শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

​ইলিশের আকালে জেলেদের দূর্দিন

বোরহানউদ্দিন (ভোলা) প্রতিনিধি
  ০৫ ডিসেম্বর ২০২০, ১৪:৪৪

মাথার উপর মহাজনের দাদনের টাকার জাল তার উপর নদীতে ইলিশের আকাল। ভায়াবহ দূর্দিন যাচ্ছে বোরহানউদ্দিন উপজেলার কয়েক হাজার জেলে পরিবারের। মেঘনা তীরবর্তী জেলেরা জানালেন, তাদের পরিবারের জন্য তিন বেলা খাবার যোগার করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। তার উপর আছে দেনার বোঝা। তারা আরো জানালেন, দুই মাস জাটকা সংরক্ষণ, বাইশ দিন মা ইলিশ রক্ষা সহ সব ক’টি আইন তারা মেনে চলেছেন। যেখানে মাছ বেশী পড়ার কথা সেখানে মাছের দেখাই নেই।

মেঘনায় ইলিশ শিকারে যাওয়া হাফেজ মাঝি, জসিম মাঝি, বশির মাঝি, মাহাবুব মাঝি সহ আরো অনেকে জানান, একবার নদীতে জাল ফেলতে গেলে তাদের নিজস্ব খরচ ছাড়া কমপক্ষে দুই হাজার টাকা খরচ আছে। কিন্তু হাজার খানেক টাকারও মাছ মেলেনা। আশায় ভর করে তার পরদিন গিয়েও একই অবস্থা। তারা অন্য কাজও জানেননা। ওই জেলেরা আরো জানান, তাদের প্রত্যেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে মহাজন থেকে দাদন নেয়া। মহাজনকে শতকরা ১০ টাকা করে মাছ বিক্রির টাকা থেকে দিতে হয়। এছাড়া প্রতি বিশ হালি মাছ পেলে এক হালি করে মাছ দিতে হয়। বছর শেষে মূল টাকা ফেরত দিতে হয়।

জেলে আরিফ, মো. ফরিদ, মাইনউদ্দিন জানান, বরাবর মা ইলিশ রক্ষা অভিযানের পর জালে ইলিশ ধরা পড়ত, এ বছর মাছের আকাল। পোয়া মাছ ছাড়া অন্য মাছের দেখা নেই। বঙ্গোপসাগরে ইলিশ শিকারী জাহাঙ্গির মাঝি জানান, প্রায় পঞ্চাশ লাখ টাকা খরচ করে নৌকা তৈরী করে মাঝি-মাল্লা সহ সব বসে আছেন। সাগরেও মাছের আনাগোনা নেই।

মৃজাকালু মাছ ঘাটের আড়ৎদার মো. হারুন ও নাইম হাওলাদার জানান, কোটি টাকা লগ্নি করে তারা এখন পাওনাদারের তাগাদায় অস্থির। গত বছরও স্থানীয় জেলে, আড়ৎদার সবাই এ সময় লাভের মুখ দেখেছেন। এরকম অস্বাবিক অবস্থা আগে আর দেখা যায়নি। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সামছুস সালেহীন জানান, নদীতে মাছ কেন কম পড়ছে উপজেলা লেভেলে সুনির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে মিঠা পানির প্রবাহ কম হওয়ায় এরকম হতে পারে।

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে