আধুনিকায়ন হচ্ছে জাহাজমারা পর্যটন এলাকার
প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২২, ১৮:৪৩
দক্ষিণ বাংলার নদী ও সমুদ্রবেষ্টিত এক উপজেলার নাম রাঙ্গাবালী। এ উপজেলার পশ্চিমে আগুনমুখা নদী ও পায়রা বন্দর আর পূর্বদিকে রয়েছে রাবনাবাদ চ্যানেল। সমগ্র দক্ষিণ দিকজুড়ে আছে বঙ্গোপসাগরের বিশাল জলরাশি আর অপার সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ কয়েকটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। রাঙ্গাবালী উপজেলার দক্ষিণে অবস্থিত সোনার চর, চর তুফানিয়া, জাহাজমারা চর, আশাবাড়িয়া, মায়ার চর যেন স্রষ্টার নিজ হাতে গড়া স্বর্গীয় সৌন্দর্যের লীলাভূমি। দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকলেও বিদ্যুৎ সরবরাহ ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে এ অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। শুরু হয়েছে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াও।
রাঙ্গাবালী উপজেলার সর্ব দক্ষিণে মৌডুবী ইউনিয়নে অবস্থিত জাহাজমারা সমুদ্রসৈকত। একদিকে সবুজ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আর অন্যদিকে সুদীর্ঘ বেলাভূমি। অজস্র ঝিনুক আর লাল কাঁকড়ার অবাধ বিচরণ এ বেলাভূমিতে। ভোরে সাগরের পানি রক্তবর্ণ করে সূর্য ওঠে এখানে। সূর্যাস্ততেও মেলে অপরূপ সৌন্দর্যের হাতছানি। মনে হয় যেন সুদীর্ঘ বেলাভূমিতে আছড়ে পড়া ঢেউদের বিদায় জানিয়ে সমুদ্রের পানিতে ডুবে যায় এক টুকরো লাল সূর্য।
যোগাযোগব্যবস্থার অসুবিধা থাকায় ইতিপূর্বে এ অঞ্চলে পর্যটকদের আগমন কম হলেও এখন বাড়তে শুরু করেছে। যাতায়াত ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। এখন কক্সবাজার ও কুয়াকাটার মতোই মাত্র ১০ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে যাওয়া যায় এ সমুদ্রসৈকতে। ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চযোগে সরাসরি বড়বাইশদিয়া ঘাট। সেখান থেকে মোটরবাইকে যাওয়া যায় জাহাজমারা সমুদ্রসৈকতে। আছে বিদ্যুৎ সুবিধা। রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। যাত্রী ছাউনি, বসার স্থানের পাশাপাশি বহিরাগত পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে কটেজ। নামমাত্র খরচে এসব কটেজে নিরাপদে থাকতে পারবেন দেশি-বিদেশি পর্যটকগণ। স্থানীয় মৌডুবী ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এ পর্যটন কেন্দ্রের ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে বলে জানা যায়।
মৌডুবী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদ হাসান রাসেল জানান, ‘জাহাজমারা সমুদ্রসৈকতকে আধুনিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা আমার স্বপ্ন। এটা আমার নির্বাচনী ইশতেহারেরও অংশ। এ পর্যটন কেন্দ্রে অত্র এলাকার শত শত মানুুষের কর্মসংস্থান হবে। আমরা দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তাসহ থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা করছি। চলতি মাসের মধ্যেই পর্যটন এলাকায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত আবাসিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।’ এছাড়াও পর্যটন এলাকায় যাতায়াতের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যের সুপারিশক্রমে অভ্যন্তরীণ পাকা রাস্তার কাজ দ্রুত সম্পন্ন হবে বলেও তিনি জানান।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মো. মহিব্বুর রহমান (পটুয়াখালী-৪) জানান, ‘আমার নির্বাচনী ইশতেহারে জাহাজমারা সমুদ্রসৈকতের আধুনিকায়ন করার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। পার্শ্ববর্তী সোনারচর, তুফানিয়াসহ নৌরুট উন্নয়নসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি।’
যাযাদি/এস