শান্তির নগরী দিনাজপুর ও পঞ্চগড় ভ্রমন

প্রকাশ | ৩১ আগস্ট ২০২২, ১৮:০০ | আপডেট: ৩১ আগস্ট ২০২২, ১৮:০২

সাংবাদিক মোঃ বায়েজীদ হোসেন

গাজীপুর সাংবাদিক পরিবার কল্যাণ পরিষদের সাধারন সম্পাদক মোঃ বায়েজীদ হোসেন (যায়যায়দিন), সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মনসুর আহমেদ (আলোকিত সময়), সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শফিকুল ইসলাম (মর্নিং গ্লোরী), অলিদুর রহমান অলি (নওরোজ), বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক গাজীপুর মুখ্য আঞ্চলিক কার্যালয়ের উর্ধ্বতন মুখ্য কর্মকর্তা মোঃ হাবিব উল্লাহ খান ও মুখ্য কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামান। ভ্রমনে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখতে সহযোগীতা করেন, পঞ্চগড় জেলার দৈনিক নওরোজ’র জেলা প্রতিনিধি মোঃ সাব্বির হোসেন, বোদা (পঞ্চগড়) উপজেলার নওরোজ প্রতিনিধি নুরনবী, দৈনিক ইনকিলাবের রিয়াজ উদ্দিন মানিক, তেতুলিয়া উপজেলার হাবিবুর রহমান হাবিব মাষ্টার, দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি বাবু আহমেদ (বাব্বা), বিরল উপজেলা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি আতিউর রহমান।

১৬ আগস্ট মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ ভ্রমনের উদ্দেশ্যে রাত ৮টায় জয়দেবপুর থেকে দ্রæতযান এক্সপ্রেস গাড়িটি পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ঐদিন ৪ঘন্টা দেরিতে গাড়িটি কমলাপুর ষ্টেশনে পৌচেছেন। মনসুর আহমেদ রাত ৮টায় কমলাপুর ও হাবিব উল্লাহ ৮টা ৩০মিনিটে বিমানবন্দর অবস্থান করেন গাড়িতে উঠার জন্য, কিন্তু গাড়ি আসতে দেরি হওয়াতে মনসুর ও হাবিব উল্লাহ দুজনেই অন্য গাড়িতে জয়দেবপুর ষ্টেশনে চলে আসেন। আমরা ৪জন যথাক্রমে মোঃ বায়েজীদ হোসেন, মোঃ শফিকুল ইসলাম, মোঃ আক্তারুজ্জামান ও অলিদুর রহমান অলি জয়দেবপুর রেল ষ্টেশনে আবুল কাশেম (বিয়াই) এর দোকানে বসে কিছুক্ষন পর পর চায়ের কাপে চুমুক দিতে থাকি। রাত ১১টার দিকে আমরা ৬জন একসাথে ষ্টেশনের একটি হোটেলে রাত্রের খাবার গ্রহণ করি। রাত ১২টায় আমাদের অপেক্ষার পালা শেষ হয়। দ্রুতযান ট্রেনটি জয়দেবপুর ষ্টেশনে এস থামলে আমরা গাড়িতে উঠে যার যার সিটে বসে পড়ি। রাত ১২টা ৬মিনিটে গাড়িটি পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে জয়দেবপুর ছেড়ে যায়। গাড়ি ছাড়ার পর আমাদের মধ্যে গল্প শুরু হয়। গল্প করতে করতে রাত ফুড়িয়ে ভোর। সকলের ঘুমে ভরা চোখ। অবশেষে ১৭ আগস্ট বুধবার সকালের সূর্য উদয় দেখি গাড়িতে বসে। তারপর দুপুর ১টায় গাড়ি পৌছে যায় পঞ্চগড় বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম ষ্টেশনে। ষ্টেশনে আগে থেকেই নোহা গাড়ি নিয়ে অপেক্ষা করছিল স্থানীয় সাংবাদিক নুরনবী ও রিয়াজ উদ্দিন মানিক। ষ্টেশনে নেমে তাদের আতিথিয়েতায় মুগ্ধ হই আমরা। সেখানে আমাদেরকে স্থানীয় গরুর দুধের চা ও আইসক্রিম আপ্পায়ন করা হয়। সেখান থেকে আমাদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় তেতুলিয়া অবস্থিত কাজী এন্ড কাজী টী এষ্টেটে। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকেন সাংবাদিক হাবিবুর রহমান হাবিব মাষ্টার। তখন দুপুর গরিয়ে প্রায় বিকেল সকলের পেটে প্রচন্ড ক্ষুদা। দুপুরের খাবারের আয়োজন করেন সাংবাদিক হাবিবুর রহমানের নিজ গৃহে। দুপুরের খাবার শেষে স্থানীয় তিন সাংবাদিককে সাথে নিয়ে যাওয়া হয় তেতুলিয়ার বাংলাবান্দা সিমান্তের জিরো পয়েন্টে। বিকলে ৫টায় মন মুগ্ধকর দুই দেশের পতাকা নামানোর দৃশ্য সকলের মনে আনন্দের দোলা দেয়। সেখান থেকে আমরা চলে যাই কাঞ্চন জংগা দেখার উদ্দেশ্যে তেতুলিয়া উপজেলা পরিষদের ডাক বাংলায় সেখানে পূর্ব থেকেই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন স্থানীয় শিল্পীগোষ্টি। তাদের মনমুগ্ধকর সংগীতে কিছু সময়ের জন্য আমরা হারিয়ে যাই বিনোদন জগতে। সন্ধ্যার পর আমরা চলে যাই ২১শে স্মৃতি পাঠাগারে সেখানে কবিতার আড্ডা শেষে রাতের খাবারের জন্য নিয়ে যান সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন মানিকের নিজ গৃহে। রাত ১০টায় বোদা উপজেলার কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদ কমিউনিটি মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রের গেস্ট হাউজে রাত্রি যাপন, সে এক অন্য রকম অনুভূতি। পরদিন ১৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকালে নাস্তা করে, স্থানীয় যান ভ্যান গাড়িতে চড়ে রাস্তার দু-পাশের গ্রামীন দৃশ্য দেখতে দেখতে চলে যাই বোদা পাইলট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের বঙ্গবন্ধু কর্ণার পরিদর্শনে। সেখানে কিছুক্ষন সময় কাটিয়ে ফের আমাদের যাত্রা শান্তির নগরী দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে, বোদা বাস স্ট্যান্ডে ৬টি টিকেট কেটে চলে আসি দিনাজপুর শহরে। সেখান কার স্থানীয় সাংবাদিক বাবু আহমেদ (বাব্বা) আমাদের গ্রহন করে নিয়ে যান পল্লী শ্রী গেস্ট হাউজে। দুপুরের খাবার খেয়ে রওনা হই দিনাজপুর জেলার কাহারোলে অবস্থিত কান্তজিউ মন্দির পরিদর্শনে। সেখানে স্থানীয় কালাই রুটি, বেগুন ভর্তা, পাপড়ের স্বাদ গ্রহন। সন্ধ্যায় চলে আসি দিনাজপুর শহরে রাত্রি যাপনের উদ্দেশ্যে।   

পরদিন শক্রবার ১৯ আগস্ট সকাল ১০টায় নাস্তা সেরে চলে যাই দিনাজপুরের ঐতিহ্য রামসাগর পরিদর্শনে। মনমুগ্ধকর চোখ জুরানো দৃশ্য দেখে সকলেই তৃপ্তি পাই। দুপুরে স্বাদ জাগে সকলেই স্থানীয় হোটেলে কাচ্ছি বিরানি খেয়ে রওনা হই বিরল উপজেলার সাংবাদিক আতিউর রহমানকে সাথে নিয়ে বিরল স্থল বন্দর, বিরল প্রেসক্লাব, লিচু বাগান, আম বাগান হয়ে চঞ্চল রিসোর্ট পরিদর্শন করতে করতে সন্ধ্যা নেমে আসে। যথানিয়মে পূর্বের নেয় চলে আসি দিনাজপুর শহরের পল্লী শ্রী গেস্ট হাউজে। শেষ রাত শান্তির নগরী ক্ষ্যাত দিনাজপুরে কাটিয়ে শনিবার ২০ আগস্ট সকাল ১০টা ১০মিনিটে দিনাজপুর স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে চড়ে বসি দ্রুতযান এক্সপ্রেশে। দিনভর গাড়িতে বসে যমুনা নদি সহ বিভিন্ন মনমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে দেখতে সন্ধ্যা ৭টায় জয়দেবপুর স্টেশনে নেমে যার যার মত বাড়ি ফিরি। সমাপ্তি হয় আনন্দময় ভ্রমনের।  


যাযাদি/এসএস