লকডাউনের প্রভাব

ইউরোপে সাময়িক ছুটিতে যাচ্ছেন ৪ কোটি কর্মী

প্রকাশ | ০৮ মে ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
নভেল করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপে কারখানা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এতে কর্মহীন হয়ে পড়া কর্মীদের জন্য বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করছে ইউরোপীয় সরকারগুলো। অঞ্চলটির বৃহত্তম অর্থনীতিগুলোর উপাত্ত থেকে দেখা গেছে শাটডাউনের সময় চার কোটিরও বেশি কর্মীকে সাময়িক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, যারা সরকারের কাছ থেকে বেতনের অল্প অংশ পাচ্ছেন। সরকারি সহায়তা ছাড়া অধিকাংশই তাদের চাকরি হারাতে পারেন, যাতে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেকারত্ব হার সর্বোচ্চে পৌঁছবে। খবর : বস্নুমবার্গ বস্নুমবার্গ ইকোনমিকসের অনুমান, যদি ঝুঁকিতে থাকা সব শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন, তবে ইউরো অঞ্চলের চার বৃহত্তম অর্থনীতি জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, স্পেনের বেকারত্বের হার লকডাউনের চূড়ান্ত পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৪২ শতাংশে পর্যন্ত দাঁড়াতে পারে। এটি ইউরো অঞ্চলের অর্থনীতির জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা দেবে। যেখানে বৈশ্বিক আর্থিক সংকট ও অঞ্চলের সার্বভৌম ঋণ সংকট- এ দুই বিপর্যয় থেকে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল অঞ্চলটির শ্রমবাজার। এর পুনরাবৃত্তি রোধ করতে সরকারগুলো এগিয়ে এসেছে। মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে অঞ্চলটির বৃহত্তম অর্থনীতিগুলো সাময়িক ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের জন্য ১০ হাজার কোটি ইউরো বা ১১ হাজার কোটি ডলারের প্যাকেজ গ্রহণ করেছে। কর্মসংস্থান পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রে আরও নাজুক। আগামী শুক্রবার প্রকাশিত উপাত্তে এপ্রিলের কর্মসংস্থান পরিস্থিতি উঠে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ১০ লাখ বেকারত্ব বরণ করেছে, যা আর্থিক সংকটের সবচেয়ে খারাপ মাসের চেয়ে ২৬ গুণ বেশি। তবে ইউরোপের শ্রমবাজারও এ ধাক্কা থেকে রেহাই পায়নি। জার্মানিতে গত মাসে বেকারত্ব বরণ করেছেন ৩ লাখ ৭৩ হাজার জন। নভেল করোনাভাইরাসে ইউরোপের সবচেয়ে বেশি আক্রান্তের দেশ স্পেন শিগগিরই তাদের বেকারত্ব উপাত্ত প্রকাশ করতে যাচ্ছে। গত মাসে ম্যাককিনসির প্রাক্কলন ছিল, খুবই আশাবাদী দৃশ্যেও ইইউ২৭-এর বেকারত্ব হার ফেব্রম্নয়ারির ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৭ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াবে। আরও উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে যদি সামাজিক দূরত্ব ও কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা গ্রীষ্মকালে চলতে থাকে তাহলে বেকারত্বের হার ১১ শতাংশ ছাড়াবে এবং তা ২০১৯-এর মাত্রায় আসতে ২০২৪ সাল নাগাদ চলে যাবে। চলাচলে বিধিনিষেধ উঠিয়ে, স্কুলগুলো চালু করে এবং শর্তসাপেক্ষে রেস্টুরেন্টগুলো খুলে সরকারগুলো স্বাভাবিকতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে তারা যে পথে এগোচ্ছে, এটা খুব ধীর প্রক্রিয়ার এবং অনেক ব্যবসা কয়েক মাসের মধ্যে পুরোপুরি সক্ষমতায় চালু হতে পারছে না। তার মানে দাঁড়াচ্ছে কর্মসংস্থান ঝুঁকিতেই থাকবে এবং কিছু কিছু কাজ-চাকরি হয়তো একেবারেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। লন্ডনে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের মুখ্য প্রধান অর্থনীতিবিদ সারা হেইভিন বস্নুমবার্গ টেলিভিশনকে বলেন, বেকারত্ব হার এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যা মহামন্দার সময়েও দেখা যায়নি। লকডাউন শেষ হলে বেকারত্ব হার কমতে শুরু করবে। তবে আরও কিছু সময় বেকারত্ব হার অধিক থাকার সম্ভাবনাই বেশি।