ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাঞ্চল্যকর শওকত হত্যা মামলায় রায়

৫ জনের যাবজ্জীবন, তিন জনের ১বছরের কারাদণ্ড

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২০, ১৯:৪৩

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাঞ্চল্যকর শওকত আলী হত্যা মামলায় ৫ জনকে যাবজ্জীবন ও তিনজনকে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত। বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম এই রায় প্রদান করেন।

 

যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, জেলার সরাইল উপজেলার সৈয়দটুলার ফকিরপাড়া গ্রামের মোঃ শফিকুর রহমান খন্দকার-(শাফি), মোঃ মোর্শেদ খন্দকার, মোঃ সাহেদ আলম খন্দকার, আবদুল হাই ও মোবারক। এদের মধ্যে মোঃ মোর্শেদ খন্দকার ও মোবারক পলাতক রয়েছেন।

 

এক বছর করে সশ্রম দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, হেলিম মিয়া, আবুল বাদশা ও মামুন মিয়া। এদের মধ্য  আবুল বাদশা।

 

মামলা সূত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে গত ২০১৪ সালের ১৩ আগষ্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে সরাইল উপজেলা সদরের সৈয়দটুলা ফকিরপাড়ার বাসিন্দা শফিকুর রহমান খন্দকার এবং মোঃ মোর্শেদ খন্দকারের নেতৃত্বে একদল লোক সরাইল বিকাল বাজার এলাকায় দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সৈয়দটুলা জাহাঙ্গীরপাড়ার আবদুল বাতেন ও তার ছোট ভাই শওকত আলীর  উপর অতর্কিত হামলা করে।

 

এ সময় দৌড়ে আবদুল বাতেন প্রাণে রক্ষা পেলেও আসামীরা ধারালো অস্ত্র-দিয়ে  শওকত আলীকে গুরুতর আহত করে।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক  শওকত আলীকে মৃত ঘোষনা করেন।

 

ঘটনার পর দিন (১৪ আগষ্ট) রাতে নিহতের বড় ভাই  আবদুল বাতেন বাদী হয়ে শফিকুর রহমান খন্দকার এবং মোঃ মোর্শেদ খন্দকারসহ ৯ জনের নাম উলে­খ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

 

মামলার আসামীরা হলেন, শফিকুর রহমান খন্দকার-(৫০), মোঃ মোর্শেদ খন্দকার-(২৬), মোঃ সাহেদ আলম খন্দকার-(৩৫), আব্দুল হাই-(৪৫), মোবারক-(৩০), আবুল কাশেম-(৭০), হেলিম মিয়া- (৩০), আবুল বাদশা-(৫০) ও মামুন মিয়া-(২১)।

 

মামলা দায়েরের পর পুলিশ মামলার ৫ আসামী শফিকুর রহমান খন্দকার, মোঃ সাহেদ আলম খন্দকার, আব্দুল হাই, আবুল বাদশা ও মামুন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে।

 

পরে মামলার দীর্ঘ শুনানী শেষে সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিতে আজ বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ সফিউল আজম ৫ আসামীর যাবজ্জীবন এবং ৩ আসামীর ১ বছর করে কারাদন্ড প্রদান করেন।

 

রায় ঘোষনা কালে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী শফিকুর রহমান খন্দকার, মোঃ সাহেদ আলম খন্দকার, আব্দুল হাই ও ১ বছরের দন্ডপ্রাপ্ত আসামী আবুল বাদশা এবং  মামুন মিয়া সহ ৫ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকী চার আসামী পলাতক রয়েছেন।

 

এ ব্যাপারে মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বশির আহমেদ খান জানান, খুনের ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিলো।  সাক্ষ্য প্রমান থাকলেও যাবজ্জীবন রায় হয়েছে। এই রায়ে আমরা হতাশ। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

 

অপরদিকে আসামী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান বলেন, মাত্র চারজন স্বাক্ষীর মাধ্যমে এই মামলা প্রমানের চেষ্টা করা হয়েছে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

 

যাযাদি/এস/৭.২০