শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

​সেনবাগে শিশু হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ২ ঘাতকের স্বীকারোক্তি

সেনবাগ (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
  ০৭ এপ্রিল ২০২১, ২১:৩৬

নোয়াখালীর সেনবাগে নিখোঁজের চারদিন পর আশ্রাফুল (৬) নামে এক শিশুর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধারের মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হয়ছে সেনবাগ থানা পুলিশ।

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামী মো. আলাউদ্দিন (৩০) ও আবদুল্লাহ আল হাসান (১৯) হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত বলে আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেপ্তার আসামি আলাউদ্দিন আশরাফুলের মায়ের সাবেক স্বামী।

মঙ্গলবার ও বুধবার নোয়াখালী আমলী আদালত ৪ এর বিচারক নবনীতা গুহের আদালতে শিশু আশরাফুলকে শ্বাসরোধ করে হত্যা পর লাশ গুম করার জন্য মাটি চাপা দেওয়ার কথা স্বীকার করে ২ জনই জবানবন্দি দেন।

এর আগে, গত ২ এপ্রিল শিশু মো. মিজানুর রহমান প্রকাশ আশরাফুলকে ধান ক্ষেতে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আলাউদ্দিন ও হাসান। এরপর সন্ধ্যায় তার অপর সহযোগী একই বাড়ির স্থানীয় গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) নুরনবীর ছেলে আবদুল্লাহ আল হাসান সহ পাশের খাল পাড়ে গর্ত করে লাশ গুম করার জন্য মাটিতে পুঁতে রাখে।আশারাফুলের খোঁজ না পেয়ে তার বাবা ২ এপ্রিল রাতে সেনবাগ থানায় একটি নিখোঁজ ডাইরি করে।

পরবর্তীতে গত ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই এলাকার কৃষক আবদুল হামিদ তার ধান খেত দেখতে গিয়ে শিশু আশরাফুলের লাশ আংশিক মাটি চাপা দেওয়া অবস্থায় দেখে চিৎকার দিলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। পরে সেনবাগ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। শিশু আশরাফুলকে হত্যাকাণ্ডে তার পিতা অজ্ঞাত ব্যক্তিদেরকে আসামি করে সেনবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর রাতেই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. সাইফুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে শিশু আশরাফুলের মায়ের সাবেক স্বামী আলাউদ্দিন ও একই বাড়ির আবদুল্লাহ আল হাসানকে আটক করে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে মঙ্গলবার আলাউদ্দিন ও বুধবার আবদুল্লাহ আল হাসান হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করলে তাদের আদালতে পাঠালে তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।

নিহত আশরাফুলের বাড়ি সেনবাগ উপজেলার ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের বাবুপুর-শ্রীপুর গ্রামে। সে ওই গ্রামের সেকান্তর মীর বাড়ির রাজ মিস্ত্রী আবুল কাশেম মীরের ছেলে। আশরাফুলের নানার বাড়ি কাদরা ইউনিয়নের নজরপুর জিতু সওদাগর বাড়ি।

পুলিশ জানায়, ঘাতক আলাউদ্দিনের সঙ্গে একই বাড়ির ছায়েদুল হকের মেয়ে বিবি হাজেরার সঙ্গে বিবাহ হয়েছিল। বিয়ের কিছুদিন পর তাদের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়,পরবর্তীতে একই উপজেলার ৩নং ডমুরুয়া ইউনিয়নের বাবুপুর-শ্রীপুর গ্রামের সেকান্তর মীর বাড়ির রাজ মিস্ত্রী আবুল কাশেম মীরের সঙ্গে বিয়ে হয়। আশ্রাফুল ওই ঘরের ছেলে। বিবাহ বিচ্ছেদের জেরে ক্ষোভ থেকে ওই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে বলে তারা জবানবন্দি দেন।

সেনবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)আবদুল বাতেন মৃধা শিশু আশ্রাফুল হত্যাকান্ডের সঙ্গে আশ্রাফুলের মা হাজরা খাতুনের সাবেক স্বামী মোঃ আলোউদ্দিন ও একই বাড়ির আবদুল্লাহ আল হাসান আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধী দেওয়ায় দেওয়ার কথা স্বীকার করেন।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে