শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটে ইউপি নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীরা সরব

কাইয়ুম উল্লাস, সিলেট
  ০৪ মার্চ ২০২১, ১৯:৩১

সিলেটে ইউনিয়ন নির্বাচনের প্রচারণা জমে ওঠেছে। বিশেষ করে দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে প্রায় এক ডজন প্রার্থী ইউপি নির্বাচন নিয়ে মাঠ সরব রেখেছেন। তারা বিভিন্ন কৌশলে প্রচার চালাচ্ছেন। যদিও বিএনপি বলছে, নির্বাচনে যাবে না, কিন্তু এই প্রার্থীরা নির্বাচনের জন্য রয়েছেন এক পায়ে দাঁড়িয়ে।

নির্বাচন ঘিরে প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি প্রার্থীদের মাঝে প্রতিযোগিতাও কাজ করছে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলেই রয়েছেন একাধিক প্রার্থী। দুই দলে অন্তত এক ডজন প্রার্থী এবার দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। একই সঙ্গে আছেন হেভিওয়েট স্বতন্ত্র প্রার্থীও। তাই লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের কৌশলী গণসংযোগ-প্রচারণা চলছে।

দলীয় সূত্র জানায়, তরুণ ছাত্র নেতা হিসেবে এলাকায় ব্যাপক পরিচিত পেয়েছিলেন লায়েক আহমদ জিকো। এখন তিনি আওয়ামী লীগের উপজেলা কমিটিতে আছেন। তিনি বলেন,‘ দল আমাকে মনোনয়ন দিলে নির্বাচন করবো। অন্য কাউকে দিলে দলের নির্দেশ মেনে তাকে সহায়তা করবো।’

আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী নৌকা প্রতীক পেতে চান। এর মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন তোয়াজিদুল হক তুহিন। তিনি গেলবার নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন,‘ আমি গত নির্বাচন থেকেই দলকে নিয়ে কাজ করছি। দল আমার সঙ্গে আছে। এবারও আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করার প্রত্যাশী।’

লালাবাজারে ৯০ দশক থেকে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে দলকে সুসংগঠিত রাখতে কাজ করে যাচ্ছেন অ্যাডভোকেট মুহিদ হোসেন। তিনি বর্তমান লালাবাজার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ একজন সংগঠক হিসেবেও দলকে নিয়ে কাজ করছি সেই ৯০ দশক থেকে। বর্তমানে আওয়ামী লীগকে একটি ভালো অবস্থানে আনার পেছনে আমি শ্রম দিয়ে যাচ্ছি। সেই হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে আমি নির্বাচন করতে চাই। দল ও কেন্দ্র যদি আমাকে নৌকা দেন, ইনশাআল্লাহ হতাশ করবো না।’

বিএনপির সূত্র জানায়, লালাবাজার বিএনপির কমিটি নিয়ে বিভক্ত ইউনিয়ন বিএনপি। এর মধ্যে কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা রয়েছে ইউনিয়ন নির্বাচন না করার। যে কারণে বিএনপির প্রার্থীরা একটু দোলাচলে আছেন। ভোটারদের কাছেও একটা বিভ্রত অবস্থায় পড়েছেন। নির্বাচনে যাবেন কি, যাবেন না-এ বিষয়টি নিশ্চয়তা দিয়ে কিছু বলতে পারছেন না। তবু অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকতে চান। কারণ দলের সিদ্ধান্ত যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। সেই হিসেবে লালাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন করার জন্য বিএনপিরও তিনজন প্রার্থীর আলোচনায় আছেন। এরা হলেন, লালাবাজার আঞ্চলিক বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক , বিভিন্ন দলের দীর্ঘ রাজনীতির অভিজ্ঞতা সম্পন্ন প্রার্থী মো. নানু মিয়া। তিনি বলেন,‘ রাজনীতিতে শেষ বলে কোনো কথা নেই। যেকোনো সময় সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আসতে পারে। তাই আমরা গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। বিএনপির একটি বড় অংশ এবং স্থানীয় জনগণ আমার সঙ্গে আছেন-তাই দলের ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চাই।’

লালাবাজার ইউনিয়ন বিএনপির নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী সোহেল আহমদ বলেন,‘ তৃণমূল বিএনপিকে নিয়ে লালাবাজারে দীর্ঘ বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস নিয়ে আমি এ পর্যন্ত এসেছি। অতীতের যেকোনো বড় আন্দোলন সংগ্রামে আমি ছিলাম। দলের জন্য কারাগারেও ছিলাম। যে কারণে আমিই ধানের শীষ প্রতীক পাওয়ার যোগ্যতা রাখি। তাছাড়া কর্মীরা আমাকে চাচ্ছেন।’

ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করার প্রত্যাশা করছেন আমিনুর রহমান চৌধুরী সিফতা। তিনি প্রক্রিয়াধীন নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। সিফতা বলেন,‘ বিএনপি শেষ মুহুর্তে নির্বাচনে আসতে পারে। তাই আমি প্রস্তুত আছি। ধানের শীষ পেতে চাই, কারণ দলের হামলা-মামলায় ছিলাম। বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে মানুষজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছি।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও লালাবাজার ইউনিয়ন নির্বাচনে আলোচনায় আছেন শহীদুর রহমান শহীদ। তিনি অনেকেও জরিপে মূল প্রতিযোগিতায় থাকবেন বলেও শোনা যাচ্ছে। হেভিওয়েট এই প্রার্থী গেলবার বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান পীর ফয়জুল হক ইকবালের সঙ্গে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি কোনো দলের টিকিট চাই না। আমি এবারও স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করব। আশা করি, জনগণ তাদের রায় আমাকে দিবেন।’

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে