শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নিয়ামতপুরে কৃষিজমিতে মাটি কাটার উৎসব!

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:০১

নিয়ামতপুরে উর্বর কৃষিজমির মাটি চড়া মূল্যে বিক্রি হয়ে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটায়। এতে করে চরম ক্ষতির সম্মূখীন হচ্ছেন ওই জমির পাশর্^বর্তী কৃষিজমি ও এর মালিকরা। এ নিয়ে উপজেলা প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ হলেও এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে মাটিকাটা উৎসব চলছে ভাবিচা ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায়। আর এর সাথে জড়িত রয়েছে এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি।

জানা যায়, কৌশলে চড়া মূল্যে সহজ-সরল কৃষকদের ভুলিয়ে চলছে এ মাটি কেনা-বেচার বানিজ্য। অভিযোগ রয়েছে, এ মাটি ব্যবসায়ী চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে ভাটার মালিকরাও। মূলত ভাটার মালিকরাই ইন্দোন যোগাচ্ছে মাটি ব্যবসায়ীদের নিরিহ কৃষকের নিকট থেকে মাটি কেনাতে। লোভে পড়ে কৃষকরাও বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করছেন ফসলি জমির উর্বর মাটি। এতে ওই জমি নিচু হয়ে ক্ষতি হচ্ছে পাশর্^বর্তী জমির। প্রতিদিন ভাবিচা ইউনিয়নের ভাতকুন্ড, সন্তোষ, কুমিরজোল, রাউতাড়া, ডিমাসহ বিভিন্ন মৌজায় সমতল কৃষি জমিতে চলছে এ মাটি কাটার উৎসব। এসকেভেটর মেশিনে মাটি কেটে ট্রাকে করে সেই মাটি চলে যাচ্ছে বিভিন্ন ইট ভাটায়।

বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনতে গত ২২ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর রাউতাড়া গ্রামের মৃত মিসুল্লার ছেলে আনিসুর, পরানপুরের মৃত নাজিম মাষ্টারের ছেলে কাউসার ও চকশিতা গ্রামের কামরুজ্জামানকে অভিযুক্ত করে একটি অভিযোগ দাখিল করেন এক ব্যক্তি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, আনিসুরের নেতৃত্বেই হচ্ছে এ কৃষি মাটি কেনা-বেচার বানিজ্য। তিনি বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে চালিয়ে যাচ্ছেন তার মাটির ব্যবসা। তার সাথে জড়িত রয়েছেন আরোও কয়েকজন। এদের দৌঁরাত্বে কিছু বলারও ক্ষমতা নেই কার। মাটি কাটায় জমি নিচু হয়ে চরম ক্ষতিতে পড়ছে অন্য ফসলী জমি ও জমির মালিকরা। অনুর্বর হয়ে পড়ছে আশ-পাশের জমি।

ফসলী জমির মাটি বিক্রিকারী কৃষক ভাতকুন্ড গ্রামের কারী ময়নুদ্দীন জানান, তিনি উচুঁ জমি সমান করার জন্য প্রায় এক বিঘা মাটি কেটে বাসের আলী খানের ইট ভাটায় দিয়েছেন। এতে করে তাকে কোন প্রকার মূল্য পরিশোধ করতে হয়নি। মাটির বিনিময়ে তিনি বিনামূল্যে কাজটি করে পেয়েছেন বলেন।

সংশ্লিষ্ট ভাবিচা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান ওবাইদুল হক জানান, একটি চক্র এ মাটি কেনার ব্যবসায় জড়িত। তাদের দৌঁরাত্ব ঠেঁকাতে প্রশানকেও অবহিত করা হয়েছে বিষয়টি। তারপরও তাদের মাটি কাটার উৎসব অপ্রতিরোধ্য গতিতে চলছে।

এ ঘটনায় ইউএনও জয়া মারীয়া পেরেরা জানান, বিষয়টি নিয়ে এমন একটি অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করে রির্পোট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে