​গাজীপুরে ছাঁদ বাগানীদের পিঠা উৎসব

প্রকাশ | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১২:৫২

গাজীপুর প্রতিনিধি

 

 

প্লান্টস ফ্রম মুন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অবসর নারীদের ছাঁদ বাগান উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছেন আক্রাম-মুনমুন দম্পতি। শুক্রবার বিকেলে গাজীপুর মহানগরীর উত্তর ছায়াবিথী এলাকায় তাদের বাসার ছাঁদ বাগানে বিভিন্ন জেলার উদ্যোক্তাদের নিয়ে পিঠা উৎসব ও গাছ/চারা বিনিময়ের আয়োজন করা হয়।

 

মো. আক্রাম হোসেন এবং মনিরা সুলতানা মুনমুনদের আমেরিকান নাগরিকত্ব থাকার পরও তারা এখন বাংলাদেশেই অবস্থান করেন। আক্রাম হোসেন বলেন, বিদেশে নয় বাংলাদেশেও অনেক কিছু করার আছে। আমাদের দেশের অধিকাংশ নারীরা এখনও ঘরে বসে অবসর সময় কাটান। তারা গৃহস্থালী কাজের পরও যে সময়টুকু পান সেটুকু যদি ছাঁদ বাগানে ব্যয় করেন তবে তাদের অলস সময়টা কাজে লাগবে আর বাড়তি আয় এবং নৈসর্গিক আনন্দ উপভোগ করা যাবে। তবে এরজন্য প্রশিক্ষণ দরকার। তারা এ ছাঁদ বাগান তৈরিতে বিশেষ করে নারীদের উদ্যোক্তা তৈরিতে প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন, উৎসাহ দিচ্ছেন।

 

আক্রাম হোসেনের স্ত্রী মনিরা সুলতানা মুনমুন জানান, প্রায় ৬ বছর ধরে ছাঁদে দেশী-বিদেশী নানা ফুল-ফল ও সব্জি চাষ করছেন। তার বাগানে চেরি টমেটো, বিলেতি বেগুন, ফুলকপি, পাতা কপি, ঢেড়শ, শসা, বরবটি, কালো বেগুন, লাউ, কুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, লেটুস, দেশি-বিদেশী আম, আমড়া, মাল্টা, কমলা, লিচু, জাম, জাম্বুরা, ত্বীন, সাদা মালবেরী, ব্যাক মালবেরী, আলমন্ড, নানা জাতের অর্কিড, বাগান বিলাস, নানা জাতের গোলাপ, কাঠ গোলাপ, পদ্মসহ বিভিন্ন জাতের ফুল, চেরী ফল,এপিকটসহ ৪০৭ভ্যারাইটির ৭৮৪টি গাছ চাষ হচ্ছে। এসব দেখভাল করতে বৃষ্টি ও সোহান নামের দুই কর্মীও তাদের সঙ্গে সময় দেন। ছাঁদ বাগানের এসব ফল ও সব্জি তাদের পরিবারের প্রায় ৫০শতাংশ প্রয়োজন মেটায়। এতে এক দিকে যেমন অর্থ সাশ্রয় হয় তেমনি বেকারদের সময়ও ভাল কাটে। সম্প্রতি তারা অবহেলিত নারীদের উদ্যোক্তা তৈরি করে স্বাবলম্বী করতে মনোযোগ দিয়েছেন। তার বাগানের তৈরি এসব গাছের চারা তারা বিক্রি করা ছাড়াও বাগানীদের মধ্যে গাছ/চারা বিনিময় করে থাকেন। এতে করে সহজেই চারা প্রাপ্যতা সহজ হয়।

 

শুক্রবার ছুটির দিনে ওই আয়োজনে সরেজমিনে দেখা গেছে খুলনা, পটুয়াখালী, বগুড়া, টাঙ্গাইল থেকেও নারীর পাশাপাশি পুরুষ উদ্যোক্তরা আক্রাম দম্পতির ছাদ বাগানের পিঠা উৎসব ও চারা বিনিময় অনুষ্ঠানে ভিড় জমিয়েছেন।

বগুড়া থেকে আসা ছাদ বাগানী ইশতিয়াক আহমেদ সোহান জানান, ফেসবুকে এ আয়োজনের খবর পেয়ে গাজীপুরে ছুটে এসেছি। এটি একটি ভাল উদ্যোগ। বর্তমানে দেশে জমি কমছে, ভবন বাড়ছে। আর সেই ছাঁদ যদি ব্যবহার করে কৃষি শস্য উৎপাদন করা যায় তবে বেকারদের অনেকাংশেই সাবলম্বী হবে। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ যদি তাদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করে তবে সারা দেশে বেকারদের জন্য ছাদ বাগান তৈরিতে একটা বিল্পব ঘটবে।  

 

গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মাহবুব আলম জানান, ছাদ বাগান করে  বিনোদন, অবসর সময় কাটানো, পড়ে থাকা ছাদ ব্যবহার করে টাটকা ও বিষমুক্ত নিরাপদ শাক-সব্জি উৎপাদন করা যায়। ছাদ বাগানের উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের সরকারি কোন বরাদ্দ নেই তবে এ ব্যাপারে আমরা আগ্রহীদের উৎসাহ উদ্ভুদ্ধকরণ কার্যক্রম করে থাকি। 

 

যাযাদি/এসএইচ