প্রেমের বিয়ে, শশুরবাড়ি যাওয়ার পথেই পালালেন বর!

প্রকাশ | ০৩ মার্চ ২০২১, ১৪:৪২

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

১০ বছর প্রেমের সম্পর্ক করেও সালিস বৈঠকে কাবিননামার (রেজিষ্টি) মাধ্যমে বিয়ের পর শহরের শশুরবাড়িতে যাওয়ার পথেই বউকে প্রস্রাবের কথা বলে কৌশলে পালিয়েছে প্রতারক বর। মঙ্গলবার রাতে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা শহর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে ।

 

বরের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি পর থেকেই এলাকাজুড়েই চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

 

জাহিদ হাসান শোভন নামের ওই বরের বাড়ি সাদুল্লাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের নলডাঙ্গা (সরোবরোপাড়) এলাকায়। স্থানীয় মিল-চাতাল ব্যবসায়ী রেজাউনুল হক লিটনের ছেলে শোভন ঢাকার একটি বেসরকারী ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত।

 

এরআগে, বিকেলে স্থানীয়দের উপস্থিতিতে নলডাঙ্গা চালক সমিতির কার্যালয়ে উভয়ের সম্মতিতে রেজিষ্ট্রি ও মৌলভী দ্বারা বিয়ে সম্পূর্ন হয় তাদের। এরপর নলডাঙ্গা থেকে গাইবান্ধা শহরের শশুরবাড়িতে যাওয়ার পথে সাদুল্লাপুরের কালিবাড়ি মন্দিরের পাশে রাস্তায় অটোরিক্সা থেকে নেমে কৌশলে পালিয়ে যায় জাহিদ হাসান শোভন।

 

ঘটনার পর থেকেই মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায় বর শোভনের। পরে নিরুপায় হয়ে প্রতিকার চেয়ে রাত ১১টার দিকে সাদুল্লাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন নববধূ ইতি আক্তার (ছন্দনাম)। তার বাড়ি সদর উপজেলা শহরের মহুরিপাড়া (গোবিন্দপুর) গ্রামে।

 

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বিয়ের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে প্রেমিক জাহিদ হাসান শোভন ও তার বাড়ির খোঁজে নলডাঙ্গায় অবস্থান নেয় ইতি আক্তার। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি শোভনসহ তার পরিবারকে জানায়। বাবার সম্মতি না পেলেও স্থানীয়দের উপস্থিতিতে ইতিকে বিয়ে করতে রাজি হয় শোভন। পরে বিকেলে নলডাঙ্গার চালক সমিতির কার্যালয়ে শ্রমিক নেতাসহ স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের উপস্থিতিতে তিন লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণে রেজিষ্টি এবং স্থানীয় মৌলভী দ্বারা তাদের বিয়ে হয়। এরপর  রাতেই বউকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বাড়ি গাইবান্ধা শহরে যাওয়ার কথা জানালে তাদেরকে একটি ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সায় তুলে দেন স্থানীয়রা।  

 

ভুক্তভোগী ইতি আক্তার জানান, গত ১০ বছর ধরে শোভনের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক। কিছুদিন ধরে শোভন বিয়ে করতে তালবাহনাসহ তার সঙ্গে যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে। বিয়ের দাবিতে তার বাড়ির এলাকায় গেলে পরিবারসহ স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে শোভন আমাকে বিয়ে করে। এরপর বাড়ি যাওয়ার পথে সাদুল্লাপুরে পৌঁছে প্রস্রাবরের কথা বলে শোভন তাকে রেখে পালিয়ে যায়। প্রেমের অভিনয় আর বিয়ের পর শোভন এমন প্রতারণা করবে তা বুঝতে পারিনি আমি। এ ঘটনায় প্রতারক শোভনের বিচার দাবি জানান তিনি।

 

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, অভিযোগের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পালিয়ে যাওয়া বর শোভনের অবস্থান চিহ্নিতসহ তাকে আটকের চেষ্টা চলছে। তবে দ্রুতই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

যাযাদি/ এমডি