পেকুয়ায় ১৫ বছরে ধরে কালের সাক্ষী সেতুর পিলার!

প্রকাশ | ০৬ মার্চ ২০২১, ১৩:৪৬

পেকুয়া(কক্সবাজার) প্রতিনিধি

কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের সাথে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ 'করিয়ারদিয়া' ও উজানটিয়ার সাথে মহেশখালীর মাতারবাড়ির সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য ২০০৬ সালে দুইটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করে সেই সময়ের সরকার। কালের সাক্ষী হয়ে সেই সময় দুইটি সেতুর মূল স্তম্ভ পিলারের কাজ শেষ করলেও অদ্যবধি সেতু দুইটির পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ না হওয়ায় সাধারণ জনগণের চলাচলে ব্যাপক অসুবিধার সম্মোখিন হচ্ছে এবং ১০ হাজার মানুষের বসবাস বিচ্ছিন্ন দ্বীপটি এখনো অজঁপাড়া গ্রাম রয়েই গেছে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদ। সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সেতুটির নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। দুটি সেতুরই কাজ পায় প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী ঠিকাদার গিয়াস উদ্দিনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স চকোরী কনস্ট্রাকশন। কিন্তু এক-এগারোর পর ঠিকাদার আত্মগোপনে চলে গেলে সেতু দুটির কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

 

সূত্রে জানা গেছে, এদিকে জোট সরকারের সময় শুরু হওয়া এ প্রকল্প আওয়ামী লীগ সরকার দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য ২০১৩ সালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর থেকে একটি দল পরিদর্শন করেছে সেতু দুইটির স্থান। এমনকি পরিক্ষা নিরিক্ষা করার জন্য মাঠি নিয়ে যায় পরিদর্শনকারী দল। তবে এখনো কাজের কোন ধরণের অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় লোকজন।

 

সরেজমিন দেখা যায়, করিমদাদ মিয়ার ঘাট এলাকায় সেতু উদ্বোধনের নামফলকটি ক্ষয়ে গেছে। নদীর পানির স্রোতে তলদেশ থেকে নির্মাণ করা পিলারগুলো কাত হয়ে যাচ্ছে। পিলার ভেঙে প্রায় অর্ধেক অংশের লোহার রড কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। সেতুর মূল্যবান নির্মাণসামগ্রী চুরি হয়ে গেছে অনেক আগেই।

 

স্থানীয় লোকজন জানান, সেতু দুটি নির্মিত হলে উজানটিয়া ও মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মানুষের যোগাযোগে নতুন দ্বার খুলে যেত। কিন্তু আজ এত বছর ধরে সেতুর নির্মাণকাজ অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই।

 

করিয়ারদিয়া এলাকার বাসিন্দা জিয়াবুল হক জিকু ও এপারের বাসিন্দা টিপু সুলতান বলেন, সেতু দুটি নির্মিত হলে চিংড়ি ও লবণ পরিবহনের খরচ কমে যাবে। এতে এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। বর্তমানে এ এলাকার বাসিন্দাদের কাদা মাড়িয়ে নৌকায় চড়ে নদী পার হতে হয়। দুর্ঘটনায় পড়তে হয় অনেক স্থানীয় বাসিন্দাকে।

 

উজানটিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী আলোচিত সাংবাদিক আকরাম হোছাইন বলেন, মহান আল্লাহ যদি আমাকে সফলকাম করে মাননীয় এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে এ দুটি সেতুর কাজ দ্রুত শুরু করার চেষ্টা করবো। 

 

পেকুয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সেতু দুটির নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১০ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে ঠিকাদার কাজ না করায় কার্যাদেশ বাতিল করা হয়। এ প্রকল্পের ডিপিটি সংশোধন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পাস হলেই ফের দরপত্র আহ্বান করা হবে।

 

যাযাদি/এসএইচ