কমলারাণীর দিঘীকে পর্যটন কেন্দ্র করতে বাঁধা মামলা

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০২৩, ১৪:১৩

বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

বানিয়াচং উপজেলায় ঐতিহাসিক কমলারাণীর দিঘীকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্র করা যাচ্ছে না একটি মামলার কারণে।

দিঘীপাড়ের বাসিন্দারা মামলার মাধ্যমে দিঘীটি দখল করে রাখতে চান; অন্যদিকে সেটি উদ্ধার করে পর্যটন কেন্দ্র বানাতে চায় সরকার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বানিয়াচংয়ের এক জনসভায় কমলারাণীর দিঘীকে পর্যটন কেন্দ্র করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০০০ সালে দিঘীর চারপাড়ের বাসিন্দাদের পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তি এনিয়ে আদালতে সত্ত্ব মামলা দায়ের করলে বিচারক বাদীপক্ষে রায় দেন। ২০০৬ সালে সরকারপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপীল করলে জেলা জজ আদালত সরকারপক্ষে রায় দেন।


পরে বাদীপক্ষ উচ্চ আদালতে রিভিশন দায়ের করে আলো, বাতাস ও পানি ব্যবহারের অনুমতি পায়। এরপর গত বছরের ২৬ জুলাই সরকারপক্ষ পুনরায় আপীল করলে দিঘীটি সরকার পক্ষ থেকে ইজারা দিতে কোন বাঁধা নেই বলে উচ্চ আদালত রায় দেন। এলাকাবাসী ফের রিভিও করলে সেটি এখন শুনানীর অপেক্ষায়।

এ বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ যায়যায়দিনকে বলেন, “কিছু লোক মামলা দেখিয়ে দিঘীটি দখল করে রাখতে চায়। উচ্চ আদালত যে কোন দিন এ বিষয়ে রায় দিবেন। সরকারপক্ষে রায় আসলে দিঘীটিকে ঘিরে দ্রুত পর্যটন কেন্দ্র বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।”

দ্বাদশ শতাব্দীর রাজা পদ্মনাভ এই দিঘীটি খনন করেছিলেন প্রজাদের পানির সমস্যা নিরসনের জন্য। পরবর্তীতে রাজা পদ্মনাভের স্ত্রী কমলাবতী এতে আত্মবিসর্জন দেন বলে উপখ্যান রয়েছে। এরপর থেকেই দিঘীটিকে কমলারাণীর দিঘী বলা হয়। দিঘীতে একাধিক চলচ্চিত্র ও নাটকের চিত্রধারণ হয়েছে।

কমলারাণীর দিঘীর পাড়ে বসে পল্লী কবি জসিম উদ্দিন ‘রাণী কমলাবতীর দিঘী’ নামে একটি কবিতা রচনা করেছিলেন। কবিতাটি তার ‘সূচয়নী’ কাব্যগ্রন্থে স্থান পায়।

এটি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম দিঘী বলেও এলাকায় প্রচারণা রয়েছে। বর্তমানে দিঘীটি ৬৬ একর জায়গায় বিস্তৃত এবং জলসীমা ৪০ একর। দেশ ও বিদেশের পর্যটকরা প্রতিদিন এ দিঘীটি দেখতে আসেন।


যাযাদি/ এস