বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলের শেয়ারে নেই সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা

প্রকাশ | ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি লিমিটেডের শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা সম্মেলিতভাবে হারিয়েছেন সাড়ে চারশ কোটি টাকার ওপরে। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দাম কমার ফলে বিনিয়োগকারীরা এ ক্ষতিতে পড়েছেন। গত ডিসেম্বরে চীনে প্রথম করোনা ভাইরাস আঘাত হানে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারি করোনাভাইরাসে ইতিমধ্যে সাড়ে ৮৩ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১৪ লাখের বেশি। বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয় মার্চের ৮ তারিখে। প্রথম দিন তিনজনের করোনা ধরা পড়লেও পর্যাক্রমে তা বেড়ে এখন ২১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। বুধবার (৮ এপ্রিল) পর্যন্ত প্রাণ গেছে ২০ জনের। মার্চের ৮ তারিখে বাংলাদেশ প্রথম করোনা শনাক্ত হওয়ার আগেই বিশ্ব শেয়ার বাজারের পাশাপাশি দেশের শেয়ার বাজারেও নেতিবাচক প্রবণতা শুরু হয়। কমতে থাকে একর পর এক প্রতিষ্ঠানের দাম। আর ৮ মার্চের পর দফায় দফায় শেয়ার বাজারে ধসের ঘটনা ঘটে। তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলের শেয়ার দাম কমা শুরু করে ফেব্রম্নয়ারির ১৬ তারিখের পর থেকে। ১৬ ফেব্রম্নয়ারি টেলিযোগাযোগ খাতের এই কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১০৭ টাকা ৬০ পয়সা, যা টানা কমে শেয়ারবাজারের লেনদেন বন্ধ হওয়ার আগে ২৫ মার্চ দাঁড়ায় ৭৯ টাকা ৬০ পয়সা। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারের দাম কমে ২৮ টাকা। এতে সম্মিলিতভাবে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম কমেছে ৪৬১ কোটি ৭৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা। শেয়ারের দামে এমন পতন হলেও চলমান হিসাব বছরে কোম্পানিটি ভালো মুনাফায় রয়েছে। ২০১৯-২০ হিসাব বছরের প্রথম ছয় মাসের (২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর) ব্যবসায় কোম্পানিটি ৩৭ কোটি ২২ লাখ ৩০ হাজার টাকা মুনাফা করেছে। এতে প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে মুনাফা হয়েছে দুই টাকা ২৬ পয়সা। ২০১৮-১৯ হিসাব বছরে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারহোল্ডারদের ১৬ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছিল। হিসাব বছরটিতে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় তিন টাকা ৫৫ পয়সা। ২০১২ সালে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের সব থেকে কম লভ্যাংশ দেয় ২০১৭-১৮ হিসাব বছরে। বছরটিতে মাত্র ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন শেয়ারহোল্ডাররা। এই হিসাব বছরে শেয়ার প্রতি মুনাফা হয় মাত্র ৪৪ পয়সা। এছাড়া আর কখনো এই কোম্পানিটি ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেয়নি। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক সদস্য বলেন, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত একটি ভালো মানের সরকারি প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটির গ্রোথ ভালো, শেয়ারহোল্ডাররা ভালো রিটার্ন পাচ্ছেন। কিন্তু করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে পড়ে পুঁজিবাজারে ভালো-মন্দ সব কোম্পানির নাজেহাল অবস্থা। বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কে লোকসানে অনেক শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে একের পর এক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়েছে। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলও তার মধ্যে পড়ে গেছে। ১৬৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবলের মোট শেয়ার সংখ্যা ১৬ কোটি ৪৯ লাখ পাঁচ হাজার ৫১০টি।