বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সখীপুরে এক পাগলী মা হচ্ছে? কিন্তু বাবা কে?

সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
  ২৯ অক্টোবর ২০২০, ১৭:২২

সারা শহরে রটে গেছে পাগলী মা হচ্ছে। তবে তার সন্তানের বাবার পরিচয় কি? তা কেউ বলতে পারছে না।

জানাগেছে, সেই পাগলীর নাম তার সুভা। বয়স আনুমানিক ১৭ থেকে ২০ বছর। ছেড়া আর ময়লা কাপড়ে খাবারের খোঁজে উপজেলার বিভিন্ন হাঁট-বাজারে, গ্রাম-শহরে ঘুরে বেড়ায়। সবাই তাকে পাগলী বলে। সমাজ তাকে পরিচয় দিয়েছে পাগলী, কিন্তু পাগলীর সমাজ সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই, পাগলির বিয়েও হয়নি।

সে হয়তো জানে না কষ্ট, দুঃখ, ভালবাসা কী? সে জানে না বিয়ের মর্ম, জানে না স্বামীর সোহাগ, পরিবার ও সংসার। তবুও পাগলীটা এবার মা হচ্ছে। কিন্তু অনাগত ওই সন্তানের দায়িত্ব নেবেন কে?

টাঙ্গাইলের সখীপুর পৌর শহরে এক পাগলির গর্ভবতী হওয়া নিয়ে তোলপাড়। কে হবে শিশুর বাবা! কার লালসার শিকার এই পাগলী- এ আলোচনা এখন ‘টক অব দ্যা টাউন’। বুধবার সকাল থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন এ যুবতীর গর্ভবতী হওয়ার খবরটি ছড়িয়ে পড়েছে।

ইতোমধ্যে ওই পাগলির ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে দেশ-বিদেশে আলোচনা-সামলোচনার ঝড় চলছে। সকলেই ক্ষোভ আর ঘৃণা প্রকাশ করছেন।

সখীপুর পৌরশহরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেকদিন ধরেই শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান নাম-পরিচয়হীন ওই পাগলি যুবতী। যাকে সবাই ‘সুভা পাগলি’ নামেই ডাকে। কেউ কেউ ওই পাগলির বাড়ি উপজলার গড়বাড়ি, তৈলধারা আবার কেউ কুতুবপুর বলে দাবি করেছেন। তবে কেউ প্রকৃত ঠিকানা নিশ্চিত করতে পারেনি। শহরে যত্রতত্র তার চলাচল। যেখানে রাত সেখানেই (ঘুমিয়ে) পড়ে।

ধারণা করা হচ্ছে- রাতের আধারে কোনো লম্পটের লালসার শিকার হয়েছে মেয়েটি।

আর্ত ব্লাড ফাউন্ডেশনের সভাপতি বশির আহেমদ জানান, ইতোমধ্যে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পাগলির চিকিৎসা ভার গ্রহণে এবং এক সন্তানহীন দম্পতি পাগলির সন্তানকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে যে বা যারা মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর সঙ্গে এ অমানবিক কাজ করছে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় নেওয়ার দাবিও জানান তিনি।

এ বিষয়ে সখীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মুনসুর আহমেদ জানান, খোঁজ নিয়ে ওই নারীর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার চিত্রা শিকারী জানান, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নই। সমাজসেবা কর্মকর্তা ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ করে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমীর হোসেন জানান, মেয়েটিকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসকের হেফাজতে রাখা হয়েছে। বিপদমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত দেখভাল করা হবে। উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শাহীনুর আলম জানান, মেয়েটিকে আমাদের হেফাজতে ভর্তি রাখা হয়েছে। বিপদ মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত এখানেই থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে