দিয়েছেন ৫৩ হাজারের ওপরে। বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় গত ৮ মার্চ। এরপর থেকে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শুক্রবার পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬১ জন। প্রাণ হারিয়েছেন ছয়জন। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বিশ্বে শেয়ার বাজার ফেব্রম্নয়ারি মাস থেকেই নেতিবাচক প্রবণতা শুরু হয়। তবে বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে করোনার আঘাত আসে মার্চে। দেশের ভেতর প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর দফায় দফায় ধস ঘটে শেয়ার বাজারে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ রূপ নেয় যে, লেনদেনের সময় কমানোর সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। তাতেও কোনো কাজ না হওয়ায় পতনের লাগাম টানতে সার্কিট ব্রেকারের নিয়মে পরিবর্তন করে শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এতে একটি নির্দিষ্ট দামের নিচে নামতে পারছে না কোনো কোম্পানির শেয়ার দাম।