শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কারাগারে বন্দির নারীসঙ্গ: পরিচয় মিলেছে সেই নারীর

যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ জানুয়ারি ২০২১, ১১:০৬

গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদের সঙ্গে একান্তে সময় কাটিয়ে যাচ্ছিলেন। সেই নারীর পরিচয় মিলেছে। ওই নারীর নাম আসমা শেখ। রাজধানীর সবুজবাগে ওই নারীর বাসা। তিনি কেবল এবার নন, এর আগেও কারাগারেই একাধিকবার ওই পুরুষের সঙ্গী হন।

তবে এই নারী অন্য কেউ নয়, সেই কারাবন্দি হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদের স্ত্রী। কারা অধিদপ্তরের বিশ্বস্ত সূত্র থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সূত্র জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট কারাগারের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার ইন্ধনে, আরও কয়েকজন কারারক্ষীর সম্পৃক্ততায় কারাগারেই তারা একান্তে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেতেন। তবে এর পেছনে রয়েছে গোপনে চুক্তিবদ্ধ হওয়া মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের বিষয়। যা প্রাথমিক অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

এদিকে বন্দীর সাথে একান্তে স্ত্রীর সময় কাটানোর অভিযোগে সহায়তার দায়ে ডেপুটি জেলার মোহাম্মদ সাকলাইনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসঙ্গে সার্জেন্ট আব্দুল বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী খলিলুর রহমানকেও প্রত্যাহার করা হয়। তাদেরকে অফিস আদেশের মাধ্যমে কারা সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

শুক্রবার রাতে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমান মামুন জানান, ৩ জনকে প্রত্যাহারের পাশাপাশি তদন্তের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট যে কোনও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকেও প্রয়োজনে অতি দ্রুতই প্রত্যাহার করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, গাজীপুর কাশিমপুর কারাগারে বন্দী হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদ কারা কর্মকর্তাদের কক্ষেই নারীর সঙ্গ পেতেন। আর নারীসঙ্গের ব্যবস্থা করে দিতেন খোদ কারা কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসন প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, গত ৬ জানুয়ারি কারাগারে প্রবেশপথে কর্মকর্তাদের কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় কালো রঙের জামা পরে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরা করছেন ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমদ। তিনি সেখানে আসার কিছু সময় পর বাইরে থেকে বেগুনি রঙের সালোয়ার কামিজ পরা এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটে।

তাদের সহযোগিতার বিষয়টিও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে কারাগারের ২ যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারা কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। তাকে সেখানে অভ্যর্থনা জানান খোদ ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দী তুষার আহমদকে সেখানে আনা হয়।

সূত্র জানায়, গত ১২ জানুয়ারি গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আবুল কালামকে প্রধান করে গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উম্মে হাবিবা ফারজানা ও ওয়াসিউজ্জামান চৌধুরীকে নিয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এছাড়া ২১ জানুয়ারি অতিরিক্ত কারামহাপরিদর্শক আবরার হোসেনকে প্রধান করে উপসচিব (সুরক্ষা বিভাগ) আবু সাঈদ মোল্লাহ ও ডিআইজি (ময়মনসিংহ বিভাগ) জাহাঙ্গীর কবিরকে সদস্য করে আরও একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) আবুল কালাম বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে ওই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে