মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চা চিনিতে রেজাউলের ২২ বছর

রায়গঞ্জ প্রতিনিধি
  ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:১০

দুইকাপ চা দাও তো। গ্রাহক চায়ের কথা বলার সময় নিলেও চা তৈরি করে গ্রাহকের হাতে তুলে দিতে সময় নেননা চা বিক্রেতা রেজাউল।

চায়ের কাপে দুধ চিনির মিশ্রনে চামচের খটখট আওয়াজে ঝড় উঠে তার চায়ের দোকানে। সেই ঝড়ে মেতে উঠে সকালের উপজেলা ক্যাম্পাস। চা তৈরির সময় চলে নানা রকমের কৌতুক প্রিয় বাক্যলাপ। কথা মালার খুনসুটিতে মুচকি হাসির ঝলকও লেগে থাকে তার মুখে।

রেজাউল করিম(৩৬)। পিতা মোঃ নেজবার আলী। রায়গঞ্জ পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। অভাবের ৩ সদস্যের পরিবারে পিতার স্বচ্ছলতা না থাকায় ১৪ বছর বয়স থেকে অন্যের চায়ের দোকানে কাজ করা শুরু রেজাউলের। সেই কাজই ২২ বছর ধরে একটানা করে আসছে সে।

এখন সে রায়গঞ্জ উপজেলা ক্যাম্পাসের বাইরে ঝুপড়ি ঘরে চা বিক্রি করেই সংসার চালনা করেন।রেজাউলের চায়ের দোকান বল্লেই সবাই তাকে চেনে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চা বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় তাই দিয়ে চলে তার ৩ সদস্যের পরিবারের সংসার।

চা বিক্রির সাথে সাথে সে কবিরাজী পেশার সাথেও জড়িয়ে আছেন। নানা প্রকার জটিল রোগের ভেষজ ঔষধ বিক্রি করেন তিনি।

চা তৈরিতে তার তুলনা নেই। নানা স্বাদের চা তৈরি করে গ্রাহকদের মন জয় করে নিয়েছেন তিনি। তার দোকানে সকল শ্রেনি পেশার মানুষের আসা যাওয়া আছে নিয়মিত। সদা সর্বদা সদালাপি রেজাউল হাসি মুখে কথা বলেন।মাঝে মাঝে কৌতুক পরিবেশন করে সকলের দৃষ্টি কাড়েন তিনি। চা চিনির সাথে কাপের গায়ে দিনমান চামুচের খটখটানির আওয়াজ না শুনলে নাকি তার আজকাল ভাল লাগে না। ২২ বছর একটানা এই আওয়াজের সাথেই তার সংসার।

থাকার মত তেমন বাসস্থান নেই তার। বাবা নেজবারের ভিটায় চারচালা ছোট্ট একটা টিনের ঘর। স্ত্রী দুই সন্তান নিয়ে গাদাগাদি করে থাকেন সেখানেই।

চায়ের কাপের আওয়াজের সাথে সাথেই দেশ নিয়েও ভাবেন তিনি। গত হওয়া নির্বাচনগুলোকে তিনি সুষ্ঠু নির্যাতন বলে আখ্যায়িত করে থাকেন। এই কথা শুনেও আগত খরিদ্দাররা হাসির খোরাক নেন।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে