৪ ডিসেম্বর জীবননগর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা চুয়াডাঙা জেলার জীবননগর হানাদার মুক্ত হয়। এ দিন মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্র বাহিনীর তুমুল প্রতিরোধের মুখে পাক হানাদার বাহিনী এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর জীবননগর ছেড়ে পার্শ্ববর্তী জেলা ঝিনাইদহ অভিমুখে পালিয়ে যায়।
জীবননগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম সাত্তার জানান, ১৯৭১ সালের ২৬ নভেম্বর জীবননগরে পাক হানাদার বাহিনীর পতন ঘটলেও চূড়ান্ত বিজয় আসে ৪ ডিসেম্বর। এ দিন প্রত্যুষে ভারতীয় মিত্র বাহিনীর কমান্ডার মেজর দত্ত ও ৮ নং সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্র বাহিনী যৌথভাবে জীবননগরের ধোপাখালী সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করে জীবননগর, দত্তনগর, সন্তোষপুর ও হাসাদহ পাকবাহিনীর উপর অতর্কিতভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সন্মুখ যুদ্ধের।
এ যুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর ২৯ বেলুচ রেজিমেন্টের সৈন্যরা যৌথ বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়ে পার্শ্ববর্তী জেলা ঝিনাইদহের দিকে পালিয়ে যায়। এ সময় থানায় ফেলে যাওয়া পাক বাহিনীর ক্যাপ্টেন মুনছুর আলীর ব্যবহৃত জিপ গাড়িতে মুক্তিযোদ্ধারা আগুন ধরিয়ে দেয় এবং থানার মালখানা থেকে উদ্ধার করে ৭/৮ জন অজ্ঞাত নারীর লাশ। এ দিন স্বতঃস্ফূর্ত মুক্তিপাগল মুক্তিযোদ্ধারা জীবননগরের মাটিতে প্রথম উত্তোলন করে স্বাধীন বাংলার পতাকা। শুরু হয় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড।
মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রসুলকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও মজিবর রহমানকে থানা ইনচার্জ করে বে-সামরিক প্রশাসন ব্যবস্থা চালু করা হয়। সে দিনের সেই ৪ ডিসেম্বর জীবননগর মুক্ত দিবস হিসেবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ আজও এ দিনটি পালন করে আসছে।