শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

​রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজে প্রাকৃতিক বনায়নের গাছ কেটে উজাড়

রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
  ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১১:১৯

রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরবেষ্টিন গ্রামে প্রাকৃতিক বনায়নের গাছ কেটে উজাড় করছে বনদস্যু চক্র। তবে ওই চক্রের দাবি, এসব গাছ কোনো বনায়নের নয়। ব্যক্তি মালিকানা (রেকর্ডি) জমির গাছ কাটছেন তারা। বিনিময়ে জমি মালিকদের এক-দুই হাজার করে টাকা দিচ্ছেন।

সরেজমিন দেখা গেছে, চরবেষ্টিন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ (পূর্বাংশ) ঘেঁষে দুই কিলোমিটারজুড়ে প্রাকৃতিক বনায়ন। বেড়িবাঁধ নির্মাণের পর প্রাকৃতিকভাবে প্রায় ১৫ বছরে এই বনায়ন জন্মেছে। বনায়নে আছে ছইলা, কেওড়াসহ কয়েক প্রজাতির হাজারও গাছ। তবে বেড়িবাঁধ রক্ষার এই বনায়নে কুনজর পড়েছে বনদস্যুদের।

জানা গেছে, এক মাসে আগে প্রথম দফায় এবং গত দুই সপ্তাহ ধরে দ্বিতীয় দফায় চরবেষ্টিনের ওই বনায়নের ছইলা ও কেওড়া গাছ কেটে উজাড় করছে বনদস্যু একটি চক্র। দুই দফায় প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে সাবাড় করা হয়েছে। এর নেপথ্যে আছেন বনখেকো জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি চরবেষ্টিনের গাছ ব্যবসায়ী। তার নেতৃত্বেই বনায়নের গাছ উজাড় করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।

জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘ওটা রেকর্ডি সম্পত্তির ভেতরে। বন বিভাগ থেকে এক কিলোমিটার দূরে, অবদার (বেড়িবাঁধ) খাদা।’ কি পরিমাণ গাছ কেটেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘২০-২৫টা গাছ কাটছি। অনেক আগে উত্তর পাশ দিয়া কিছু গাছ নিছে। ৫০-৬০ পিস হতে পারে। আমরা জমি মালিকদের কাছ থেকে গাছ কিনছি, জায়গাটা তারা পরিষ্কার করে। আমরা টাকা দিয়া কিনি। আমাদেরতো কোনো অপরাধ না। তারা বেচে আমরা কিনি। মোকছেদ ও সেরাজ হাওলাদারের কাছ থেকে অল্প কিনছি। তাদেরকে আমরা খুশি হইয়া এক-দুই হাজার দেই।’ যদিও বেড়িবাঁধের আশপাশের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, জমি মালিকদের অজুহাত দেখিয়ে জাহাঙ্গীর বনের গাছ কাটছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ১৯৮৯ সাল থেকে প্রাকৃতিক বনের গাছ আহরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। তবুও এভাবে প্রকাশ্যে প্রাকৃতিক বনায়ন উজাড় হচ্ছে কিভাবে? জানতে চাইলে বন বিভাগের চরমোন্তাজ রেঞ্জের চরবেষ্টিন ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেদ খান বলেন, ‘যদি রেকর্ডি সম্পত্তির ভেতরে বন হয়ে থাকে তাহলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করবে। সেখান থেকে আমাদের মতামত চাইতে পারে যে, আমাদের কোনো আপত্তি আছে কিনা। এরপর আমরা সরেজমিন দেখে প্রতিবেদন দেব। তবে ওখানে গাছ কাটার ক্ষেত্রে কেউ আমাদের কাছ থেকে অনুমতি নিতে আসে নাই।’ এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে দ্রুত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

যাযাদি/এসএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে