চসিক নির্বাচন : সংঘর্ষে ছেলের নিহতের খবর শুনে মারা গেলেন মা

প্রকাশ | ২৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:২০ | আপডেট: ২৭ জানুয়ারি ২০২১, ১৪:২১

যাযাদি ডেস্ক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত যুবক আলাউদ্দিনের মা মারা গেছেন বলে জানা গেছে।

 

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভোট কেন্দ্রে ছেলের নিহতের সংবাদ শুনে আছিয়া বেগম (৬০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। আমবাগান আবহাওয়া অফিসের পাশে তার নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। মৃতের স্বামীর নাম মো: সুলতান।

 

রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত পুলিশ এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভোটগ্রহণ শুরুর পর সকাল ১০টার দিকে ১৩ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ইউসুফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সরকারি দল সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিমের অনুসারীদের সাথে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় সাতজন আহত হন এবং আলাউদ্দিন নামের ওয়াসিমের এক সমর্থক নিহত হন। এ সংবাদ শুনে নিহতের মা তার নিজ বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। রিপোর্টটি লেখা পর্যন্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে ও এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে বলে জানা গেছে।

 

ঘটনায় বিবিসি জানায়

 

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে সিটি নির্বাচনের ভোটের দিন সকালে সহিংস সংঘাত হয়েছে পৃথক পৃথক স্থানে। অন্তত একটি জায়গায় সংঘাতে একজনের প্রাণহানী হয়েছে।

 

 

পৃথক সহিংস ঘটনায় দ্বিতীয় একজনের মৃত্যু ঘটলেও, পুলিশ বলছে, এটা পারিবারিক কারণে, ভোটের সাথে সম্পর্ক নেই।

 

সকাল ১০টার দিকে খুলশি থানার আমবাগান এলাকায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি মারা গেছেন বলে জানাচ্ছে পুলিশ।

 

সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ভোটগ্রহণের সময় সহিংসতা, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।

 

টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, লালখান বাজার, খুলশি ও পাহাড়তলীতে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হচ্ছে। ভিডিওতে আরো দেখা গেছে, শত শত দাঙ্গা পুলিশ সংঘর্ষ নিরসনের জন্য মোতায়েন করা হচ্ছে।

 

ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় অতিরিক্ত আট হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

 

সংঘাতসংকুল এলাকাগুলোর মধ্যে একটি পাহাড়তলীতে আজ সকালে এক ব্যক্তি ছুরিকাঘাতে নিহত হলেও, পুলিশ বলছে এই হত্যাকাণ্ডের সাথে ভোটের কোনো সম্পর্ক নেই। এটা নিতান্তই পারিবারিক কলহের জের।

 

তবে স্থানীয় সাংবাদিকরা বলছেন, পাহাড়তলীর ওই ঘটনায় এক ভাই আরেক ভাইকে হত্যা করেছে। দুই ভাই দুজন প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সেলর প্রার্থীর সমর্থক। সমর্থন নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়েই এক ভাই আরেক ভাইকে ছুরিকাঘাত করে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় সাংবাদিকেরা।

 

তবে চট্টগ্রামের পশ্চিম বিভাগের এডিসি আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘নির্বাচন চলতে থাকায় এই হত্যাকাণ্ডটিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে অনেকে, তাই এ ধরণের গুজব ছড়ানো হচ্ছে।’

 

নির্বাচনের আগে সাত শ’র বেশি ভোট কেন্দ্রের অর্ধেকের বেশি ভোটকেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করে পুলিশ। তাই ভোটগ্রহণ চলাকালে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা এড়াতে আগে থেকেই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল তারা।

 

এই নির্বাচনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র, ৩৯ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ১৪ জন নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন।

 

যাযাদি/ এমএস