একুশ আমার অহংকার

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:১৯

নিয়ামতপুর প্রতিনিধি

আজ আমরা বাংলা ভাষা কথা বলি। মনের ভাব প্রকাশ করি। প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হয়। এই সবকিছুই ৫২-এর  শহীদদের দান। ১৯৪৭ সালে বাঙালিরা পাকিস্তানের অংশ হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানি সরকার ঘোষণা করে যে, উর্ধুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র মাতৃভাষা। সেই সময় ছাত্র-জনতার সাথে সাথে তার প্রতিবাদ করে। তখন থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন আন্দোলন -সমাবেশ।

 

এই আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করে ১৯৫২সালে।১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি এ দেশের দামাল সন্তানেরা ১৪৪ধারা ভঙ্গ করে ভাষার জন্য আন্দোলন করে। ১৪৪ ধারা অমাননার অজুহাতে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। সে গুলিতে নিহত হন রফিক,  সালাম, বরকত, জব্বার নাম না জানা আরো অনেকে। তবু আন্দোলন থেমে যায় নাই। আন্দোলন চলে। ২২শে ফেব্রুয়ারি ছাত্র জনতার মিছিলে শফিউর রহমান শহর নয় বছরের কিশোরী ওলিউল্লাহ্ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। শহীদদের রক্তে রন্ঞ্জিত হয় রাজপথ। শোকাবহ এই ঘটনার অভিঘাতে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পরে। ক্রমবর্ধমান  আন্দোলনের মুখে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং ১৯৫৬ সালে সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি প্রদান করে। এটি ছিল বাঙালীদের পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রথম বিজয়। আমরা বাঙালি হলাম প্রথম জাতি যারা নিজের ভাষায় রক্ষার জন্য প্রাণ দিয়েছি। ভাষার জন্য বাংলার দামাল সন্তানদের আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়। 

 

১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" ঘোষণা করে। এই ঘোষণাটি আমাদের ভাষা আন্দোলন তথা বাংলাদেশের মর্যাদা অনেক বৃদ্ধি করেছে। ভাষা আন্দোলন বাঙালির জাতীয় চেতনার এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। একুশে ফেব্রুয়ারি দিনটি বাঙ্গালীদের কাছে যেমন আনন্দের, তেমনি বেদনাপূর্ণের। তাই দিনটি আমরা আনন্দ -অশ্রু মিশিয়ে পালন করি। ভাষার জন্য যে আন্দোলন করতে হয় ও জীবন দিতে হয় তার একমাত্র নজির সারাবিশ্বের মধ্যে আমাদেরই রয়ছে। তাই তো একুশ আমার অহংকার। কবি আল মাহমুদের ভাষায় মনের কথা বললে-

 বাংলা আমার বচন, আমি

জন্মেছি এই বঙ্গে।

কথাটি প্রত্যেক বাঙালির মনের কথা, গর্বের কথা।

 

লেখা ও ছবি আঁকা, মাশিহা কায়েনাথ মিদোরী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, শ্রেণি -৮ম

 

যাযাদি/এসএইচ